জাপানিজ ব্র্যান্ড হিসেবে খ্যাত হোন্ডা বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটি মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড। কোয়ালিটি, ফিচারস, ইঞ্জিন ইত্যাদি মিলিয়ে হোন্ডা খুব ভালো মানের মোটরবাইক তৈরি করে আমার জানা মতে। একজন মহিলা রাইডার হিসেবে আমার দরকার টেকসই, নিরাপদ এবং আমার নিজের সুবিধামত বাইক। স্কুটারের কথা বললে এটা মহিলাদের জন্য রাইড করা অনেক সুবিধাজনক কারণ স্কুটারে ঝামেলা কম এবং মেয়েদের জন্য এটা স্বাছন্দময় একটি বাইক। আমি একজন এনজিও কর্মী হিসেবে বিভিন্ন স্থানে ছুটাছুটি করতে হয় বিধায় আমার পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সুবিধাজনক না এতে সময় বেশি লাগে। মোটরসাইকেল যাতায়াতের জন্য বেছে নিয়েছি কারণ মোটরসাইকেলে নিজের ইচ্ছামত স্বাধীনভাবে রাইড করা যায়। স্কূটার কেনার জন্য আমি মার্কেটে অনেক ব্র্যান্ডের স্কুটার দেখেছি এবং আমার কাছে পছন্দ হয়েছে হোন্ডা ডিও স্কুটারটি কারণ এর ডিজাইন ও ব্র্যান্ডকে আমি বেশি প্রাধান্য দিয়েছি। ডিও স্কুটারের দাম অন্যান্য স্কুটারের থেকে বেশি হলেও আমি এটা নিবো বলে ঠিক করে ফেলেছিলাম এবং ২০২১ সালের জানুয়ারির ২২ তারিখে রাজশাহীর স্বনামধন্য হোন্ডার ডিলার কে আর বাইক সেন্টার থেকে কিনে ফেলি। কেনার পর এখন পর্যন্ত আমি রাইড করেছি ১২০০ কিমি এর মত। আমার কাছে এই স্কুটারের ১২০০ কিমিতে যে সকল অভিজ্ঞতা হয়েছে সেগুলো নিচে শেয়ার করছি।
ভালো দিকের মধ্যে আমি যেসকল অভিজ্ঞতা পেয়েছি
ডিজাইন নিঃসন্দেহে আমার কাছে অনেক সুন্দর লেগেছে। বাইকের ডিজাইনের মধ্যে প্রিমিয়াম একটা অনুভূতি আছে। আমি স্কুটারটির ডিজাইন সব দিক থেকেই লক্ষ্য করে দেখেছি যে এটার ডিজাইন অনেক সুন্দর।
শহরে চলাচলের জন্য ৫০ কিমি কিংবা তার থেকে একটু বেশি মাইলেজ হলে আমার জন্য যথেষ্ট এবং সেটাই নিশ্চিত করেছে এই স্কুটার। শহরের মধ্যে আমি রাইড করে মাইলেজ পেয়েছি ৫০ কিমি। স্কুটার নিয়ে লং ট্যুর বা হাইওয়েতে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না তাই হাইওয়েতে কেমন মাইলেজ পপাবো সেটা সঠিকভাবে বলতে পারছি না। আমি শহরের চলাচলের জন্য এই মাইলেজকে যথেষ্ট মনে করি এবং ৫০ কিমি প্রতি লিটারে মাইলেজ পেয়ে আমি সন্তুষ্ট।
আমরা জানি যে হোন্ডা তাদের বাইকের ইঞ্জিন তৈরিতে কোন আপোষ করে না । আমি আমার স্কুটারের ক্ষেত্রে তেমনই অনুভূতি পাচ্ছি। আমি যখন রাইড করি তখন আমার কাছে মনে হয় যে ইঞ্জিনটা অনেক স্মুথ এবং এতে কোন প্রকার ভাইব্রেশন নাই। তবে যদি কেউ বেশি স্পীডে রাইড করে অর্থাৎ ৮০ কিমি প্রতি ঘণ্টা স্পীডের উপরে যদি রাইড করে তাহলে আমার মনে হয় একটু হলেও ভাইব্রেশন অনুভব করতে পারবে।
সিটিং পজিশন যথেষ্ট আরামদায়ক। আমি রাইড করে কোন ব্যাক পেইন অনুভব করিনি এবং ভাঙ্গা রাস্তায় এর সাসপেনশন অনেক ভালো সাপোর্ট দেয়। আমি শহরের মধ্যেই বিভিন্ন রাস্তায় রাইড করেছি এবং অনুভব করেছি যে বাইকটা যে কোন রাস্তার জন্য অনেক আরামদায়ক।
মন্দ দিকের মধ্যে আমি যে সকল অভিজ্ঞতা পেয়েছি
আমি যেহেতু ১২০০ কিমি রাইড করেছি এবং রাইড করে এই বাইকের সকল বিষয় সম্পর্কে একটু হলেও বুঝতে পেরেছি এবং কোথায় ঘাটতি আছে সেটাও বুঝতে সক্ষম হয়েছি। আমার কাছে স্কুটারটি রাইড করে মনে হয়েছে যে এর ব্রেকিং সিস্টেম একটু দুর্বল। ব্রেকিং করলে স্পীড কমে ঠিকই কিন্তু আমার মনে হয় ব্রেকিং আরেকটু উন্নত করা দরকার ছিলো।
ফিচারস, পারফরমেন্স অনুযায়ী দামটা মনে হয় আরেকটু কমানো গেলে ভালো হত।
১২০০ কিমি রাইড করে আমি উপরিউক্ত ভালো মন্দ বিষয়গুলো পেয়েছি এবং আমি আরও যত রাইড করবো ততবেশি ভালো মন্দ দিক বের হবে। একদিনে আমি এই স্কুটার নিয়ে সর্বচ্চো রাইড করেছি ৬০ কিমি যেটা শহরের মধ্যেই এবং টপ স্পীড তুলেছি ৮০ কিমি প্রতি ঘণ্টা। আমার কাছে টপ স্পীডে আত্মবিশ্বাস হারানোর মত পরিস্থিতি হয় এবং একদিনে ৬০ কিমি রাইড করে কোন ক্লানি বা বাইকের কোন সমস্যা এগুলো লক্ষ্য করিনি।
আমি বলবো যে আমি যে সব ভালো মন্দ বিষয় আচ করতে পেরেছি কিংবা অন্যান্য যে হোন্ডা ডিও ব্যবহারকারীগন আছেন তাদের মতামত নিয়ে বাইকটা কেনার ইচ্ছা থাকলে কিনতে পারেন।