মোটরসাইকেল বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় বাহন। একটি মোটরসাইকেল থাকলে নিজের ইচ্ছা স্বাধীন যে কোন জায়গাতে যাতায়াত করা যায়। অন্য কোন যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকার প্রয়োজন হয় না। যে কোন কাজের যাতায়াতের জন্য মোটরসাইকেল এর ভূমিকা ব্যাপক। আমার নাম মোঃ ইসতায়েক আহম্মেদ। পেশায় আমি একজন ব্যবসায়ী। আমার মোটরসাইকেল এর নাম হোন্ডা লিভো। আমি ২০ দিন আগে মোটরসাইকেলটি কিনেছি। আমি সাধারণ যাতায়াতের জন্যই মূলত মোটরসাইকেলটি কিনি। আমি এই মোটরসাইকেলটি ২০ দিনে প্রায় ৪৫০ কিমি পথ চালিয়েছি। এটা আমার জীবনের প্রথম বাইক। এই মোটরসাইকেল চালিয়ে আমি ভাল পারফরমেন্স পাচ্ছি। বাইক জীবনে আমি আমার এই ২০ দিনের রাইডিং অভিজ্ঞতা এবং বিভিন্ন তথ্য সবার সাথে শেয়ার করার জন্য হাজির হয়েছি। তাই প্রথমেই জানাতে চাই, ২০ দিনে এখন পর্যন্ত আমার মোটরসাইকেলে কোন সমস্যা দেখা দেয় নাই। আমার রিভিউটা সম্পূর্ণ পড়লে এই মোটরসাইকেল বিষয়ে সঠিক তথ্য বিস্তারিত জানতে পারবেন।
মোটরসাইকেলটির ডিজাইন আমার খুব ভাল লেগেছে। আমি সরাসরি শোরুমে গিয়ে বিভিন্ন ডিজাইন দেখে এই মোটরসাইকেলটি কিনেছি। আমি কখনো মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট করি নাই। তবুও আমি ২০ দিন মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করে বুঝতে পেরেছি এর বডির প্লাস্টিক গুলো অনেক মজবুত। আমার এই মোটরসাইকেলটির ইঞ্জিন খুব শক্তিশালী। এই মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন শক্তিশালী হওয়ায় যে কোন সময় দুই জন সিটে বসে আরামের সাথে চালাতে পারি। এর ইঞ্জিনের শব্দটা খুব সুন্দর। এর ইঞ্জিনটা ওভার হিট হয় না। এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স অনেক ভাল। একটি মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স ভাল হলে সব কিছুই ভাল লাগে। এই মোটরসাইকেলটি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি আমি এটি চালিয়ে অনেক বেশি আরাম অনুভব করি। এর সিটিং পজিশন অনেক সুন্দর। সিটটা নরম হওয়ায় চালিয়ে বেশ আরাম অনুভব করা যায়। আমি এক দিনে প্রায় ৫০ কিমি পথ চালিয়েছি। দীর্ঘ যাতায়াতে আমার কোন সমস্যা হয় না। হাই রোডে আমি সর্বোচ্চ ৭০ গতিতে তুলেছি। তবে আমি মোটরসাইকেল খুব বেশি স্পিডে চালানো পছন্দ করি না। কারণ অতিরিক্ত মাত্রায় মোটরসাইকেল চালালে যে কোন সময় দূর্ঘটনার কবলে পড়তে পারে।
এবার মোটরসাইকেলটির কন্ট্রোল বিষয় নিয়ে কিছু বলবো। মাটির রাস্তাতে চালালেও আমার বাইকে বসে আমি তেমন ঝাঁকুনি অনুভব করি না। এ থেকে আমি বুঝতে পারি এই মোটরসাইকেল এর সাসপেনশন গুলো খুব ভাল। মোটরসাইকেলটির ব্রেকিং সিস্টেম অনেক ভাল। এর সামনের চাকায় ডিস্ক ব্রেক এবং পিছনের চাকায় ড্রাম ব্রেক রয়েছে। তাই আমি যে কোন পরিস্থিতিতে সঠিক ভাবে মোটরসাইকেল কন্ট্রোল করতে পারি। এর চাকার গ্রিপ গুলো অনেক ভাল। গ্রিপ ভাল হওয়ার কারণে চাকা স্লিপ করে না। এই মোটরসাইকেল এর লুকিং গ্লাস দুটো দেখতে সুন্দর। এটির মাধ্যমে আমি পিছনের দৃশ্য পরিষ্কার দেখতে পাই। আমি রাতে মোটরসাইকেলটি চালিয়ে দেখেছি এর হেড লাইট থেকে পর্যাপ্ত পরিমানে আলো হয়। এছাড়া এর সুইচ গুলো দেখতে অনেক সুন্দর। এর ব্যাটারিও বেশ টেকসই। এর ডিস্ক ব্রেকটা আমার খুব পছন্দের। মোটরসাইকেলটির সেল্ফ অনেক ভাল কাজ করে। এখন পর্যন্ত সেল্ফ স্টার্ট এ কোন ঝামেলা দেখা দেয় নাই। আশা করি আগামীতেও আমি এমন ভাল পারফরমেন্সই পাবো।
এই মোটরসাইকেলের তেল খরচ মোটামুটি কম। মোটরসাইকেলটি কিনার সময় শোরুম থেকে বলেছিল ১ লিটার তেলে ৬০ কিমি চলতে পারবো। আমি এখন ঠিক এমন মাইলেজই পাই। এমন মাইলেজ পেয়েও আমি খুব সন্তুষ্ট আছি। তাই মাইলেজ নিয়ে কোন প্রকারের কোন অভিযোগ নেই।
এখন পর্যন্ত আমি মোটরসাইকেলটি নিয়ে এক বারও সার্ভিসিং সেন্টারে সার্ভিসিং করাতে যাই নাই। তবে ১ মাস পরে আমি সেখানে যাবো ফ্রি সার্ভিসিং নিতে। সকল পারফরমেন্স বিবেচনায় আমার মোটরসাইকেলটির দামটা মোটামুটি সঠিক আছে বলে আমি মনে করি।
পরিশেষে বলতে চাই, হোন্ডা লিভো মোটরসাইকেল এর দাম, পারফরমেন্স ও মাইলেজ বিবেচনা করে আপনারা সকলেই নিশ্চিন্তে এই মোটরসাইকেলটি কিনতে পারেন। এই মোটরসাইকেলটি সব দিক থেকেই বেশ ভাল। মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করে আমি অনেক ভাল অনুভূতি পাচ্ছি। ইঞ্জিন ভাল রাখতে হলে সব সময় ইঞ্জিনে ভেজাল মূক্ত অয়েল ব্যবহার করতে হবে। সবাইকে ধন্যববাদ।