হোন্ডা এইচ ১০০এস এই বাইকটি বাংলাদেশের রাস্তা কাপিয়ে চলেছে যুগ যুগ ধরে। ১০০ সিসি প্রেমিদের প্রথম পছন্দ ছিলো হোন্ডা এইচএস ১০০। বর্তমানে সেটির সরবরাহ না থাকার ফলে চাহিদা ও ব্যবহার কমে গিয়েছে । এখন রাস্তায় গুটি কয়েক এইচএস ১০০ সিসি বাইক দেখতে পাওয়া যায়। যুগ পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের চাহিদা। অভিরুচি ইত্যাদির পরিবর্তন হয় এবং সেই চাহিদা, অভিরুচি মাথায় রেখে হোন্ডা নিত্য নতুন বাইক আমাদের দেশে সরবরাহ করছে এবং আশানুরূপ সাড়া ফেলছে। হোন্ডার প্রতি আমাদের দেশের বাইকারদের মাঝে আলাদা একটি ভালোবাসা রয়েছে এবং হোন্ডা চেষ্টা করছে বাইকের গুনাগুন ঠিক রেখে সাধ্যের মধ্যে ভালো মানের বাইক গ্রাহকদের সরবরাহ করা।
হোন্ডা ড্রিম নিও হচ্ছে ১১০ সিসির একটি কমিউটার বাইক। যারা কমিউটার বাইক পছন্দ করেন তাদের জন্য এই বাইকটি ভালো হবে বলে আশা করা যায়। ১১০ সিসির মধ্যে আধুনিক লুক, স্টাইলিশ গ্রাফিক্স,এলয় হুইল, আধুনিক প্রযুক্তি রয়েছে যা এর পারফরমেন্স বাড়িয়ে গ্রাহকদের মুগ্ধ করার চেষ্টা করছে হোন্ডা। যেহেতু আধুনিক কমিউটার বাইক তাই এখন দেখার বিষয় এই বাইকে হোন্ডা কি কি অত্যাধুনিক ফিচারস আরও সংযুক্ত করেছে।
পর্যাপ্ত গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স
এই রকম গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স থাকার ফলে যে কোন রাস্তায় ঝামেলাবিহীন রাইডিং উপভোগ করতে পারবেন। আমাদের দেশের রাস্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে হোন্ডা পর্যাপ্ত হাই গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ব্যবহার করেছে তাদের এই ড্রিম নিও বাইকে।
আকর্ষণীয় নতুন গ্রাফিক্স
সুন্দর কালার কম্বিনেশনের সাথে সুন্দর গ্রাফিক্স যোগ করলে বাইকের আউটলুক বৃদ্ধি পায়। ১১০ সিসির ড্রিম নিও বাইকে হোন্ডা ব্যবহার করেছে নতুন দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিক্স এবং সুন্দর ডিজাইন । তাই এটি দেখতেও বেশ আকর্ষণীয় লাগে এবং গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম।
এইচইটি
এইচইটি এর পূর্ণরূপ হচ্ছে হোন্ডা ইকো টেকনোলোজি। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে সর্বাধিক মাইলেজ নিশিচত করার জন্য। এদিকে হোন্ডা তাদের এই বাইকের মাইলেজ দাবি করে ৭৪ কিমি প্রতি লিটারে যা ১১০ সিসির সেগমেন্টে অভাবনীয় মাইলেজ।
এডজাস্টেবল রিয়ার সাসপেনশন
হোন্ডা ড্রিম নিও বাইকে ব্যবহার করা হয়েছে সুদৃশ্য এডজাস্টেবল রেয়ার সাসপেনশন। এই সাসপেনশন সব ধরনের রাস্তায় চলাচলের উপযোগী বলে মনে করা হয় এবং এটি রাইডার ও পিলিয়নকে যথেষ্ট আরাম সরবরাহ করতে সক্ষম। সামনের দিকে তারা ব্যবহার করেছে টেলিস্কোপিক সাসপেনশন।
এম এফ ব্যাটারি ও ভিস্কাস এয়ার ফিল্টার
১২ ভোল্ট ৩ এম্পায়ার এম-এফ ব্যাটারি ফলে কোন টপ-আপ এর প্রয়োজন হয় না যার ফলে এই ব্যাটারি থেকে অনেক বেশি সাপোর্ট পাওয়া যায় এবং এটি ইলেকট্রিক্যাল দিকগুলোকে সচল রাখতে সাহায্য করে। অন্যদিকে ভিস্কাস এয়ার ফিল্টার ব্যবহারের ফলে এয়ার ফিল্টার বার বার পরিস্কার করতে হয় না । অন্যান্য এয়ার ফিল্টারের থেকে ভিস্কাস এয়ার ফিল্টার অনেক উপকারী।
টিউবলেস টায়ার
যেহেতু হোন্ডা ড্রিম নিও তে আধুনিক সব ফিচারস রয়েছে তাই হোন্ডা এর টায়ারেও আধুনিকতার ছোঁয়া দিয়েছে। হোন্ডা তাদের ড্রিম নিও বাইকে ব্যবহার করেছে সামনে ও পেছনে উভয় দিকে ৮০/১০০-১৮ সাইজের টিউবলেস টায়ার।
আকর্ষণীয় লম্বা ৭২০ মিমি সিট
যেহেতু কমিউটার বাইক তাই এটি আরামদায়ক হওয়া আবশ্যক। হোন্ডা তাদের এই বাইক আরামদায়ক করার জন্য ব্যবহার করেছে ৭২০ মিমি এর লম্বা সিটিং পজিশন যা রাইডার ও পিলিয়নকে আরাম এনে দিবে।
ডাইমেনশন
হোন্ডা ড্রিম নিও বাইকের ডাইমেনশন লম্বায় ২০০৯ মিমি, চওড়ায় ৭৩৭ মিমি এবং উচ্চতায় ১০৭৪ মিমি। এছাড়াও বাইকের হুইলবেজ রয়েছে ১২৫৮ মিমি , গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৭৯ মিমি এবং সব মিলিয়ে ওজন ১০৭ কেজি। এই বাইকের ফুয়েল ট্যংকারটিতে ৮ লিটার ফুয়েল ধারণ করা সম্ভব।
ইঞ্জিন
হোন্ডা ড্রিম নিও তে ব্যবহার করা হয়েছে এইচইটি প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ১০৯.১৯ সিসির এয়ার কুল্ড, ৪ স্ট্রোক,বি এস থ্রি ইঞ্জিন যা ৮.২৫ বিএইচপি @ ৭৫০০ আরপিএম ম্যাক্স পাওয়ার এবং ৮.৬৩ এন এম ম্যাক্স টর্ক উৎপন্ন করতে সক্ষম। ইঞ্জিনের সাথে রয়েছে ৪ স্পীড গিয়ার বক্স এবং কিক ও সেলফ স্টার্ট অপশন।
বডি ফ্রেম
বাইকের স্ট্যাবিলিটি, কন্ট্রোল, মজবুত গঠন বলতে গেলে প্রায় সব কিছু নির্ভর করে ভালো বডি ফ্রেমের উপর। হোন্ডা ড্রিম নিও তে ব্যবহার করা হয়েছে ডাইমন্ড বডি ফ্রেম।
ব্রেকিং
১১০ সিসির কমিউটার বাইকে হোন্ডা ব্যবহার করেছে সামনের দিকে ১৩০ মিমি ড্রাম এবং পেছনে ১৩০ মিমি ড্রাম ব্রেক এবং হোন্ডা কখনই তাদের ব্রেক নিয়ে আপোষ করে না। আশা করা যায় এই ড্রাম ব্রেক ভালো পারফরমেন্স দিতে সক্ষম হবে।
শেষকথা
বাইকটির সকল ফিচারস বিবেচনা করে আমরা বলতে পারি যে, বাংলাদেশের রাস্তা এবং গ্রাহকদের চাহিদার কথা মাথা রেখে হোন্ডা খুব সুন্দর একটি বাইক তৈরি করেছে যা সব রাস্তায় আরামের সাথে চলাচলের উপযোগী এবং ভালো মাইলজে সরবরাহ করে রাইডার কে তার গন্তব্যে পৌছে দিতে সক্ষম এই বাইক। তাই বলা যায় যে বাংলাদেশে ১১০ সিসির অন্য বাইকের উপর অনেকটাই প্রভাব ফেলবে এই ড্রিম নিও।