বেশিরভাগ সময় হোন্ডা এগিয়ে আসে যখন তাদের পণ্যের চাহিদা শীর্ষে থাকে। হোন্ডা Xblade এর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। হোন্ডা Xblade বাজারে থাকা অন্যতম একটি ১৬০সিসি বাইক এবং এই বাইকটির অউটলুক ন্যাকেড স্পোর্টস ক্যাটাগরির এবং কিছু বিশেষ কারণে হোন্ডার অন্যান্য বাইকের থেকে এই বাইকটি বাজারে বিরাট প্রভাব ফেলেছে ইতিমধ্যে। সেই কারণে হোন্ডা আরও কিছু ফিচারস যোগ করে নতুন ভার্শন হোন্ডা এক্সব্লেড এবিএস নিয়ে এসেছে সম্প্রতি।হোন্ডা Xblade 160 এবিএস একটি ন্যাকেড স্পোর্টস কমিউটার। বাংলাদেশের স্পোর্টস কমিউটার সেগমেন্ট অন্যতম জনপ্রিয় বাইক সেগমেন্ট। দেশের তরুণরা এমন একটি বাইকের সন্ধান করে যা দ্রুত গতিতে চলতে পারে এবং সেই সাথে ভাল মাইলেজ দিতে পারে।
এই নতুন ভার্শন Xblade ABS শুধুমাত্র এবিএস ব্রেকিং নিয়ে এসেছে তা কিন্তু নয়, সাথে থাকছে আরো কিছু পরিবর্তন। আমাদের মত দেশ যেখানে আমরা সিসি সীমাবদ্ধতা সাথে নিয়ে চলাচল করি সেখানে, Xblade এর মতন বাইক আমাদের চাহিদা পূরন করে থাকে। হোন্ডা এক্স ব্লেড এবিএস হল ১৬০ সিসি প্ল্যাটফর্মের উপর ভিত্তি করে কম্প্যাক্ট একটি পণ্য যা এখন আরো উন্নত। তাহলে চলুন আমরা এই নতুন Xblade ABS এর নতুন ফিচারগুলি দেখে ফেলি।
Honda XBlade 160 ABS এর আকর্ষণীয় ফিচারস-রোবো ফেস এলিডি হেডল্যাম্প
- ফ্রেশ নিউ গ্রাফিক্স
-স্ট্রিট টেক ডিজিটাল মিটার
-ডুয়াল আউটলেট মাফলার
-রেজরএজ এলইডি টেল ল্যাম্প
-এগ্রেসিভ ও মাস্কুলার ফুয়েল ট্যংকার
-হাগার ফেন্ডারের সাথে মোটা টায়ার
-শক্তিশালী ১৬০ সিসি ইঞ্জিন
-আরামদায়ক টুইস্ট গ্রাবরেল
-হ্যাজারড সুইচ
-লো মেইন্টেনেন্স সিল চেইন
- সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস ব্রেকিং এবং ডুয়াল ডিস্ক
ডিজাইন এবং লুকঃ এই বাইকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি আকর্ষণীয় অংশ হল ডিজাইন এবং Honda Xblade 160 থেকে নতুন এই এবিএস ভার্শনে ডিজাইনটি কিছুটা ব্যতিক্রমী। এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে এটা ১৬০ সিসির একটি আকর্ষণীয় বাইক। এক্স ব্লেড বাইকটির লুক আরও আকর্ষণীয় করেছে এর রোবো ফেস এলিডি হেড ল্যাম্প এবং রেজরএডজ এলিডি টি শেপ টেল ল্যাম্প । সার্বিক দিক দিয়ে ডিজাইনটা ব্যাতিক্রম, মাস্কুলার এবং এগ্রেসিভ শেপ ফুয়েল ট্যংকার এবং বডি কিটস সব কিছু অনেক যত্নসহকারে এখানে স্থাপন করা হয়েছে। সিটিং পজিশন স্প্লিট না কিন্তু পেছনের দিকে একটু উচু, টুইস্টেড গ্রাবরেল যেটা বোঝায় যে হোন্ডা সুনিপুণ ভাবে ডিজাইনের বিশেষ ছোঁয়া দিয়েছে, ডুয়াল আউটলেট মাফলার স্পোর্টস লুক এনে দিয়েছে এবং নতুন সংযুক্ত বিষয়গুলো ডিজাইনে অতিরিক্ত একটা প্রভাব ফেলেছে। শুধু তাই নয় পাঁচ স্টেপের এলয় এবং সুন্দর ডিজাইনের ডিস্ক প্লেট, দারুণ কালার কম্বিনেশন বাইকটাকে আরও বেশি ফুটিয়ে ও চোখ ধাঁধানো করে তুলেছে। কোনও ইঞ্জিন গার্ড সংযুক্ত নেই, সামগ্রিকভাবে, সর্বশেষ ABS সংস্করণের জন্য নতুন যোগ করা গ্রাফিক্স এই বাইকটিকে আরো আকর্ষোনীয় এবং চটপটে করে তোলে।
ডাইমেনশন এবং চেসিসঃ
কিছুটা ব্যাতিক্রমধর্মী Honda XBlade 160 ABS এই মোটরসাইকেলটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ডাইমন্ড টাইপ চেসিস এবং ডাইমেনশনের কথা বলতে গেলে আমরা দেখতে পাই যে হোন্ডা এক্স ব্লেডের ডাইমেনশনে রয়েছে লম্বায় ২০১৩ মিমি চওড়ায় ৭৮৬ মিমি এবং উচ্চতায় ১১১৫ মিমি। বাইকটির গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৬০ মিমি এবং হুইলবেজ ১৩৪৭ মিমি। মাস্কুলার ফুয়েল ট্যংকারের তেল ধারণ ক্ষমতা হচ্ছে ১২ লিটার এবং এসব কিছু মিলিয়ে বাইকটির ওজন ১৪০ কেজি।
ইঞ্জিন এবং ট্রান্সমিশনঃ
হোন্ডা ইউনিকর্ন এর একই ইঞ্জিন হোন্ডা এক্স ব্লেডে ব্যবহার করা হয়েছে। হোন্ডা এক্স ব্লেড এর থেকে Honda XBlade 160 ABS বাইকটি আরো পাওয়ার দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ১৬২.৭১ সিসি এইচইটি সিংগেল সিলিন্ডার, এয়ার কুল্ড ইঞ্জিন যেটা ম্যাক্স পাওয়ার ১৪.১২ বিএইচপি @ ৮৫০০ আরপিএম এবং ম্যাক্স টর্ক ১৩.৯ এনএম @৬০০০ আরপিএম উৎপন্ন করতে পারে। ইঞ্জিনকে স্মুথলি ট্রান্সমিট করারা জন্য এখানে আছে ৫ স্পীড ম্যনুয়াল গিয়ার বক্স এবং হোন্ডা বলে যে এই ইঞ্জিনটা ডিজাইন করা হয়েছে মূলত কম ও মধ্যম পরিসীমা পারফরমেন্স সরবরাহ করার জন্য। এইচইটি প্রযুক্তির জন্য এই বাইকটি ইঞ্জিন পারফরমেন্স সঠিক রেখে ভালো মাইলেজ সরবরাহ করবে। ইঞ্জিনের কম্প্রেসান রেশিও ১০:১ এবং বোর ৫৭.৩ মিমি এবং ৬৩-০৯৩ স্ট্রোক। ভিস্কাস পেপার এয়ার ফিল্টার এই বাইকের সাথে রয়েছে এবং ইঞ্জিন চালু করার জন্য রয়েছে ইলেকট্রিক এবং কিক স্টার্ট অপশন।
সাসপেনশন ও ব্রেকিং
সাসপেনশনের দিক থেকে Honda XBlade 160 ABS এই বাইকটিতে এর আগের মডেলের মতই ফিচারস রয়েছে। সামনের দিকে টেলিস্কোপিক এবং পেছনের দিকে মনোশন সাসপেশন ব্যবহার করা হয়েছে । যা চলার পথকে আরও উপভোগ্য করে তুলবে।
ভালো কন্ট্রোলিং ও সেফটির জন্য নতুন এই মডেলের সাথে এবিএস আশা করা হয়েছিল এবং হোন্ডা তাতে নিরাশ করেনি। Honda XBlade 160 ABS এ ব্যবহার করা হয়েছে ডাবল ডিস্ক ব্রেক এবং রাখা হয়েছে সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস। সামনের চাকায় ২৭৬ মিমি এর ডায়ামিটার ডিস্ক প্লেট এবং পেছনের চাকায় ২২০ মিমি ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে।
টায়ার এবং হুইল
Honda XBlade 160 ABS এর দুই দিকেই ৫ স্টেপ এলয় হুইল টিউবলেস টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে এবং আরও ভালো গ্রিপিং এবং করনারিং এবং জন্য পেছনের দিকে বেশ চওড়া টায়ার লক্ষ্য করা যায়। সামনের দিকে ৮০/১০০-১৭ এবং পেছনের দিকে ১৩০/৭০ -১৭ টিউবলেস টায়ার রয়েছে । তাই বলা যায় যে হ্যান্ডেলিং কিংবা করনারিং করতে রাইডারকে খুব বেশি ঝামেলা পোহাতে হবে না।
মিটার কনসোল এবং ইলেকট্রিক্যাল
Honda XBlade 160 ABS এ আগের ভার্শনের মতন ফুল ডিজিটাল মিটার কনসোল লক্ষ্য করা যায় এবং সেটাকে বলে স্ট্রিট টেক ডিজিটাল মিটার যা যে কেউ একবার দেখলে পছন্দ করবেই এবং সেগুলো ভালোভাবে পড়া যায়। আরপিএম ইন্ডিকেটর, গিয়ার ইন্ডিকেটর এবং স্পিডোমিটার, ঘড়ি, দুইটা ট্রিপ এবং একটি ওডোমিটার ও ফুয়েল গেজ ইন্ডিকেটর লক্ষ্য করা যায়।
ইলেকট্রিক্যাল দিকের মধ্যে আমরা প্রথমেই উল্লেখ করেছি যে Honda XBlade 160 ABS এ প্রথমবারের মত রবো ফেস এলইডি হেডল্যাম্প ব্যবহার করা হয়েছে এবং সাথে পেছনের দিকে রয়েছে টি শেপের এলিডি রেজর এডজ টেল ল্যাম্প। অন্যদিকে আরেকটি নতুন ফিচারস রয়েছে সেটা হল হ্যাজারড ল্যাম্প যা রাইডার জরুরী কোন মুহূর্তে দুইটা ইন্ডিকেটর একত্রে ব্যবহার করতে পারবেন। আর এসকল ইলেকট্রিক্যাল দিক পরিচলনা করার জন্য ১২ ভোল্টের ব্যাটারী হোন্ডা এক্স ব্লেডে ব্যবহার করা হয়েছে।
পরিশেষেঃ
প্রকৃতপক্ষে এই নতুন ABS ভার্শনটির বিশেষত্ব হচ্ছে নতুন কালার গ্রাফিক্স এবং বেস ভেরিয়েন্ট হিসাবে ডুয়াল ডিস্ক রয়েছে এবং সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস। এটা এখন স্পষ্ট যে হোন্ডা সবসময় তাদের গ্রাহকদের প্রয়োজন দেখে তা পুরনের চেষ্টা করে। রাইডারদের জন্য Honda XBlade 160 ABS ৩ টি নতুন কালার ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাবে ।