আমি মোঃ মানিকুর রহমান। পেশায় একজন চাকুরিজীবি। বলতে গেলে হোন্ডা লিভো ১১০সিসি এটাই আমার জীবনের প্রথম বাইক। অনেকেই আছেন যে নিজের প্রয়োজনের জন্য আবার কেউ ঘোরাঘুরি ও স্টাইল করার জন্য। আমি মূলত আমার এই নতুন হোন্ডা লিভো ১১০ সিসি বাইকটি ব্যবহার করি নিজ বাসায় ছুটিতে আসলে একটু ঘোরাঘুরির জন্য। তবে বাইক চালানোর মধ্যে এক ধরণের রোমাঞ্চও আছে। তবে আমি খুব একটা বেশ দিন যাবৎ বাইক ব্যবহার করছি না, মাত্র ৬ মাস যাবৎ আমার এই নতুন হোন্ডা লিভো ১১০সিসি বাইকটি ব্যবহার করা হচ্ছে। আমার অবশ্য অনেক আগে থেকেই বাইকের প্রতি একটি টান ছিল তবে কিনবো কিনবো করে কিনা হয়ে উঠছিলনা। অবশেষে কিনেই নিলাম এই বাইকটি। যা ব্যবহার করে আমি বেশ আরাম অনুভব করি। তবে এই বাইকটি আমি ৬ মাস ব্যবহার করেই বেশ কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি যা আপনাদের সাথে আমি শেয়ার করব।
আমার এই হোন্ডা লিভো ১১০সিসি বাইকটির মডেল দেখতে বেশ সুন্দর এবং আকর্ষনীয়, বাইকটি যে কোন ব্যক্তির নজর কাড়ে। এর কালার, ডিজাইন এবং বীল্ড কোয়ালিটি অনেক সুন্দর এবং বেশ মজবুত বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। বাইকটির বীল্ড কোয়ালিটি নিয়ে তেমন কিছু বলব না, এক কথায় বেশ মজবুত এবং চমৎকার। বাইকটির সিটিং পজিশন বেশ আরামদায়ক এবং এর সিটিং পজিশন অনুযায়ী হ্যান্ডেলটিও বেশ মাপমত, যা আমার কাছে বেশ পছন্দের। তার সাথে হ্যান্ডেলের সকল সুইচগুলোও বেশ ভাল কাজ করে, এখন পর্যন্ত আমি তেমন কোন সমস্যায় পড়ি নাই। এর ব্রেক গুলোও বেশ ভাল কাজ করে। তাই আমি বলতে চাই আমার এই বাইকটির কমফোর্ট ও কন্ট্রোল বেশ চমৎকার। আর তাই এই বাইকটির কমফোর্ট ও কন্ট্রোলিং নিয়ে আমি মোটামুটি সন্তুষ্ট। এর হেড লাইটের বডি এবং তার সাথে এর আলোও বেশ ভালো এবং তীক্ষ। তাই রাতে আমার এই বাইকটি রাইড করতে কোন সমস্যা অনুভব করি না। সব মিলিয়ে বাইকটির এই সকল দিক ভালো বিধায় আমি বেশ অনেক সময় ধরে বাইকটি রাইড করতে পারি এবং যা আমাকে কোন প্রকার সমস্যা বা অসুবিধায় ফেলে না।
তবে বাইকটির ইঞ্জিনটা আমার তেমন ভাল মনে হয়নি। কারণ এর হালকা একটা শব্দ হয় এবং সকালে স্টার্ট দিতে বেশ সমস্যা হয়। বাইকটির কন্ট্রোলিং ভাল তবে এর গঠন অনুযায়ী এর চাকাটা অনেক চিকন। তাই চাকাটা মোটা হলে বেশ ভালো বলে আমার কাছে মনে হয়।
হোন্ডা লিভো ১১০সিসি বাইকটির সাসপেনশন বেশ ভাল। আমার বাইকটি আমি তেমন বেশি গতিতে চালাই না, তবে যেই পর্যন্ত গতিতে উঠিয়েছি তাতে করে তেমন কাঁপে না। তবে প্রথম অবস্থায় স্পীড পেতে একটু দেরি হয়। এর শকাপ গুলো বেশ ভালো খেলে যার ফলে আমি গ্রামের রাস্তাতে বা হালকা ভাঙ্গা রাস্তাতে কোন ঝাঁকুনির অনুভব করি না এমনকি বেশি গতিতেও আমার বাইকটি ভাইব্রেশন করে না সুতরাং ব্যাক পেইন অনুভব করি নাই। এই দিক দিয়ে আমি বেশ সন্তুষ্ট।
তবে বাইকটির বড় দিক হলো এর দাম। বাইকটির দাম বাজারের অন্যান্য বাইকের তুলনাই বেশ কম বলেই মনে হয়েছে। মাইলেজের দিক দিয়েও বেশ ভাল সার্ভিস পাচ্ছি। আমি বলব আমার এই বাইকটি বেশ পারফেক্ট। যেহেতু আমি তেমন বাইক চালাই না তবে যতটুকু চালাই তাতে এর মাইলেজ নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট। বাইকটি বর্তমানে ৬০ কিমি মাইলেজ দিচ্ছে এমনকি তার চেয়েও বেশি, আর তাই আমি বলব যে এই বাইকটির তেল খরচ মোটামুটি কম বলেই মনে হয়েছে আমার কাছে। এই বাইকের সার্ভিস সেন্টারের মানটাও বেশ ভালো লেগেছে, তাদের আচার ব্যবহার এবং তাদের দক্ষতা আমার কাছে বেশ পছন্দ হয়েছে। তাই আমি বলব এক কথায় বেশ ভালো।
ভাল দিক
- তেল খরচ বেশ কম
- দামটাও মনের মত
- ডিজাইন ও বীল্ড কোয়ালিটি বেশ সুন্দর ও মজবুত
- হ্যান্ডেল, সুইচ এবং সিটিং পজিশন বেশ ভালো
খারাপ দিক
- ইঞ্জিনে হালকা বাজে শব্দ হয়
- প্রথমের দিকে স্পীডে তুলতে একটু দেরি হয়
- গঠন অনুযায়ী এর চাকাটা আমার কাছে চিকন বলেই মনে হয়েছে।
- সকালে স্টার্ট দিতে বেশ সমস্যা হয়
তবে আমি আমার হোন্ডা লিভো ১১০সিসি বাইকটি ৬ মাস চালিয়ে যে সকল সুবিধা ও অসুবিধা পেয়েছি সব কিছুর দিক বিবেচনা করে বাইকটি আমার কাছে বেশ পছন্দের। এই বাইকটি নিয়ে আমি মনে মনে বেশ সন্তুষ্ট আছি। তাই আমি বলল আপনারা যারা নতুন বাইক কেনার কথা ভাবছেন তারা নির্দিধায় এই বাইকটি কিনে ব্যবহার করতে পারেন। আমার বিশ্বাস আমার মত আপনারাও বেশ সন্তুষ্ট হবেন।