আমার নাম মোঃ শান্ত। লেখাপড়ার পাশাপাশি আমি বাবার ব্যবসার কাজে সাহায্য করি। আমার মোটরসাইকেল এর নাম Honda Livo 110 CC. এই মোটরসাইকেলটি মূলত বাবার ব্যবসার কাজে এবং পারিবারিকভাবে যাতায়াতের জন্যই কেনা। এটি “মিঠুন হোন্ডা” বানেশ্বর বাজার, রাজশাহীর একটি শোরুম থেকে কেনা হয়েছে। মোটরসাইকেলটি আমি এবং আমার বাবা দু’জনেই ব্যবহার করি। এটি আমার জীবনের প্রথম বাইক। এই মোটরসাইকেলটি ১০ মাস যাবত ব্যবহার করছি। ১০ মাসে আমি প্রায় ৭০০০ কিমি পথ চালিয়েছি কোন প্রকারের দূর্ঘটনা ছাড়াই। Honda Livo 110 CC মোটরসাইকেল এর ডিজাইনটা আমার খুব পছন্দের। আমি যখন মোটরসাইকেল চালাই তখন সবাই আমার দিকে এক ভাবে তাকিয়ে থাকে। এ থেকে আমি বুঝতে পারি সত্যিই এটি নজরকড়া। মোটরসাইকেলটির ট্যাংকারটা ডিজাইনকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলেছে। কখনো কখনো এই মোটরসাইকেলটিকে দূর থেকে দেখলে ১৫০ সিসি মোটরসাইকেল এর মত মনে হয়। এছাড়া এর বডির প্লাস্টিক গুলো বেশ মজবুত বলে মনে হয়েছে।
আমার মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স অনেক ভাল। আমি যখন হাই স্পীডে মোটরসাইকেলটি চালাই তখন ইঞ্জিনের দিকে লক্ষ্য করে দেখেছি, এর শব্দটা অনেক সুন্দর। দীর্ঘক্ষন চালালেও এর ইঞ্জিন খুব বেশি হীট হয় না। এটি অনেক শক্তিশালী। এই মোটরসাইকেলটি কিনার দুই টা উদ্দেশ্য ছিল। এক হলো ভাল মাইলেজ পাবো এবং দুই ভাল ইঞ্জিন পারফরমেন্স পাবো। ১০ মাস মোটরসাইকেলটি চালিয়ে খুব ভাল অনুভূতি পেয়েছি।
আমি হাই রোডে লিটারে প্রায় ৫৬-৫৮ কিমি মাইলেজ পাই এবং কাচা রাস্তায় লিটারে প্রায় ৫২-৫৫ কিমি মাইলেজ পাই। ১১০ সিসির মোটরসাইকেল হিসেবে এমন মাইলেজ পেয়ে আমি সন্তুষ্ট আছি। তবে আমি প্রথম তিন মাস লিটারে ৪৫-৫০ কিমি মাইলেজ পেয়েছিলাম।
আমি মোটরসাইকেল চালানো খুব পছন্দ করি। পরিবারের যে কোন কাজে আমি এই মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করি। এমনকি আমি আর বাবা এক সাথে কোথাও গেলে মোটরসাইকেলটি আমিই চালাই। মোটরসাইকেলটির সিটিং পজিশন বেশ বড় ও চওড়া। এটিতে বসে অনেক আরাম আছে। এর হ্যান্ডেলবারটি ধরে দীর্ঘ যাতায়াত করে আমি কখনওই ক্লান্ত হই নি। আমি একদিনে প্রায় ১০০ কিমি পথ চালিয়েছি। আমি হাই স্পীডে মোটরসাইকেল চালানো পছন্দ করি না। তবে আমি সর্বোচ্চ স্পীডে ৮৫ গতি তুলেছি। এই গতিতে চালিয়ে আমি কোন সমস্যা বুঝতে পারি নাই। এর সুইচগুলো দেখতে অনেক সুন্দর এবং এগুলো ব্যবহার করতে আমার কোন সমস্যা হয় না। আমি রাতে মোটরসাইকেলটি চালিয়ে দেখেছি এর হেড লাইটে অনেক আলো হয়। এর ব্যাটারিটা বেশ টেকসই। আমি এখন পর্যন্ত এর কোন সমস্যা পাই নি। সেল্ফে স্টার্ট নিতেও কোন প্রকার সমস্যা দেখা দেয় না। মোটরসাইকেলটির সাসপেনশন অনেক ভাল। খারাপ রাস্তায় একা যাতায়াত করলেও খুব একটা ঝাঁকুনি অনুভব করি না। যদিও আমি আমার মামার বাজাজ ডিস্কোভার ১০০ সিসি মোটরসাইকেলে প্রথম বাইক চালানো শিখেছি, তবু Honda Livo 110 CC মোটরসাইকেলটি চালিয়ে আমার বেশি ভাল লেগেছে। এটি মোটামুটি আরামদায়ক একটি বাইক।
এই মোটরসাইকেল এর চেন খুব দ্রুত লুজ হয়ে যায়। আমি প্রতি মাসেই এটি সার্ভিসিং করাই। তবে সার্ভিসিং সেন্টারে আমি মাত্র এক দিন গিয়েছি। সেদিন মবিল পরিবর্তন করা সহ পুরো মোটরসাইকেলটি ধুয়ে মুছে সার্ভিসিং করিয়ে নিয়েছিলাম। সেখানকার পরিবেশ আমার খুব ভাল লেগেছে। তাদের ব্যবহার অনেক ভাল এবং তাদের কাজের মান আমার পছন্দ হয়েছে। কিন্তু আমার বাসা থেকে সার্ভিসিং সেন্টারটি অনেক দূরে হবার কারণে সেখানে আর যাওয়া হয় নাই। হালকা কোন সমস্যা হলে পাশের মেকানিক এর কাছ থেকে সার্ভিসিং করিয়ে নিই।
এই মোটরসাইকেলটি সকল পারফরমেন্স বিবেচনায় এর দামটা সঠিক আছে বলে মনে করি। পরিশেষে সবার উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ভাল ইঞ্জিন পারফরমেন্স পেতে Honda Livo 110 CC মোটরসাইকেলটি নিশ্চিন্তে সবাই কিনতে পারেন। এছাড়া মোটরসাইকেলটির তেল খরচ অনেক কম। আমি মনে করি এই মোটরসাইকেলটি কিনলে আপনারাই জিতবেন। সবাইকে ধন্যবাদ।