মোটরসাইকেল প্রায় সব মানুষেরই নিত্য দিনের সঙ্গী। কেউ যদি কোথাও বেড়াতে যান তাহলে সবার প্রথমে যে নামটি আসবে সেটা হল মোটরসাইকেল কারণ মোটরসাইকেল নিয়ে খুব সহজেই এবং ঝামেলাবিহীন ভাবে ঘুরে বেড়ানো যায়। অন্যদিকে কেউ কেউ অফিসের কাজের ছুটাছুটি করার জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার করে থাকে। আমি মোটরসাইকেল ব্যবহার করি অফিসের কাজে এবং ছুটির দিনে একটু ঘুরাঘুরি করার জন্য।
আমি আবুল কালাম আজাদ পেশায় একজন চাকুরীজীবী। আমি অফিসের কাজ এবং পারিবারিক যাতায়াত সুবিধা উন্নত করার জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার করে থাকি। বর্তমানে আমি ব্যবহার করছি কিওয়ে ম্যাগনেট ১০০ সিসির বাইকটি। আমি এর আগে অনেক বাইক ব্যবহার করেছি কিন্তু আমি নিজের বাইক বলতে এটাই প্রথম বাইক। বাইকটি আমি প্রায় ৪ মাস ধরে ব্যবহার করছি এবং এই ৪ মাসে আমি প্রায় ৩৫০০ কিমি পথ পারি দিয়ে ফেলেছি। আজ আমি আপনাদের সাথে এই ৩৫০০ কিমি রাইডিং অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নেবো।
ডিজাইন আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে এবং ১০০ সিসির বাইক হিসেবে যথেষ্ট ভালো ডিজাইন রয়েছে বলে আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি। অন্যদিকে বাইকটি আমার কাছে অনেক মজবুত মনে হয়েছে।
বাইকটির ইঞ্জিন পারফরমেন্স আমার কাছে ভালো লেগেছে। তবে ইঞ্জিন থেকে একটা খারাপ শব্দ বেরিয়ে আসে এবং অনেকক্ষণ রাইড করলে এর পিকআপ টা ফলস দেয় যার ফলে আমাকে ইঞ্জিনের স্টার্ট বন্ধ করে পুনরায় আবার স্টার্ট দিতে হয়। আমার কাছে ইঞ্জিনের পারফরমেন্স ভালো লাগলেও অন্যান্য বিষয়গুলো খারাপ মনে হয়েছে।
বাইকটি চালিয়ে আমি আরাম অনুভব করেছি। অনেক ভালো এর সিটিং পজিশন এবং হ্যান্ডেলবারটাও সিটিং পজিশনের সাথে বেশ মানানসই। বাইকের সুইচগুলো আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে এবং সুইচগুলো ব্যবহারে আমি এ পর্যন্ত কোনো ঝামেলা অনুভব করিনি। রাতে চালাতে দিয়ে আমি এর হেডল্যাম্পের অনেক কম আলো পেয়েছি। আমি মনে করি হেডল্যাম্পটা আরও শক্তিশালী দেওয়া উচিত।
কন্ট্রোল অনেক ভালো। আমি এই পর্যন্ত টপ স্পীড তুলেছি ৮০ কিমি প্রতি ঘন্টায় এবং আমার কাছে কোনো ভাইব্রেশন মনে হয়নি। ব্রেকিংটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে অনেক সুন্দর এবং খুব ভালো ভাবে ব্রেকিং করা যায়। তবে সাসপেনশনের পারফরমেন্স আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। প্রায় সব রাস্তায়তেই আমি বেশ ঝাঁকুনি অনুভব করি । বাইকটিতে কড়া ব্রেক করলে পেছনের টায়ারটা খুব স্লিপ করে ।
ভালো দিক
- ডিজাইন ভালো
- কন্ট্রোল দারুন
- সিটিং পজিশন অনেক আরাম
- ভালো মাইলেজ
খারাপ দিক বলতে গেলে
- বিয়ারিং ভেংগে গেছে
- হেডল্যাম্পের আলো কম
- চাকা স্লিপ খায়
- গিয়ার সমস্যা তেলের লাইন ঠিক মতো কাজ করে না
- পিক আপ ফলস দেয়
তেল খরচটা আমি সেভাবে পরিমাপ করিনি তবে আমার কাছে মনে হয়েছে যে আমার বাইকটা লিটারে প্রায় ৬০ কিমি এর মতো মাইলেজ দেয়। ১০০ সিসির বাইক হিসেবে অনেক ভালো মাইলেজ আমি বলবো।
সার্ভিসিং সেন্টারের মান আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে তাদের আচরণ,ঠিক করার মান সব কিছু অনেক প্রশংসনীয় কিন্তু একটা বিষয় আমার কাছে খারাপ লেগেছে সেটা হল তাদের পার্টস গুলো খুব কম পাওয়া যায়। আমি স্পীডোজের কাছে অনুরোধ রাখবো যে তারা যেনো তাদের পার্টস গুলো সহজলভ্য করে এবং গ্রাহকদের যেনো পার্টস নিয়ে এদিক সেদিক খুজাখুজি করতে না হয়।
বাইকটির কোয়ালিটি এবং অন্যান্য সব কিছু মিলিয়ে দামটা একদন ঠিক মনে হয়েছে। যদি কেউ এই বাইকটি কিনতে চান তাহলে আমি বলবো যে অবশ্যই কিনতে পারেন।