হোন্ডা সিবি হরনেট ফীচার রিভিউ

সিসি লিমিট বৃদ্ধির পরে বাংলাদেশের অনেক বাইকার তাদের কাংখিত বাইক আপন করে নিয়েছে। এই সিসি লিমিট বৃদ্ধির পরে কিছু আলোচিত বাইক ছিলো যার মধ্যে হোন্ডা সিবি হরনেট অন্যতম। হোন্ডা হরনেট নিয়ে কম বেশি সকলেই অনেক মতামত দিয়েছেন এবং অনেকের কাছে পরিষ্কার ধারণা ছিলো না যে দানবটা কেমন পারফরমেন্স দিবে। জাপানী ব্যান্ড হিসেবে বাইকাররা অনেকেই এই বাইক থেকে অনেক ভালো কিছু আশা করে থাকেন এবং হোন্ডা ব্র্যান্ড সক্ষম হয়েছে সেগুলো এই বাইকটির মাধ্যমে সরবরাহ করে। এই বাইকটা আমাদের দেশের রাস্তায় এখন চলছে এবং রাইডারের প্রয়োজন অনুযায়ী সকল ফিচারস এই বাইকটির সাথে রাখা হয়েছে। জাপানি দুই চাকা প্রস্তুতকারী কোম্পানি চেষ্টা করেছে তরুণদের মাঝে এই বাইকটি ছড়িয়ে দেবার। হোন্ডা হরনেটের সাথে হোন্ডা তাদের পূর্বের বাইকগুলোর থেকে কিছু ভিন্নতা নিয়ে এসেছে । চলুন তাহলে এক নজর দেখে নেওয়া যাক হোন্ডা হরনেটের সাথে কি কি নতুন ফিচারস এসেছে।

হরনেটের আধুনিক ফিচারস সমূহ
-সম্পূর্ণ ডিজিটাল মিটার
-মাস্কুলার ট্যংকারের সাথে সুন্দর গ্রাফিক্স
-আকর্ষণীয় হেডল্যাম্প
-ডিস্ক ব্রেক
-৫ স্পক বিশিষ্ট স্প্লিট এলয় হুইল
-এক্স শেপের আকর্ষণীয় টেল ল্যাম্প
-মোটা টায়ার
-AHO প্রযুক্তি সম্পন্ন



সিবি হরনেটের ডিজাইন ও গঠন
বাইকটির ডিজাইন দেখলেই বুঝতে পারা যায় যে হোন্ডা তাদের এই বাইকটির ডিজাইনে কোন কমতি রাখেনি বরং প্রয়োজনীয় যা যা দরকার ছিলো তা সব কিছু রয়েছে সিবি হরনেটের ডিজাইনে। বাইকটির গঠন করা হয়েছে ডায়মন্ড ফ্রেম দ্বারা । মোটা ফুয়েল ট্যংকারের সাথে মাস্কুলার প্লাস্টিক বাইকটির ডিজাইনটা আরও সুন্দর রুপ দিয়েছে। লিনিং রেয়ার এবং কার্বন কভার বাইকটিকে আরও বেশি ঘনত্ব ও মাস্কুলার লুক দিয়েছে। বাইকটির সার্বিক লুক দেখতে ভালো লাগার কারণ হচ্ছে এখানে কালার লাইন ব্যবহার করা হয়েছে। হেডল্যাম্পটি সুন্দরভাবে ডিজাইন করা আছে এবং স্পোর্টস ফুল ডিজিটাল মিটারে রাইডারের প্রয়োজনীয় সব কিছু রয়েছে । আউরাইট সিটিং পজিশন রাইডারকে অনেক ভালো লীন করতে সহায়তা করবে এবং পা-দানিটা স্পোর্টস অনুভুতি এনে দিবে। হ্যান্ডেলবারটা সোজা এবং সুইচগুলো পরিচিত স্থানে আছে। পেছনের এক্সশেপের টেল ল্যাম্পের কারনে দূর থেকে আপনি খুব সহজেই চিহ্নিত করতে পারবেন যে এটা হোন্ডা হরনেট।

সিবি হরনেট এর বডি ডাইমেনশন
সিবি হরনেটের বেশ দারুণ বডি ডাইমেনশন রয়েছে। লম্বায় ২০৪১ মিমি, চওড়ায় ৭৮৩ মিমি এবং উচ্চতায় ১০৬৭ মিমি হচ্ছে বাইকটির মুল ডাইমেনশন। এদিকে গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স আছে ১৬৪ মিমি এবং হুইলবেজ আছে ১৩৪৬ মিমি । বাইকটির তেল ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ১২ লিটার এবং সব মিলিয়ে বাইকটির ওজন রাখা হয়েছে ১৩৮ কেজি।



সিবি হরনেটের ইঞ্জিন স্পেসিফিকেশন
এই বাইকটিতে হোন্ডা যোগ করেছে ১৬২.৭১ সিসি, ৪ স্ট্রোক এয়ার কুল্ড এস আই ইঞ্জিন যেটা উৎপন্ন করবে 15.3 Ps (11.22 kW) @8500 ম্যাক্স পাওয়ার এবং 14.76NM @ 6500 RPM ম্যাক্স টর্ক । আরও রয়েছে ৫ স্পীড ম্যানুয়াল গিয়ার বক্স এবং গিয়ার বক্স গুলো খুব সুন্দর কাজ করে এবং গিয়ার সিফটিং সিস্টেম হচ্ছে 1-N-2-3-4-5 । ইঞ্জিনের কম্প্রেশান রেশিং আছে ১০:০:১। ইঞ্জিন চালু করার জন্য বাইকটিতে আছে কিক ও সেলফ স্টার্ট অপশন। কোম্পানী মতানুসারে মাস্কুলার এই বাইকটি টপ স্পীড দিবে ১১০ কিমি/ ঘণ্টা।



সিবি হরনেটের ব্রেকিং এবং সাসপেনশন
এই দুটা ফিচারস অনেক জরুরী এবং কোন তাদের এই বাইকটিতে এই দুটি ফিচারসের কোন কমতি রাখেনি। সামনের দিকে আছে ২৭৬মিমি ডিস্ক ব্রেক এবং পেছনে আছে ১৩০ মিমি ড্রাম ব্রেক। আরেকটি বিষয় সেটি হচ্ছে সাসপেনশন যেটা বাইকটির দিকে তাকালে সামনের দিকে আছে টেলিস্কোপিক সাসপেনশন এবং পেছনের দিকে আছে মনোশক সাসপেনশন।





হুইল ও টায়ার
হোন্ডা হরনেটে রয়েছে ৫ স্পোক বিশিষ্ট স্লিপ এলয় হুইল এবং উভয় দিকেই ১৭ ইঞ্চি রিম রয়েছে। টায়ারের কথা বলতে গেলে সামনে পেছনে উভয় দিকেই টিউবলেস টায়ার রয়েছে । সামনের দিকের টায়ারের সাইজ আছে 100/80 এবং পেছনের দিকের টায়ারের সাইজ আছে 140/70।

মিটার কনসোল ও ইলেকট্রিক্যাল
এই বাইকটিতে সম্পূর্ণ ডিজিটাল মিটার ব্যবহার করা হয়েছে। ডিজিটাল এই মিটারটিতে রয়েছে টেকোমিটার , ফুয়েল ইনডিকেটর , ফুয়েল গেজ ট্রিপ মিটার ইত্যাদি। অন্যদিকে বাইকটির ইলেকট্রিক্যাল দিকে আছে 12V 4Ah (MF) ব্যাটারি, 12V 35/35W হেডল্যাম্প, এলিডি টেল ল্যাম্প, ইনডিকেটর, পাস লাইট,সেলফ স্টার্ট এবং আরেকটি বিষয় হচ্ছে বাইকটিতে AHO AUTOMATIC HEADLIGHT ON প্রযুক্তি আছে যেটা ধুলাবালি কিংবা কুয়াশাময় রাস্তার জন্য সেফটি ফিচারস হিসেবে পরিচিত।

পরিশেষে
বাইকটির ৪ টি ভিন্ন কালার বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে Striking Green, Athletic Blue Metallic, Sports Red, and Mars orange । রাইডারের জন্য যে ফিচারসগুলো থাকা সেগুলো এই বাইকটিতে যথাযথভাবে আছে এবং রাস্তায় চলার জন্য একেবারেই প্রস্তুত। বাইকটি দুটি ভিন্ন মডেল রয়েছে – সিংগেল ডিস্ক ও ডাবল ডিস্ক( সিবিএস) । ডাবল ডিস্ক আমাদের দেশে এখনও পাওয়া যাচ্ছে না । আশা করা যায় পাওয়া যাবে । এখন দেখার পালা ফিচারস অনুযায়ী সিবি হরনেট বাংলাদেশের রাস্তায় কেমন পারফরমেন্স দিবে।

All HONDA bike price in bd

Honda CB Hornet 160R SD