ব্যাক্তিগতভাবে আমার কাছে হোন্ডা ব্র্যান্ডের বাইক খুবই পছন্দ। আমি প্রথম বাইক চালানো শিখি হোন্ডা এইচএস ১০০ বাইক দিয়ে যেটা আমার পরিবারের প্রথম বাইক ছিলো এবং সেটা এখনও আছে। আমি হোন্ডা ব্র্যান্ডের একজন বড় ভক্ত বলা যেতে পারে। সেই ছোটবেলা থেকে হোন্ডা ব্র্যান্ডের প্রতি আকর্ষণ আমার একটু বেশি। আমার পরিবারের সবাই হোন্ডা বাইক ব্যবহার করে তাই অন্য কোন ব্র্যান্ডের দিকে ভুল করেও আমার চোখ যায় না।
জাপানিজ এই ব্র্যান্ডটি বাংলাদেশের মানুষের মন এমনভাবে জয় করেছে যে এখন মানুষের মুখে মুখে হোন্ডা হোন্ডা নাম শুনতে পাওয়া যায় এবং অনেকেই মোটরসাইকেল কে হোন্ডা বলে আখ্যায়িত করেন। যেহেতু আমি ও আমার পরিবার হোন্ডা প্রেমী তাই আমাদের পরিবারের নতুন দুই সদস্য আছে । একটি হল হোন্ডা এক্সব্লেড এবং আরেকটি হল হোন্ডা ডিও। হোন্ডা এক্সব্লেড বাইকটা আমি বেশি রাইড করিনা সেটা আমার পরিবারের সদস্যরা ব্যবহার করে এবং আমি বেশি ব্যবহার করি হোন্ডা ব্র্যান্ডের সুন্দর একটি স্কুটার হোন্ডা ডিও। প্রায় ৫ মাস যাবত এই বাইকটা আমি ব্যবহার করছি এবং ৩ হাজার কিমি রাইড করেছি।
এদিকে আমি যখন এই বাইকটা রাজশাহীর হোন্ডা ডিলার রহমান হোন্ডা কেশরহাট থেকে বাইকটা কিনি তখন তারা আমাকে সার্ভিস দিয়ে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। বাইকটার হেডল্যাম্প পজিশন ঠিক করতে যেয়ে তারা সেটা ঠিক না করে অন্য বিষয় ঠিক করে দিয়ে বলেছে সেটা ঠিক করা যাবে না এটা নিয়ে আমি রহমান হোন্ডার প্রতি একটু মনঃক্ষুণ্ণ। যাই হোক সেটা আমার অবজেকশন ছিলো আশা করি বিএইচএল বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। এখন আমি আমার এই স্কুটারের রাইডিং অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
প্রথমেই এই স্কুটারের কিছু ভালো দিক আপনাদের সাথে শেয়ার করি।
-আমার কাছে এই স্কুটারের সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে এর ডিজাইন ও হেডল্যাম্প পজিশন এবং হেডল্যাম্প ডিজাইন। বাইকের কালার কম্বিনেশনের সাথে ডিজাইনের একটা কম্বিনেশন করা হয়েছে যার ফলে আমি সহ অন্যান্য যারা বাইকটা দেখে তারা চোখ ফেরাতে পারে না এবং এলিডি হেডল্যাম্প এর ডিজাইন এবং তার আকর্ষণীয় লুকস আমাকে অনেক মুগ্ধ করেছে।
-ব্রেকিং সিস্টেম অনেক উন্নত মনে হয়েছে কারণ আমরা জানি যে স্কুটারের চাকাগুলো একটু ছোট সাইজের হয় যার ফলে ব্রেকিং বা কন্ট্রোল করতে একটু সমস্যা অনুভব হয় কিন্তু আমি এই স্কুটারের ব্রেকিং এর দিক দিয়ে অনেক ভালো সাপোর্ট পেয়েছি
-চাকা ছোট হওয়ার আরেকটি অসুবিধা হল ভাঙ্গা রাস্তায় এটা খুব ঝাঁকুনি অনুভব করায় কিন্তু হোন্ডা তাদের এই স্কুটারের যুক্ত করেছে উন্নতমানের সাসপেনশন যার কারণে ভাঙ্গা রাস্তায় আমি অনায়াসেই রাইড করতে পারি এবং ঝাঁকুনি অনেক কম মনে হয়।
-আমরা বরাবরই জেনে আসছি যে হোন্ডা তাদের ইঞ্জিনের প্রযুক্তি নিয়ে অনেক এগিয়ে অন্যান্য ব্র্যান্ডের থেকে ঠিক তারই প্রতিফলন স্বরূপ আমি এই স্কুটারের ইঞ্জিনে পেয়েছি । ইঞ্জিন আমার কাছে অনেক স্মুথ মনে হয়েছে এবং ইঞ্জিনের শব্দটা অনেক মিষ্টি যার ফলে ইঞ্জিনের পারফরমেন্স বা ইঞ্জিনের শব্দ নিয়ে আমার কোন সমস্যা না অস্বস্তিবোধ হয় না।
-বাজেটের দিক থেকে এই সেগমেন্টে আমার কাছে সেরা স্কুটার মনে হয়েছে হোন্ডা ডিও। কারণ বাইকের ডিজাইন, ইঞ্জিন পারফরমেন্স ও অন্যান্য বিষয় বাজেট অনুযায়ী সঠিক মনে হয়েছে।
-একদিনে আমি এই স্কুটার নিয়ে রাইড করেছি ১৫০ কিমি এবং টপ স্পীড তুলেছি ৯০ কিমি প্রতি ঘণ্টায়। আমার কাছে এই রাইডে কোন খারাপ অনুভূতি হয়নি স্কুটার রাইড করে।
মন্দ দিকের মধ্যে আমি শুধুমাত্র একটি বিষয় পেয়েছি তা হল এই স্কুটারের মাইলেজ। শহরের মধ্যে আমি লিটারে ৪০ কিমি এবং হাইওয়েতে ৪৫ কিমি মাইলেজ পাচ্ছি। আমার মতে এই স্কুটারের মাইলেজ ৫০ এর উপরে হলে অনেক ভালো হত। তবে ইঞ্জিন পারফরমেন্সের কথা বিবেচনা করলে মাইলেজের বিষয়টি আমলে না নেওয়া উচিত।
সবশেষে আমি বলবো যে হোন্ডা ডিও অনেক ভালো মানের একটি স্কুটার। এই স্কুটারের পারফরমেন্স , ডিজাইন নিয়ে আমি মুগ্ধ। যারা এই স্কুটারটি কেনার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাদের বলবো যে , আপনারা নিঃসন্দেহে স্কুটারটি কিনুন। আমি এই স্কুটার থেকে অনেক ভালো সাপোর্ট পাচ্ছি আর হোন্ডা ব্র্যান্ড হিসেবে এই স্কুটার চোখ বন্ধ করে কেনা যায়।
এদিকে আমি বিএইচএল এর সাথে আবেদন করবো যে, তারা যে রহমান হোন্ডা কেশরহাট শো রুমের দিকে একটু খেয়াল করে । তাদের সার্ভিস মান নিয়ে আমার অনেক প্রশ্ন আছে। যাই হোক্ এই ছিলো আমার হোন্ডা ডিও নিয়ে কিছু অভিজ্ঞতা। সবাই ভালো থাকবেন ।ধন্যবাদ।