মোটরসাইকেল চালানো প্রত্যেকটা মোটরসাইকেল প্রেমীদের জন্য আনন্দের একটি বিষয় এবং ঠিক তেমনিভাবে আমিও তাদের মধ্যে একজন। আমি মোঃ খায়রুজ্জামান পরাগ পেশায় একজন ছাত্র। বাইক চালানোটা আমার একটা শখ বলা যেতে পারে এবং বাইক কেনার পর থেকে যখনই আমি বাসা থেকে বের হই তখন মোটরসাইকেলটা সংগে নিতে ভুলি না। মোটরসাইকেল চালানো শেখার পর থেকে আমি হিরো হাংক সহ বিভিন্ন বাইক ব্যবহার করেছি। হিরো হাংকটা আমার নিজের বাইক ছিলো এবং আমি সর্বদা চেয়েছিলাম যে আমি আমার নিজের বাইক রাইড করবো। সৌভাগ্যক্রমে আমি বর্তমানে আমার স্বপ্নের বাইক ব্যবহার করছি। আমি হোন্ডা’র ১৫০ সিসির অনেক স্টাইলিশ এবং ভালো ফিচার সমৃদ্ধ একটি বাইক ব্যবহার করছি ,জ্বী হ্যা আমি হোন্ডা সি বি আর ১৫০ সিসি বাইকটির কথা বলছি। হোন্ডা ব্রান্ডটি সকলের মন জয় করা একটি ব্রান্ড তাই এই ব্র্যান্ডকে নিয়ে বিশেষভাবে বলার কিছু নাই এবং সেই জন্য আমার এই ব্রান্ডের কোয়ালিটি নিয়ে কোনো সন্দেহ ছিলো না কিন্তু আমি এর পারফরমেন্স সম্পর্কে তেমনটা জানতাম না । আমি অনেক গুলো কারনে এই বাইকটা কিনি যেমন- বাইকের প্রতি আমার অনুরাগ, আমার নিজের ব্যবহারের জন্য এবং বাইকটির মডেলটা অনেক ভালো লেগেছে তাই কোনো দিকে না তাকিয়ে সোজা এই বাইকটি কিনে ফেলি। বিগত সময়ে বাইকটি চালিয়ে এর সম্পর্কে এবং এর পারফরমেন্স সম্পর্কে কিছু অভিজ্ঞতা লাভ করেছি যা আজ আমি আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে চাই। আমার সকল ভুল ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
প্রথম যে বিষয়টা সেটা হল এর স্পোর্টস ডিজাইনটা বাইকটাকে আরও বেশী আকর্ষণীয় করে তুলেছে। ডাইমেনশন,কালার কম্বিনেশন, ইঞ্জিন কিট, সিটিং পজিশন এবং অন্যান্য সকল ফিচার খুব সুন্দরভাবে স্থাপন করা হয়েছে যার ফলে বাইকটিকে আরও অসাধারণ একটি বাইকের রূপ দিয়েছে। আমি বাইকটার আউটলুকটা এবং
ডিজাইনটা জন্য অনেক বেশী পছন্দ করি। আমি প্রথমেই বলেছি যে হোন্ডা কোম্পানীর মান নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই তাই আমার বাইকটির বিল্ড কোয়ালিটি নিয়েও আমার কোনো সন্দেহ নেই। আমি বাইকটির ডিজাইন এবং বিল্ড কোয়ালিটি নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট।
কম্ফোরটের কথা বলতে গেলে আমি বলবো যে আমার বাইকটি ছোট-খাটো জার্নির জন্য অনেক আরামদায়ক একটি বাইক। এই ধরনের বাইক নিয়ে শহরের রাস্তায় চালিয়ে বেশ আরাম পাওয়া যায়।সিটিং পজিশনটা অনেক আরামদায়ক এবং এর হ্যান্ডেলবারটা একটু নিচু যার ফলে রেসিং রেসিং ভাব চলে আসে কিছু হ্যান্ডেলবারে আমার কব্জিটার উপর বেশি চাপ পরে মুলত এটা নিচু হওয়ায় আমার কব্জিতে একটু চাপ অনুভুত হয়। এই কারনে আমি মনে করি যে এই বাইকটি নিয়ে বড় জার্নি আরামদায়ক না। অন্যদিকে পিলিয়নের সিটটা বেশ উঁচু অনেকটা আর ওয়ান ফাইভ ভার্সন ২ এর মতো । বাইকটির সকল ইলেকট্রিক্যাল ফিচারস গুলো ব্যবহার উপযোগী এবং সুইচগুলো বেশ কার্যকর কিন্তু একটা দিক আমার কাছে কাছে কাহ্রাপ লেগেছে সেটা হল এর হেডল্যাম্পের আলোটা অনেক উজ্জ্বল হলেও আলো বেশী দূর ছড়ায় না যার ফলে হেডল্যাম্পের আলো নিয়ে মাঝে মাঝে সমস্যায় পড়তে হয়।
আমি বাইকটির কন্ট্রোলিং নিয়ে সন্তুষ্ট তবে পুরোপুরি না কারন আমার কাছে মনে হয়েছে এর পেছনের সাসপেনশনটা খুব একটা ভালো পারফরমেন্স দেয়না। সেই জন্য আমি গ্রামের রাস্তায় অনেক সাবধানতার সাথে বাইক চালায় কিন্তু দুটো সাসপেনশন মিলে আমি বেশ ভালো পারফরমেন্স পায়। ব্রেকিংটা অনেক ভালো যার ফলে আমি বিভিন্ন পরিস্থিতিতে যে কোনো স্পীডে ব্রেকিং করে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আনতে সক্ষম হই। আমি টপ স্পীডটা সেভাবে পরিমাপ করতে পারিনি তবে এত টুকু নিশ্চিত যে আমি ১০০ কিমি এর বেশি গতি তুলেছি এবং সেই রকম পরিস্থিতিতে আমি ব্রেকিং এর ভালো পারফরমেন্স লক্ষ্য করেছি। টায়ারটা অনেক চওড়া যার ফলে বেশ ভালো গ্রিপ দেয় এবং নিয়ন্ত্রন হারানোর ভয় কম থাকে।
বাইকটির ইঞ্জিন পারফরমেন্স অসাধারণ। ইঞ্জিনটা যে কোন অবস্থাতেই বেশ ভালো পাওয়ার দিতে সক্ষম। বাইকটির রেডি পিক আপ আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে, ১০০ কিমি স্পীডে তুলতে খুব কম সময় নেয়। তাই হোন্ডার পন্য হিসেবে আমি এর ইঞ্জিনে কোনো ঘাটতি খুজে পায়নি। আমি এর মাইলেজ নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট কারন ১৫০ সিসি এই রকম এক দানবীয় ইঞ্জিন অনেক ভালো মাইলেজ দিচ্ছে বর্তমানে আমি প্রায় ৩৮ কিমি প্রতি লিটারে মাইলেজ পাচ্ছি।
আমি বাইকটির পারফরমেন্স অনেক পছন্দ করে ফেলেছি, বিশেষকরে এর আউটলুকটা আমার কাছে দারুন লাগে কিন্তু একটা বিষয় খারাপ লেগেছে যে এর পেছনের কিটটা অনেক নিম্নমানের এবং দাম হিসেবে এইউ বাইকটির দামটা একটু বেশী মনে হয়েছে। ছোট খাটো কিছু সমস্যার চেক করার জন্য আমি সার্ভিসিং সেন্টারে গিয়েছি এবং তাদের আচরন,ঠিক করার মান আমার কাছে অনেক ভালো মনে হয়েছে।
সবশেষে আমি বলবো যে আমি আমার বাইক নিয়ে অনেক খুশি আছি এবং আমার রাইডিং আমি উপভোগ করছি।সবাইকে ধন্যবাদ