বর্তমান বিশ্বের অন্যান্য দেশ গুলোর মত আমাদের দেশেও বাইকের ব্যবহার দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। বাইক এখন মানুষের একটি অতি প্রয়োজনীয় বাহন হিসেবে দাড়িয়েছে যা, কোন নির্দিষ্ট স্থানে সঠিক সময়ে পৌঁছে দেবার একটি নির্ভরযোগ্য বাহন। এছাড়াও একেক জনের কাছে একেক রকম ভাবে বাইকের ব্যবহার হয়ে থাকে। কেউ তার নিজ প্রয়োজনের জন্য আবার কেউ ঘোরাঘুরি ও স্টাইল করার জন্য। আমি মূলত আমার এই নতুন হোন্ডা লিভো ১১০সিসি বাইকটি ব্যবহার করি নিজ ব্যবসার জন্য ও একটু ঘোরাঘুরির জন্য। তবে বাইক চালানোর মধ্যে এক ধরণের রোমাঞ্চও আছে।
আমি মোঃ আওলিয়া সিদ্দিক, আর আগেই বলেছি আমার পেশা মূলত ব্যবসা। আর সেই জন্যই বাইক আমার অতি প্রয়োজনীয় একটি বাহন। যা আমার ব্যবসা ও নিজ অন্যান্য প্রয়োজনীয় স্থানে পৌঁছানোর একটি নির্ভরযোগ্য যোগাযোগ মাধ্যম। তবে আমি খুব একটা বেশ দিন যাবৎ বাইক ব্যবহার করছি না, মাত্র ৬ মাস যাবৎ আমার এই নতুন হোন্ডা লিভো ১১০সিসি বাইকটি ব্যবহার করা হচ্ছে। বলতে গেলে এটিই আমার জীবনের প্রথম বাইক। আমার অবশ্য অনেক আগেই বাইকের প্রয়োজন হয় কিন্তু নিজস্ব কিছু সমস্যার কারণে বাইক কেনা হয়ে উঠেনি। যাই হোক তবে আমি আমার এই বাইকটি ব্যবহার করে বেশ মজা পাই। বড় কথা এই বাইকটি আমি ৬ মাস ব্যবহার করেই বেশ কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি যা আপনাদের সাথে আমি শেয়ার করব।
আমার এই হোন্ডা লিভো ১১০সিসি বাইকটির মডেল দেখতে বেশ সুন্দর এবং আকর্ষনীয়, যা যে কারো ব্যক্তির নজর কাড়ে, ঠিক তেমনি আমারো। এর কালার, ডিজাইন এবং বীল্ড কোয়ালিটি অনেক সুন্দর এবং বেশ মজবুত বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। বাইকটি দূর থেকে দেখতে যতটানা সুন্দর লাগে তার থেকেও বেশি সুন্দর লাগে কাছ থেকে দেখতে। এর বীল্ড কোয়ালিটি নিয়ে তেমন কিছু বলব না, এক কথায় বেশ মজবুত এবং চমৎকার। এর ইঞ্জিনটিও আমার কাছে অনেক ভালো বলে মনে হয়েছে।
বাইকটির সিটিং পজিশন বেশ আরামদায়ক এবং এর সিটিং পজিশন অনুযায়ী হ্যান্ডেলটিও বেশ মাপমত, যা আমার কাছে বেশ পছন্দের। তার সাথে হ্যান্ডেলের সকল সুইচগুলোও বেশ ভাল কাজ করে, এখন পর্যন্ত আমি তেমন কোন সমস্যায় পড়ি নাই। এর ব্রেক গুলোও বেশ ভাল কাজ করে। তাই আমি বলতে চাই আমার এই বাইকটির কমফোর্ট ও কন্ট্রোল বেশ চমৎকার। আর তাই এই বাইকটির কমফোর্ট ও কন্ট্রোলিং নিয়ে আমি মোটামুটি সন্তুষ্ট। এর হেড লাইটের বডি এবং তার সাথে এর আলোও বেশ ভালো এবং তীক্ষ। তাই রাতে আমার এই বাইকটি রাইড করতে কোন সমস্যা অনুভব করি না। সব মিলিয়ে বাইকটির এই সকল দিক ভালো বিধায় আমি বেশ অনেক সময় ধরে বাইকটি রাইড করতে পারি এবং যা আমাকে কোন প্রকার সমস্যা বা অসুবিধায় ফেলে না।
তবে হোন্ডা লিভো ১১০সিসি বাইকটির সাসপেনশন নিয়ে আমি একটু দ্বিধায় আছি। আমার বাইকটি আমি তেমন বেশি গতিতে চালাই না, সেই অনুযায়ী তেমন কাঁপে না তবে আমার ছেলে ১০০ স্পীড তুলেছে কোন সমস্যা হয়নি। তবে প্রাথমিক অবস্থায় স্পীড পেতে একটু দেরি হয়। এর পেছনের শকাপ ভালো খেলে তবে সামনের দিকের শকাপ গুলো অন্যান্য বাইকের তুলনাই বেশ কম কাজ করে বলে আমার মনে হয়েছে। গ্রামের রাস্তাতে বা হালকা ভাঙ্গা রাস্তাতে একটু ঝাঁকুনি অনুভব করি, তবে এর ভালো সিটিং পজিশনের জন্য আমি তেমন কোন ব্যাক পেইন অনুভব করি না।
বড় কথা এই বাইকটির দাম তেল খরচের দিক দিয়ে বেশ কম বলেই আমার কাছে মনে হয়েছে। আমি বলব আমার এই বাইকটি বেশ পারফেক্ট। যেহেতু আমি ব্যবসা করি, তাই আমাকে প্রতিটা দিনই অনেক রাস্তা রাইড করতে হয় তাই তেল খরচের দিকটি বেশি নজরে রাখতে হয়, বাইকটি বর্তমানে ৬০ কিমি মাইলেজ দিচ্ছে এমনকি তার চেয়েও বেশি, আর তাই আমি বলব যে এই বাইকটির তেল খরচ মোটামুটি কম বলেই মনে হয়েছে আমার কাছে। আমার এই বাইকের সার্ভিস সেন্টার বানেশ্বরে, সার্ভিসিং এর মান আমার কাছে বেশ ভালো মনে হয়েছে। তাদের ব্যবহার এবং ঠিক করার কৌশল আমার কাছে অতি সন্তষজনক। তাই আমি বলব এক কথায় বেশ ভালো।
ভাল দিক
- তেল খরচ বেশ কম
- দামটাও মনের মত
- ডিজাইন ও বীল্ড কোয়ালিটি বেশ সুন্দর ও মজবুত
- হ্যান্ডেল, সুইচ এবং সিটিং পজিশন বেশ ভালো
খারাপ দিক
- শকাপ(সাসপেনশন) সামনের দিকে তেমন খেলে না
- প্রাথমিক স্পীডে তুলতে একটু দেরি হয়
- গ্রামের রাস্তা বা ভাঙ্গা রাস্তায় হালকা ঝাঁকুনি অনুভব করি
সর্বপরি আমি আমার হোন্ডা লিভো ১১০সিসি বাইকটি ৬ মাস চালিয়ে যে সকল সুবিধা ও অসুবিধা পেয়েছি সব কিছুর দিক বিবেচনা করে বাইকটি আমার কাছে বেশ পছন্দের। এছাড়াও একটি বড় দিক হলো বাজারের অন্যান্য ১১০সিসি বাইকের তুলনাই এই বাইকটির দাম তুলনা মূলক কম এবং এর অন্যান্য সকল দিকও বেশ ভালো। এই বাইকটি নিয়ে আমি মানসিক ভাবে বেশ সন্তুষ্ট আছি। তাই আপনারা যারা নতুন বাইক ব্যবহার করার কথা ভাবছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলব এই বাইকটি সকল বয়সের মানুষের জন্য পারফেক্ট একটি বাইক। যে কেউ চোখ বন্ধ করে এই বাইকটি কিনতে পারেন। আমি বলব বেশ আরাম ও মজা পাবেন।