আমার পরিচয় আমি মোঃ রুস্তুম আলী। পেশায় আমি একজন চাকুরীজীবী। আমার মোটরসাইকেল এর নাম Honda Dream NEO 110 CC. আমার চাকুরীর কাজের জন্য ও সাধারণ যাতায়াতের জন্যই মূলত এই মোটরসাইকেলটি আমি কিনি। আমার মোটরসাইকেলটি আমি “মিথুন হোন্ডা” বানেশ্বর বাজার শোরুম থেকে কিনেছি। এটা আমার জীবনের ২য় বাইক। এর আগে আমার হিরো হোন্ডা ১০০ সিসি বাইক ছিল। সেটি আমি প্রায় দুই বছর ব্যবহার করেছি। বর্তমানের এই মোটরসাইকেলটি আমি প্রায় ১ বছর আগে কিনেছি। এই এক বছরে আমি প্রায় ১১,০০০ কিমি পথা চালিয়েছি। তবে মোটরসাইকেলটির একটি বিষয় আমার খুব খারাপ লেগেছে। আমি মোটরসাইকেলটি কিনার ১৫ দিনের মাথায় ইঞ্জিনের সাথের যুক্ত একটা স্প্রিং ভেংগে যায়। আমি সাথে সাথে মোটরসাইকেলটি নিয়ে সার্ভিসিং সেন্টারে যাই। তারা আমাকে জানায় এই স্প্রিং পরিবর্তন করতে হলে ইঞ্জিন খুলতে হবে। তখন আমার মনটা অনেক খারাপ হয়ে যায়। আমি তখন চিন্তা করি নতুন বাইকের ইঞ্জিনে কোন সমস্যা ছাড়াই এটা খোলা কি উচিৎ হবে ? আমার সেই সমস্যাটি এখনো সমাধান করি নাই। তবে এই সমস্যাটিকে আমি মেজর সমস্যা মনে করি। আমি আরো মনে করি কোম্পানির উচিৎ সেই নরমাল স্প্রিং পরিবর্তন করে সেখানে মজবুত স্প্রিং সেট করা। তা না হলে এই ছোট একটা সমস্যার জন্য বাইকারদের অনেক বড় ক্ষতি হবে। আজ আমি আমার মোটরসাইকেল এর সকল তথ্য আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করার জন্য হাজির হয়েছি।
আমার মোটরসাইকেলটি কিনার সময় এর ডিজাইন পছন্দ করার পরেই ক্রয় করেছি। আমার আগে থেকে কোন পছন্দ ছিল না। সরাসরি শোরুমে গিয়ে কয়েকটা মোটরসাইকেল দেখে এই ডিজাইনটা আমার ভাল লেগে যায়। এছাড়া এর বডির প্লাস্টিক গুলো অনেক মজবুত মনে হয়ছে। এর ব্লিডিং কোয়ালিটিও মান সম্মত। মোটরসাইকেলটির তেলের ট্যাংকারটা আমার মনের মত। এটি দেখতে খুবই সুন্দর। এর মিটার, ইন্ডিকেটর, লাইট ইত্যাদি দেখতে অনেক সুন্দর। ওজনের দিক দিয়েও এটা একদম পারফেক্ট ওজন আছে। অন্যায় বাইকের মত এটি হালকা না। মোটরসাইকেলটি যে কোন বয়সের মানুষের সাথে মানানসই বলে মনে করি। এছাড়া এই মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স খুবই ভাল। এই ইঞ্জিনটা খুব শক্তিশালী হওয়ায় যে কোন পরিস্থিতিতে আমি আরামের সাথে চলতে পারি। ইঞ্জিনের শব্দটা অনেক ভাল। এখন পর্যন্ত ইঞ্জিনে মেজর কোন সমস্যা পাই নাই। দীর্ঘক্ষণ যাতায়াত করলেও এটি অন্যান্য মোটরসাইকেল এর মত ওভার হীট হয় না। এছাড়া আমি খুব অল্প সময়ের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট গতিতে তুলতে পারি।
আমি তেল খরচ কম হবে প্রত্যাশায় এই বাইকটি কিনেছি। শোরুম থেকে আমাকে বলেছিল ১ লিটার তেলে ৬০ কিমি প্লাস মাইলেজ পাবো। আমি হাই রোডে ৬৩ কিমি মাইলেজ পাই এবং কাচা রাস্তায় ৫৫ কিমি মাইলেজ পাই। ১১০ সিসির মোটরসাইকেল থেকে এত ভাল মাইলেজ পাবো আমি কখনওই ভাবি নাই। এজন্য আমি মাইলেজ এর দিক থেকে সন্তুষ্ট।
আমার মোটরসাইকেলটি সব সময় ভাল কন্ট্রোল করতে পারি। কারণ এর ব্রেকিং সিস্টেমটা অনেক ভাল। এছাড়া মোটরসাইকেলটির চাকার গ্রিপ গুলো অনেক ভাল। এর সিটিং পজিশন অনেক ভাল। সিট নরম হওয়ায় আমি দীর্ঘক্ষন বাইক চালালেও ক্লান্তি অনুভব করি না। মোটরসাইকেলটি খুব বেশি উঁচু না হওয়ায় আমি খুব সহজেই সিটে বসে মাটিতে পা রাখতে পারি। এর হ্যান্ডেলবারটি অনেক সুন্দর। আমি রাতে বাইক চালিয়ে দেখেছি হেড লাইট থেকে পর্যাপ্ত আলো হয়। এতে করে আমি দিনের মতই পরিষ্কার দেখতে পাই। এর সুইচ গুলো দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি এগুলো ব্যবহার করতেও আমার কোন প্রকার সমস্যা হয় না। এর লুকিং গ্লাস অসাধারন দেখতে। এটি থেকে আমি খুব সহজেই পিছনের দৃশ্ব্য পরিষ্কার দেখতে পাই। এছাড়া মোটরসাইকেলটির সাসপেনশন গুলো আমাকে আরাম এনে দেয়। খারাপ রাস্তাতেও আমি ভাল অনুভূতি পাই এবং অন্যান্য বাইকের মত তেমন ঝাঁকুনি লাগে না। আমি হাই স্পীডে সর্বোচ্চ ৯৫ গতি তুলেছি এবং এক দিনে প্রায় ২০০ কিমি পথ চালিয়েছি। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করলেও আমার তেমন কোন সমস্যা হয় নাই। আমি এই বাইক থেকে সর্বোদা ভাল অনুভূতিই পেয়েছি। আমি মনে করি একটি বাইকের ইঞ্জিন পারফরমেন্স ভাল হলে সেটি চালিয়েও অনেক ভাল লাগবে।
আমি তিন বার সার্ভিসিং সেন্টারে গিয়েছি। তবে সেখানে হালকা ধরনের সার্ভিসিং নিয়েছি। তাদের ব্যবহার আমার অনেক ভাল লেগেছে। তাদের কাজের মান অনেক ভাল। তাদের বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নেই। এছাড়া এই মোটরসাইকেলটির কোয়ালিটি ও পারফরমেন্স বিবেচনায় দাম সঠিক আছে বলে মনে করি। তবে কথায় আছে, যে কোন পণ্যের দাম কমলে এর চাহিদা এর চাহিদা একটু বৃদ্ধি পায়। মোটরসাইকেল এর ক্ষেত্রও তাই, আমি মনে করি এই মোটরসাইকেল এর দাম কমানো হলে বিক্রয়ের হার অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।
পরিশেষে বলতে চাই, আমি যে মেজর সমস্যাটি নিয়ে ভুগছি সেটি যেন কোম্পানি অতি বিবেচনার সাথে দেখেন। এছাড়া মোটরসাইকেলটির সকল পারফরমেন্স মোটামুটি ভাল। আপনারা যদি কেউ মোটরসাইকেল কিনতে আগ্রহী থাকেন তবে এটি কিনতে পারেন। এর তেল খরচও অনেক কম।