বিগত বছরগুলোতে জাপানিজ এবং ইন্ডিয়ান ব্রান্ডের পাশাপাশি পৃথিবীর অন্যান্য অনেক দেশের জনপ্রিয় মোটরসাইকেলও বাংলাদেশে আমদানী হচ্ছে। কীওয়ে তাদের মধ্যে অন্যতম। যারা ইতমধ্যেই ডিজাইন এবং পারফরমেন্স দিয়ে বাংলাদেশের মোটরসাইকেল মার্কেটে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরী করে নিয়েছে। যদিও বাংলাদেশের জনসাধারনের মাঝে চাইনিজ পন্যের মান নিয়ে সংশয় রয়েছে। আর তাই ডিজাইন এবং পারফরমেন্স এর পাশাপাশি স্থায়ীত্বের বিষয়টি পরীক্ষার উদ্দেশ্যেই একটি (৯০০০কিমি) ব্যবহৃত কীওয়ে মোটরসাইকেল দিয়ে টীম মোটরসাইকেলভ্যালী টেস্ট ড্রাইভ সম্পন্ন করে। পাশাপাশি বাইকটি নিয়ে কিছু জায়গায় টেস্ট রাইড ইভেন্টের আয়োজন করে যেখানে বিভিন্ন বাইকারগন এই বাইকটি কিছুক্ষন চালিয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। উদ্দেশ্য ছিলো একটি ব্যবহৃত কীওয়ে আরকেএস ১০০সিসি মোটরসাইকেল তাদের কেমন লাগে। যারা টেস্ট রাইড দিয়েছেন তারা প্রত্যেকেই ব্যক্তিগতভাবেও মোটরসাইকেল ব্যবহার করে থাকেন, ফলে তাদের কাছে খুব সহজেই বাইকটির পারফরমেন্সের ভালো-মন্দ ধরা পড়েছে।
মো: তসলিম উদ্দীন। উচ্চতা ৫’ ৪”, ওজন ৬০কেজি। পেশা এনজিও কর্মী। বিগত ৮বছর ধরে তিনি হোন্ডা সিজি১২৫(জাপান) মোটরসাইকেল ব্যবহার করছেন। কীওয়ে আরকেএস ১০০ মোটরসাইকেলটি টেস্ট রাইড দিয়ে তিনি মতমতে বলেন বাইকটির ডিজাইন তার খুবই ভালো লেগেছে, বাহ্যিক লুক দেখে ১০০সিসি থেকে বেশি মনে হয়। ব্যবহৃত মোটরসাইকেল হিসেবে এখনও রঙ এর অবস্থা যথেষ্ট সুন্দর বলেই তিনি মনে করেছেন। চালিয়ে বাইকের পারফরমেন্সে তিনি বেশ সন্তুষ্ট যেমন আরামদায়ক সিট এবং সিটিং পজিশন, নরম সাসপেনশ ভালো লেগেছে। তার কাছে মনে হয়েছে বাইকটির স্পীড একটু ধীরে বৃদ্ধি পায়।
মাহমুদুর রহমান। আইটি ব্যবসায়ী। উচ্চতা ৫’ ৬” ওজন ৬৬কেজি। বিগত ৫বছর ধরে তিনি বাজাজ প্লাটিনা মোটরসাইকেল ব্যবহার করছেন। বেশ কিছু সময়ধরে কীওয়ে আরকেএস চালিয়ে তার দৃষ্টিতে ৪৫-৫৫কিমি/ঘন্টা স্পীড উঠতে একটু সময় নিচ্ছে। কিন্তু বাইকটিএর ১৫০সিসির মতো ডিজাইন, আধুনিক সুবিধা, আরামদায়ক সীট এবং সাসপেনশন এর কথা ভাবলে স্পীডের বিষয়টি কিছুটা ইগনোর করা যেতেই পারে।
মাসুদ মাহমুদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র। উচ্চতা ৫’ ৮”, ওজন ৭৫ কেজি, বর্তমান তিনি ব্যবহার করেন জিয়ালিং ৮০সিসি মোটরসাইকেল। তার দৃষ্টিতে কীওয়ে আরকেএস ১০০ দেখতে বেশ ভালো, ১৫০সিসির মতো। বসে আরাম, ব্রেকিং ভালো। কিন্তু বাইকের গিয়ার শিফটিং এ কিছুটা সমস্যা মনে হয়েছে।
আবু সুফিয়ান। পেশায় শিক্ষক। উচ্চতা ৫’ ১০” ওজন ৭৫কেজি। বর্তমানে বিগত ৭বছর ধরে ব্যবহার করছেন টিভিএস মেট্রো ১০০। তিনি গ্রামের মাটির রাস্তা এবং পাকা রাস্তায় মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করে তার মতামত ব্যক্ত করেছেন। বাইকটির সিটিং পজিশন, ব্রেকিং, কমফোর্ট খুবই ভালো লেগেছে। ১০০সিসি বাইক হিসেবে ডিবজাইন এবং লুক অসাধারন মনে হয়েছে।
মেহেদী মিতুল। অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। উচ্চতা ৫’ ৫” ওজন ৫০কেজি। বর্তমানে তিনি ব্যবহার করেন হিরো হোন্ডা স্প্লেন্ডর। টেস্টরাইড শেষে তার মনে হয়েছে বাইকটির সাসপেনশনটি খুবই চমতকার এবং সিটটিও বেশ নরম এবং বাইকটির ওজন বেশি থাকায় মাটির রাস্তায় ব্যবহার করেও তেমন ঝাকুনি অনুভব করেন নাই এবং ভালো কন্ট্রোল পেয়েছেন, তবে টায়ার আরেকটু মোটা হলে ব্রেকিং বা মাটির রাস্তায় আরেকটু সুবিধা হতো বলে তিনি মনে করেছেন। বাইকের অন্যান্য ফীচারগুলোও ভালো লেগেছে। বিশেষ করে ডিজাইন এবং লুক খুবই পছন্দ করেছেন।
বিভিন্ন ব্যবহারকারী বিভিন্ন সময় এবং ভিন্ন ভিন্ন রাস্তায় কিওয়ে আরকেএস ১০০ মোটরসাইকেলটি চালান। তাদের মতামতের উপর ভিত্তি করে বলা যায় ১০০ সিসি কমিউটার বাইক হিসেবে অন্যান্য ১০০ সিসি বাইকের থেকে এই বাইকটি কোন অংশেই কম নয় বরং বেশ ভাল। বাইকটি অত্যাধুনিক ফিচার সমৃদ্ধ,চমৎকার ডিজাইন এবং দামেও খুব কম যা যে কোন কমিউটার বাইক পছন্দকারীকে আকৃষ্ট করতে পারে।