হোন্ডা নামটি ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি সবার মুখে মুখে। অনেকেই মোটরসাইকেলকে হোন্ডা নামে অভিহিত করে থাকেন। হোন্ডা আসলেই হোন্ডা এটা না বলে উপায় নাই। আমি মোঃ মাহাবুব আহমেদ (মার্শাল) পেশায় একজন ব্যবসায়ী। বর্তমানে আমি ব্যবহার করছি হোন্ডা সিবি ট্রিগার ১৫০ সিসির বাইকটি। এই বাইকটি আমি প্রায় ১ বছর ধরে ব্যবহার করছি। এই বাইকটি কেনার পূর্বে আমি ব্যবহার করেছি হোন্ডা সিডি ৮০ সিসি, হোন্ডা সিজি ১২৫(পাকিস্থান) এবং হোন্ডা সিজি ১২৫(জাপান) । বাইকটি কেনার মুল কারণ হল আমার ব্যবসায়ীক কাজ এবং ডিজাইনটা আমার কাছে অনেক মার্জিত একটি ডিজাইন মনে হয়েছে যার ফলে বাইকটি কিনে ফেলি। বাইকটি ১ বছর চালিয়ে আমি কিছু রাইডিং অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি পাশাপাশি বাইকটির কিছু ভালো মন্দ দিক আমি খুঁজে পেয়েছি, সেগুলো আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
বাইকটির ডিজাইন অনেক ভালো। আমি এর ডিজাইন নিয়ে অনেক সন্তুষ্ট। বাইকটিতে খুব বেশি পরিমাণে ডিজাইন না থাকলেও যথেষ্ট ভালো ডিজাইন রয়েছে। অন্যদিকে হোন্ডা স্বনামধন্য একটি মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড যার ফলে এর বিল্ড কোয়ালীটি নিয়েও আমি সন্তুষ্ট। বাইকটি চালিয়ে আমি যা বুঝেছি যে হোন্ডা কোম্পানী কখনই খারাপ বিল্ড কোয়ালিটি দেয় না । সব মিলিয়ে আমার কাছে এর ডিজাইন এবং বিল্ড কোয়ালিটি অনেক ভালো মনে হয়েছে।
বাইকটির কম্ফোরট নিয়ে বলতে গেলে আমি অনেক ভালো কম্ফোরট পাই। আমি একটু লম্বা যার ফলে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যাক পেইন অনুভব করিনি। সিটিং পজিশনটা অনেক ভালো ও আরামদায়ক। পিলিয়ন নিয়েও রাইড করতে কোনো সমস্যা হয়না। সিটিং পজিশনের সাথে মিল রেখে এর হ্যান্ডেলবারটা ধরে অনেক আরাম অনুভব করি। হ্যান্ডেলবারটা অনেক নরম যার ফলে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিশেষ করে ট্র্যাফিকের মধ্যে এই বাইকটি নিয়ে অন্যায়াসেই যাতায়াত করা যায়। হ্যান্ডেলবারের সুইচগুলো অনেক ভালো মানের। কিন্তু একটা দিক আমার কাছে খুব খারাপ লেগেছে সেটা হল এর হেডল্যাম্পের আলোটা অনেক কম । অন্ধকার রাস্তায় অনেক কম পরিমাণে আলো পাওয়া যায় যার ফলে গ্রামের রাস্তায় গুলোতে রাতের বেলা রাইড করতে একটু সমস্যা অনুভব করি।
কন্ট্রোলিং খুবই ভালো। আমি ১ বছর ব্যবহার করে অন্যান্য বাইকের তুলনায় এই বাইকটির অনেক ভালো কন্ট্রোলিং পেয়েছি। টপ স্পীডটাও দারন আমি ১০৫ কিমি স্পীডে টপ স্পীডে তুলতে সক্ষম হয়েছি এবং কোনো প্রকার ভাইব্রেশন আমি অনুভব করিনি। আমি বাইক রাইড করার ক্ষেত্রে স্পীড তুলতে পছন্দ করি না যার ফলে আমি এর বেশি গতি তুলতে ইচ্ছা বোধ করিনি। টপ স্পীডের পাশাপাশি এর ব্রেকিংটাও বেপক ভালো।যেকোনো পরিস্থিতিতে আমি ব্রেকিং করে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আনতে সক্ষম হই। সাসপেনশনের পারফরমেন্স অনেক ভালো বিভিন্ন রাস্তায় চালিয়ে আমি এর সাসপেনশনের অনেক ভালো পারফরমেন্স পেয়েছি। এসব কিছুর পাশাপাশি টায়ারটা এই বাইকটির বডির সাথে খুবই মানাসই বলে আমি মনে করি কারণ টায়ারের সাইজটা অনেক ভালো এবং টায়ারটা অনেক ভালো গ্রিপিং দেয়া যার ফলে আমি এই পর্যন্ত আমি কোন স্কিড পায়নি।
ইঞ্জিন পারফরমেন্স দারুন। হোন্ডা যে আসলেই হোন্ডা তা আবারো প্রমাণ করে দিয়েছি তাদের এই ইঞ্জিন পারফরমেন্স দিয়ে। ইঞ্জিনের গতি,শব্দ পাওয়ার সব কিছু বেশ ভালো। ইঞ্জিনের ভালো পারফরমেন্স পাচ্ছি কিন্তু মাইলেজটা তুলনামুলক কম পাচ্ছি। আমি বর্তমানে মাইলেজ পাচ্ছি ৩৫-৪০ কিমি প্রতি লিটারে কিন্তু হোন্ডা দাবি করে যে তাদের এই বাইকটির মাইলেজ কমপক্ষে ৪৫ কিমি এর বেশি দিবে ।যাই হোক পরবর্তীতে সার্ভিসিং করানোর সময় তেল খরচটা কমিয়ে নিয়ে আনার চেষ্টা করবো।
আমি সার্ভিসিং সেন্টারে খুব কম সময়ে গিয়েছি ।তাদের আচরন ঠিক করার মান আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে কিন্তু আমার বাসা থেকে সার্ভিসিং সেন্টার অনেক দূরে যার ফলে যেতে একটু কষ্টকর হয়। সার্ভিসিং সেন্টারটি শহরে হলে ভালো হতো।
বাইকটির ডিজাইন,পারফরমেন্স সব কিছু মিলিয়ে হোন্ডা কোম্পানি হিসেবে দামটা ঠিক মনে হয়েছে।