হোন্ডা সিবি শাইন ১২৫সিসি মোটরসাইকেল রিভিউ - মিজানুর রহমান

আমাদের দেশে মোটরসাইকেল খুব জনপ্রিয় একটি বাহন। এর মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যে দ্রুত যাতায়াত করা যায়। আমার নাম মোঃ মিজানুর রহমান। আমি একজন চাকুরীজীবী। চাকুরীর কাজে আমাকে প্রতিদিন অনেক যাতায়াত করতে হয়। সেজন্য আমার মোটরসাইকেলের খুব প্রয়োজন ছিল। তাই ভাবলাম আমি একটি মোটরসাইকেল কিনবো। শোরুমে গিয়ে আমি হোন্ডা সাইন ১২৫ সিসির মোটরসাইকেলটি কিনার সিদ্ধান্ত নিই। এটি দেখতে অন্দক সুন্দর। তবে আমার আগে থেকে কোন মোটরসাইকেল পছন্দ করা ছিল না। আমি নিজে শোরুমে গিয়ে পছন্দ করে এই মোটরসাইকেলটি কিনেছি। হোন্ডা সাইন মোটরসাইকেলটি আমার জীবনের প্রথম বাইক। এই মোটরসাইকেলটি আমি ১০ মাস যাবত ব্যবহার করছি কোন প্রকারের দূর্ঘটনা ছাড়াই। আমি এই ১০ মাসে মোটরসাইকেলটি প্রায় ৭০০০ কিমি পথ চালিয়েছি। এটি কিনার পরে থেকে আমি কোন যাতায়াত করলেই এই মোটরসাইকেলটি নিয়েই করি। দ্রুত যাতায়াত করে এই মোটরসাইকেলটি থেকে আমি অনেক আরাম অনুভব করি। এখন আমি যে কোন যাতায়াতের ক্ষেত্রে এই মোটরসাইকেলটিকেই আগে প্রাধান্য দেই। আজকে আমি সবার উদ্দেশ্যে আমার এই মোটরসাইকেল নিয়ে কিছু মতামত তুলে ধরার জন্য হাজির হয়েছি। আমার লিখার মাঝে ভূল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

প্রথমেই আমি কথা বলতে চাই মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন প্রসঙ্গ নিয়ে। কেননা ইঞ্জিন হল একটি মোটরসাইকেলের মূল অংশ। এই মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স খুবই ভাল। এর ইঞ্জিনটা খুবই শক্তিশালী। কোন বাধা একে থামিয়ে রাখতে পারে না। বেশিক্ষণ চললেও এর ইঞ্জিন খুব বেশি গরম হয় না। ইঞ্জিনের ভেতরে কোন ধরনের খারাপ শব্দ করে না। ইঞ্জিনের শব্দটা অনেক সুন্দর। আমি সব মিলিয়ে ইঞ্জিন পারফরমেন্স ও ইঞ্জিন থেকে বেশ ভাল মাইলেজও পাই।

এবার মোটরসাইকেলটির ডিজাইন নিয়ে কিছু কথা বলবো। আমি শোরুমে যাবার পরে মোটরসাইকেলটির ডিজাইন পছন্দ করেছি। এই ডিজাইনটি আমার কাছে খুবই ভাল লেগেছে। মোটরসাইকেলটির বিভিন্ন দিকের ডিজাইন এবং গ্রাফিক্স সব কিছু ভালো লাগার মতই। এর বিল্ড কোয়ালিটি আমার কাছে মজবুত মনে হয়েছে। ডিজাইনের পাশাপাশি আমি আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করেছি যে, এই মোটরসাইকেল এর বডির প্লাস্টিক গুলো অনেক মজবুত এবং এর পার্টসগুলো বেশ উন্নত মানের।

এবার মোটরসাইকেলটির কন্ট্রোল নিয়ে কিছু কথা বলবো। এই মোটরসাইকেলটি চালিয়ে আমার কাছে অনেক আরামদায়ক মনে হয়েছে। মোটরসাইকেলটির সিটিং পজিশন বেশ ভাল মনে হয়েছে। সিটটা বেশ বড়। সিটে বসে আমি খুব সহজেই আরামের সাথে মোটরসাইকেল চালাতে পারি। এছাড়া মোটরসাইকেলটির হ্যান্ডেলবার ধরে দীর্ঘক্ষণ চালিয়েও খুব আরাম অনুভব করি। আমি ৭৫ গতির বেশি কখনোই তুলি নাই। বেশি স্পীডে মোটরসাইকেল চালানো আমার পছন্দ করি না। কেননা সময় বাঁচাতে গিয়ে যে কোন সময় একটা দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। অর্থাৎ সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশী। আমি এক দিনে প্রায় ১০০ কিমি পথ চালিয়েছি। এই মোটরসাইকেলটির সাসপেনশন গুলো আমার কাছে অনেক উন্নত মানের মনে হয়েছে। এগুলো বেশ আরামদায়ক। কাচা বা খারাপ যে কোন রাস্তায় একা যাতায়াত করলেও তেমন ঝাঁকুনি লাগে না। মোটরসাইকেলটির লুকিং গ্লাস থেকে পিছনের দৃশ্য খুব ভাল ও স্পষ্ট দেখতে পাই। এই মোটরসাইকেলের ব্রেকিং সিস্টেমটা খুবই ভাল লেগেছে। আমি খুব সহজেই মোটরসাইকেলটি কন্ট্রোল করতে পারি। এর সামনের চাকায় ডিস্ক ব্রেক থাকায় ভাল কন্ট্রোল করা যায়। এর সুইচগুলো দেখতে অনেক সুন্দর এবং এগুলো ব্যবহার করতে আমার কোন রকমের কষ্ট হয় না। রাতে হেডলাইট থেকেও আমি প্রচুর পরিমানে আলো পাই। এগুলো আমার কাছে অনেক ভাল লাগেছে। এর ব্যাটারি কোয়ালিটি বেশ মজবুত। মোটরসাইকেলটির সেল্ফ খুব ভাল কাজ করে। এখনো কোন সমস্যা দেখা দেয় নাই।

ভাল মাইলেজ পাবার আশা করেই এই মোটরসাইকেলটি কিনেছি। প্রথমের দিকে তেল খরচ ১ লিটারে প্রায় ৪৫ কিমি পাচ্ছিলাম। তবে এখন ১ লিটারে প্রায় ৫৩ কিমি মাইলেজ পাই। এই মাইলেজ পেয়ে আমি সন্তুষ্ট আছি। এই মোটরসাইকেলটির দামটা অনেক কম। ১২৫ সিসির মধ্যে অন্য কোন কোম্পানির মোটরসাইকেল কিনলে অনেক বেশি টাকা লাগত। তাই দাম নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই।

আমি এযাবত মাত্র এক বার সার্ভিসিং সেন্টারে সার্ভিসিং করিয়ে নিতে গিয়েছিলাম। শুধু মাত্র নাট বল্টু টাইট করা, সব কিছু চেক করার জন্য গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে তাদের ব্যবহার দেখে আমার ভাল লেগেছে। তাদের কাজের মান বেশ ভাল। সেখানকার পরিবেশ অনেক ভাল।

নতুন ক্রেতাদের জন্য আমার পরামর্শ এই যে, কেউ যদি ১২৫ সিসি মোটরসাইকেল কিনতে চান তাহলে হোন্ডা সাইন ১২৫ সিসির এই মোটরসাইকেলটি নিশ্চিন্তে কিনতে পারে। কারণ মোটরসাইকেলটির ইঞ্জিন পারফরমেন্স খুবই ভাল। পরিশেষে সকলের যাত্রা শুভ হোক এই কামনায় বিদায় নিচ্ছি, সবাই ভাল থাকবেন, ধন্যবাদ।

All HONDA bike price in bd

Honda CB Shine