আমি তরিকুল ইসলাম বর্তমানে ব্যবহার করছি সুন্দর, স্টাইলিশ একটি ক্রুজার বাইক যার নাম কিওয়ে কে লাইট ১৫০। এই বাইকটা নিয়ে আমি এখন পর্যন্ত রাইড করেছি প্রায় ৭০০০ কিমি। এই ৭০০০ কিমি এর রাইডিং অভিজ্ঞতাগুলো আজ মোটরসাইকেল ভ্যালীর মাধ্যমে আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। আমার সো ফার বাইকের এক্সপেরিয়েন্স আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
এক্সেলেরেশন খুবই ভালো, ৯৮ পর্যন্ত খুব স্মুথলি স্পিড ক্লাইম্ব করে। তারপরে রাস্তার উপরে ডিপেন্ড করে আস্তে আস্তে স্পিড ওঠে।
স্পিডের ক্ষেত্রে আমার আসলে হাইস্পিডের পিনিক নাই, কোনোকালে ছিলোও না। তাই টপ স্পিড টা চেক করা হয়নাই। কিন্তু চিটাগাং-ঢাকা আসার সময় ফাঁকা রাস্তায় একটা টান দিসিলাম, ১০৮ পর্যন্ত উঠেছিলো তখন।
ব্রেকিং অসম্ভব ভালো এই বাইকের। আমার বাইক চালানোর কনফিডেন্সই বেড়ে গেসে এই বাইকের ব্রেকের সার্ভিস পেয়ে। বেশ কয়েকটা নির্ঘাৎ এক্সিডেন্ট থেকে বেঁচে গেছি এই বাইকের এক্সিলেন্ট কোয়ালিটি ব্রেকের জন্য।
বাইকের ব্যালেন্সও আমার কাছে দারুণ লেগেছে। বেশ ভারী আর সেন্টার অফ গ্র্যাভিটি অনেক লো হওয়ায় বাইক সহজে কাত হয়না।
কমফোর্ট এর কথা ভাবতে হলে ক্রুজার বাইক হিসেবে বাইক টা ১০০% কম্ফোর্টেবল না। স্পেশালি সীট নিয়ে অনেকেই কমপ্লেইন করেছেন। সীট টা দেখতে সুন্দর হলেও আসলে ততোটা কম্ফোর্টেবল না। লং রাইডে বেশ ব্যাথা হয় শরীরে।
মাইলেজ এর কথা বলতে গেলে আমি একটু মনঃক্ষুণ্ণই হয়েছি। প্রথম ২০০০ কিলো পর্যন্ত ২৫-৩০ নিয়েই আমি সন্তষ্ট ছিলাম এই আশায় যে এরপরে হয়তো বাড়বে। বাট হাইওয়ে তেও ইভেন আমি এখনো ৩০ পাচ্ছি।
শুরুতে বাইকের বেশ কয়েকটা ইস্যু ছিলো আমার। স্পিড ওঠানোর পরে ক্লাচ ধরলে বাইকের স্টার্ট বন্ধ হয়ে যেতো(ফুয়েল ট্যাংকের ঢাকনা খুলে কিছুক্ষণ রাখার পরে আবার স্টার্ট নিতো), গিয়ার শিফটিং এর সময় চেইনে একটা ভয়ংকর বাড়ি দিতো (ফ্রি প্লে প্রত্যেক ৩০০ কিলো পরপর এডজাস্ট করার পরেও), বাইকের গিয়ার মাঝেমাঝে চলন্ত অবস্থায় শিফটিং এর সময় নিউট্রালে ফেঁসে যেতো, তখন আবার সেকেন্ড গিয়ারে ওঠানো যেতো না ইত্যাদি বিভিন্ন ইস্যু ছিলো। অথোরাইজড সার্ভিস সেন্টারে বারবার সমস্যা গুলা উল্লেখ করার পরেও আমাকে মেকানিক রা বারবার বুঝ দিচ্ছিলো এই বলে যে "এগুলা এই বাইকের ক্যারেক্টার, এগুলা চালাইতে চালাইতে ঠিক হবে"। অথচ আমি বাইরে দুইটা সার্ভিসিং করিয়ে সমস্যা গুলার অনেকাংশই সমাধান করাতে পেরেছি।
সব কথার শেষ কথা হোলো, K light বাইক টা look এর জন্য কিনেছি, ক্রুজার বাইকের শখ ছিলো দেখে কিনেছি। আমি খুবই খুশী বাইক টা নিয়ে। লোকজন অনেক ইন্টারেস্ট দেখায় রাস্তাঘাটে। খুবই ভালো লাগে ব্যাপার টা। আপনাদের যদি এই বাইকটা কেনার উদ্দেশ্য থাকে তাহলে অবশ্যই নিতে পারেন। আমার কাছে খুব ভালো লাগার একটি বাইক হচ্ছে কিওয়ে কে লাইট ১৫০।