আমাদের জীবন যাত্রায় সব কিছুতেই কম বেশি সব ক্ষেত্রেই আধুনিকতা লক্ষ্য করা যায় এবং যেখানে আকর্ষণীয়তার ছোঁয়া রয়েছে সেখানে আধুনিকতা বেশি প্রভাব বিস্তার করে। মোটরসাইকেল জগতেও এই বিষয় প্রযোজ্য। প্রস্তুতকারক কোম্পানীগুলো তাদের সরবরাহকৃত বাইকগুলোর সাথে ভালো ফিচারস এবং ডিজাইন সংযুক্ত করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রস্তুতকারক এই সকল কোম্পানীগুলোর মধ্যে যদি কোন কোম্পানীর নাম উল্লেখ করতে হয় তবে কিওয়ে কোম্পানীর নাম অবশ্যই উল্লেখযোগ্য। তারা তাদের স্টাইলিশ বাইকগুলোর জন্য বেশ খ্যাতিমান। বর্তমানে তারা বাংলাদেশের বাজারে সুদর্শন কিছু বাইক সরবরাহ করছে এবং বেশ ভালো অবস্থান দিন দিন অর্জন করে চলেছে। সম্প্রতি তারা নতুন ক্রুজার ক্যাটাগরির একটি বাইক বাজারে নিয়ে এসেছে এবং সেই বাইকটি হচ্ছে কিওয়ে কে লাইট ১৫০ । ১৫০ সিসি ক্যাটাগরির মধ্যে ক্রুজার সোল গঠন ধারণ করেছে এবং হট রোড লুকস চলার পথে স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিবে। তাই চলুন আর সময় নষ্ট না করে দেখে নেওয়া যাক এই বাইকে কী কী ফিচারস সংযুক্ত করা হয়েছে।
রেট্রো মডার্ন মিটার কনসোল
এই বাইকের রয়েছে সম্পূর্ণ নতুনভাবে ডিজাইন করা গোলাকার ডিজিটাল মিটার। এই ডিজিটাল ডিসপ্লেতে রাইডারের প্রয়োজনীয় সকল ফিচারস রয়েছে।
স্টপিং পাওয়ার
শক্তিশালী ডিস্ক ব্রেক( ২৮০ মিমি সামনে এবং ২৪০ মিমি পেছনে) স্থাপন করা হয়েছে। এই ব্রেকিংগুলো রাইডারকে তার গতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আনতে সাহায্য করবে।
টিয়ারড্রপ ফুয়েল ট্যাংক
এই স্টাইলিশ ফুয়েল ট্যংকার ব্যবহার করা হয়েছে বিখ্যাত ক্রুজার ক্যাটাগরির বাইক হারলি ডেভিডসন বাইকের আদলে যা দেখতে ক্লাসিক্যাল লুক দিবে এবং ১১.৮ লিটার টেল ধারণ করতে সক্ষম ।
আধুনিক ক্লাসিক্যাল সাসপেনশন
পেছনের দিকে কয়েল স্প্রিং ওয়েল ডাম্পড সাসপেনশন ক্যাসিক্যাল একটি লুকস দিয়েছে এবং এটি খুব আরামপ্রদ রাইড অফার করতে সক্ষম এবং স্মুথ ও বটে। সামনের দিকে ঝাঁকুনি কমানোর জন্য রয়েছে টেলিস্কোপিক ফরক সাসপেনশন।
কিওয়ে কে লাইটের আরও কিছু ফিচারস
ডিজাইন ও লুকস
এটা অবশ্যই প্রশংসনীয় বিষয় যে কিওয়ে সর্বদা তাদের বাইকগুলোর ডিজাইন ও লুকস নিয়ে সচেতন। কে লাইটের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই। কিওয়ের তরফ থেকে এখানে থাকছে ইউনিক ডিজাইন। সামনের দিকে দেওয়া হয়েছে সুন্দর গোলাকার হেডল্যাম্প এবং একই ডিজাইনের মিটার প্যানেল। ফুয়েল ট্যাংকারের গঠন রয়েছে স্টাইলিশ টিয়ার ড্রপ প্রযুক্তি এবং পেছনের দিকে ইউনিক ডিজাইনের টেল ল্যাম্প সংযুক্ত আছে টায়ার হুগারের সাথে । সাইড ইনডিকেটরের গঠন টেল ল্যাম্পের মত কিন্তু সেগুলো আকারে একটু ছোট। বাইকটির ৩টি ভিন্ন রং সরবরাহ করা হচ্ছে এবং সব রঙের ডুয়েল টোন কালার লক্ষ্য করা যায়। স্টাইলিশ এক্সজস্ট পাইপ ক্রোম কভার। আকর্ষণীয় এলয় হুইল, ফ্যাশানেবল ডিস্ক প্লেট এবং সিটিং পজিশন সুন্দর ক্লাসিক্যাল লুক এনে দিয়েছে।
চেসিস এবং ডাইমেনশন
কে লাইটের বডির গঠনটা স্থাপন করা হয়েছে বেসিনেট টাইপ বডি চেসিস এর উপর। এই বাইকটি লম্বায় ২১৪০ মিমি, উচ্চতায় ১০৫০ মিমি, চওড়ায় ৮০০ মিমি, গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৫০ মিমি এবং হুইলবেজ ১৪৪০ মিমি । রাইডারের জন্য সিট উচ্চতা রয়েছে ৭১৫ মিমি এবং সকল বিষয় সংযুক্ত করে বাইকের ওজন ১৫৬ কেজি।
ইঞ্জিন টাইপ
১৪৯.৪ সিসির সিংগেল সিলিন্ডার। ৪ স্ট্রোক, ২ ভালভ ইঞ্জিন এখানে ব্যবহৃত হয়েছে । এই সুবিশাল ইঞ্জিন ম্যাক্স পাওয়ার ৮.৫ কিলোওয়াট@ ৮৫০০ আরপিএম এবং ম্যাক্স টর্ক ১০এনএম @ ৭৫০০ আরপিএম টর্ক উৎপন্ন করতে সক্ষম। ইঞ্জিনটা কারবুরেটের সিস্টেম এবং ওয়েট মাল্টি প্লেট ক্লাচ। কম্প্রেশান রেশিং রয়েছে ৯:২:১ এবং সাথে সিডিআই ইগনিশন সিস্টেম। ইঞ্জিনকে রাস্তায় চলার জন্য সহায়তা করতে ৫ স্পীড ম্যানুয়াল গিয়ার বক্স এবং ইঞ্জিন চালু করার জন্য রয়েছে ইলেকট্রিক ও কিক স্টার্ট অপশন।
হুইল এবং টায়ার
উভয় দিকেই এলয় রিম রয়েছে এবং রিমের পরিমাপ হচ্ছে ১.৮৫X১৭ এবং পেছনের রিমের সাইজ ৩.০০X১৫ । এদিকে সামনের দিকে ব্যবহার করা হয়েছে ৯০/৯০ সাইজের টায়ার এবং পেছনের দিকে ব্যবহার করা হয়েছে ১৩০/৯০ সাইজের বেশ মোটা টায়ার এবং এই টায়ারগুলো টিউবলেস।
ইলেকট্রিক্যাল
১২ ভোল্ট ৬ এম্পায়ার মেইন্টেনেন্স ফ্রি ব্যাটারি এখানে স্থাপন করা হয়েছে সকল ইলেকট্রিক্যাল বিষয় পরিচালনা করার জন্য।
শেষকথা
যখন কোন বাইক প্রেমি মানুষ স্টাইলিশ ডিজাইনের স্কুজার বাইক ব্যবহার করার ইচ্ছা পোষণ করেন সেক্ষত্রে এই বাইকটি সেই চাহিদা অনেকটাই পূরণ করে বেশ ভালো অনুভূতি সরবরাহ করতে সক্ষম হবে। তিনটি ভিন্ন রং এই বাইকের সাথে পাওয়া যাবে সেগুলো হচ্ছে গ্লোসি রেড, গ্রে এবং ব্লাক। এই তিনটি রং কালো সেডের সাথে সংযুক্ত। সমস্ত ফিচারস নিয়ে আলোচনা করার পর বলা যায় যে ১৫০ সিসি সেগমেন্টের মধ্যে এই বাইকটি বেশ ভালো প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হবে।