হোন্ডা লিভো মোটরসাইকেল রিভিউ - রাফিউল ইসলাম রাসেল

প্রথমেই আমি আমার পরিচয় জানাচ্ছি। আমি মোঃ রাফিউল ইসলাম রাসেল। পেশায় আমি একজন ব্যবসায়ী। আমার মোটরসাইকেল এর নাম হোন্ডা লিভো ১১০ সিসি। আমার ব্যবসায়ের কাজের জন্য মোটরসাইকেলটি খুব প্রয়োজন ছিল। আমি দীর্ঘ ১০ বছর সিংগাপুরে ছিলাম। সেখান থেকে ১ বছর আগে আমি বাংলাদেশে আসি। নিজের দেশে এসে ভাবলাম যে কোন একটি ব্যবসা করি। আমি ১ মাস প্রশিক্ষণ নিয়ে টাইলস এবং স্যানেটারীর দোকান চালু করি। এই ব্যবসাটি চালু করে আমি এখন বেশ স্বাবলম্বী। কিন্তু আমার যাতায়াতের ক্ষেত্র মোটরসাইকেল কিনবো ভাবছিলাম। হঠাৎ আমি একদিন তাহেরপুর বাজারের “ইউনাইটেড হোন্ডা পালস” শোরুমে যাই। সেখানে গিয়ে হোন্ডা লিভো মোটরসাইকেলটি দেখে আমার পছন্দ হয়ে যায়। মোটরসাইকেলটি ১১০ সিসির হলেও এটি দেখতে বেশ বড়। এর তেলের ট্যাংকারটা বেশ নজরকাড়া। মোটরসাইকেলটির গ্রাফিক্স ডিজাইন গুলো আমার অনেক ভাল লেগেছে। এর বডির রংটা অনেক চকচকে। এই সবকিছু দেখেই আমার পছন্দ হয়েছে। সাথে সাথে সেই দিনই আমি মোটরসাইকেলটি কিনি। এটা আমার জীবনের প্রথম বাইক। বর্তমানে এই মোটরসাইকেলটি আমি ৬ মাস যাবত ব্যবহার করছি। ৬ মাসে আমি প্রায় ২৩০০ কিমি পথ চালিয়েছি। আমি প্রয়োজন ছাড়া মোটরসাইকেল চালাই না। এর লুকিং গ্লাস থেকে পিছনের রাস্তা পরিষ্কার দেখতে পাই।

ছয় মাস মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করে আমি বুঝতে পেরেছি এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স অনেক ভাল। কোন বাধাকেই সে পরোয়া করে না। এটি অনেক শক্তিশালী। হাই স্পীডে আমি ৮০ গতিতে তুলেছি। বেশি গতিতে চালিয়েও আমি কোন সমস্যা পাই নাই। অতিরিক্ত গতিতে আমি মোটরসাইকেল চালানো পছন্দ করি না। একদিন আমি দেখেছি মোটরসাইকেলটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে বেশি গতিতেও তোলা যায়। এর ইঞ্জিন থেকে আমি খুব ভাল মাইলেজ পাচ্ছি। মোটরসাইকেলটি কিনার সময় শোরুম থেকে আমাকে বলেছিল ১ লিটার তেলে ৬০ কিমি চলতে পারবো। আমি এখন ঠিক সেই মাইলেজটিই পাচ্ছি। তাই মাইলেজ নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই।

এবার মোটরসাইকেলটির কন্ট্রোল ও আরাম বিষয়ে কিছু কথা বলবো। এই মোটরসাইকেলের সামনের চাকায় ডিস্ক ব্রেক এবং পিছনের চাকায় ড্রাম ব্রেক রয়েছে। সেজন্য আমি যে কোন গতিতে খুব সহজেই মোটরসাইকেল কন্ট্রোল করতে পারি। এর চাকার গ্রিপ গুলো অনেক সুন্দর। তাই কন্ট্রোল এর সময় চাকা তেমন স্লিপ করে না। এর সাসপেনশন গুলো ভাল কাজ করে। সে জন্য আমি খুব আরামের সাথে মোটরসাইকেল চালাতে পারি। এমনকি কাচা রাস্তাতেও একা একা চালালে তেমন ঝাঁকুনি অনুভব করি না। মোটরসাইকেলটিতে সেল্ফ থাকায় আমার অনেক সুবিধা হয়। এর ব্যাটারি কোয়ালিটি বেশ মজবুত। আমি একদিনে প্রায় ৭০ কিমি পথ চালিয়েছি। অতিরিক্ত মোটরসাইকেলটি চালালেও এর ইঞ্জিন ওভার হীট হয় না। আমি রাতে মোটরসাইকেলটি চালিয়ে দেখেছি এর হেড লাইটে পর্যাপ্ত পরিমানে আলো হয়। মোটরসাইকেলটির হ্যান্ডেলবারটি অনেক সুন্দর। এটি ধরে দীর্ঘ যাতায়াত করেও আমি ভাল অনুভূতি পাই। এর সুইচ গুলো দেখতে অনেক সুন্দর। এগুলো ব্যবহার করতে আমার কোন সমস্যা হয় না।

আমি সার্ভিসিং সেন্টারে একদিন গিয়েছিলাম। সেখানকার পরিবেশ অনেক ভাল। আমার মোটরসাইকেল এর চেন টাইট করা সহ তারা অল বডি সার্ভিসিং করে দেন। সেখানে মোটামুটি ভীড় থাকা সত্তেও তারা আমার কাজটি আগে করে দেন। তাদের ব্যবহার আমার খুব ভাল লেগেছে। তবে সার্ভিসিং সেন্টারটি দূরে হবার কারনে সেখানে আর যাওয়া হয় নাই। আমার এই মোটরসাইকেলটির সকল পারফরমেন্স বিবেচনা করে এর দামটা সঠিক আছে বলে মনে করি।

পরিশেষে সকলের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, কেউ যদি ভাল পারফরমেন্স যুক্ত মোটরসাইকেল কিনতে চান তাহলে হোন্ডা লিভো ১১০ সিসির এই মোটরসাইকেলটি কিনতে পারেন। শুধু তাই নয়, এই মোটরসাইকেলটির তেল খরচ খুবই কম। সকল প্রকারের যাতায়াতের জন্য মোটরসাইকেলটি বেশ ভাল। আশা করি এটি চালিয়ে সকলেই আমার মতই ভাল পারফরমেন্স পাবেন। সবাইকে ধন্যবাদ।

All HONDA bike price in bd

Honda Livo Disc