আমি রাজিবুল ইসলাম রাজ, পেশায় চাকুরীজীবি। আজ আমি আমার বাইক Keeway RKS 100 নিয়ে আপনাদের সাথে আমার কিছু মতামত শেয়ার করতে যাচ্ছি এবং অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে যাচ্ছি। একইসাথে আমি আশা করি যে আমার এই মতামত অন্য গ্রাহকদের সহযোগীতা করবে। আশা করি আপনারা আমার সাথেই থাকবেন।
আমি প্রথম মোটরসাইকেল চালানো শিখি ২০০৫ সালের দিকে এবং যেই বাইকটা দিয়ে শিখি সেটা ছিলো হোন্ডা সিডি ৮০ । বাইকটি সেই সময়ে ব্যাপক জনপ্রিয় একটি বাইক ছিল । অত্যাধুনিক বাইক চালানো আমার কাছে খুবই আনন্দের একটি বিষয়। আমি এই পর্যন্ত Discover-100, TVS Metro, এবং আমার বর্তমান বাইক Keeway RKS 100 সহ আরো অনেক বাইক চালিয়েছি।
আমার বাইকের আউটলুক এবং পারফরমেন্স
আমার বাইকের বিশেষ দিক হল বেশির ভাগ বাইকার আমাকে জিজ্ঞেস করে যে এটা কোন বাইক, ১৫০ সিসি? এবং তারা বেশ আগ্রহ নিয়ে আমার বাইকের দিকে তাকিয়ে থাকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে এবং কারো কারো বিশ্বাস হয় না যে এইটা ১০০ সিসি বাইক। এর প্রাধান কারণ হল এর মাস্কুলার বডি ডিজাইন একেবারেই ১৫০ সিসি বাইকের কাছাকাছি । আমার বাইকটার ডিজাইন আমার কাছে খুব ভাল লেগেছে এবং যার ফলে আমি বাইকটি কিনে ফেলি। এছাড়াও বাইকের আরও কিছু দিক রয়েছে যেমন হেডল্যাম্প, সুন্দর কালার কম্বিনেশন, ভাল মাইলেজ, ইঞ্জিনের স্মুথ সাউন্ড আমাকে আকৃষ্ট করেছে। আমরা সকলেই জানি যে ১০০ সিসির বাইক হিসেবে এত কম দামে এত কিছু অন্য কোন কোম্পানী অফার করবে না এবং একজন কমিউটার বাইকারের যা যা প্রয়োজন সে সমস্ত জিনিস এই বাইকটিতে রয়েছে। আমি বাইকটির পারফরমেন্স নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট। বাইকটির সাসপেনশন বেশ ভাল এবং আমি এখন পর্যন্ত কোন ব্যাক পেইন অনুভব করিনি। এর পাশাপাশি বলে রাখা ভাল যে আমি এই পর্যন্ত আমার বাইক নিয়ে ৫৫০০ কিমি এর মত চালিয়েছি এবং এখন পর্যন্ত ছোট খাটো কোন সমস্যা ছাড়া বড় কোন সমস্যার সম্মুখীন হইনি।
বাইকটির টপ স্পীড বলতে গেলে আমি এখন পর্যন্ত ৮৫ কিমি প্রতি ঘন্টায় টপ স্পীড পেয়েছি এবং আমার মনে হয়েছে যে এর টপ স্পীড আরো হবে কিন্তু রাস্তায় জ্যাম ও খারাপ রাস্তা হওয়ার কারণে আমি আর স্পীড তুলতে সক্ষম হইনি। বাইকের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এর মাইলেজ ।অনেকই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে বাইকের মাইলেজ কেমন পাচ্ছি। আমার Keeway RKS 100 বাইকটির চমৎকার একটি দিক হল এর মাইলেজ ৭০ কিমি প্রতি লিটারে। ১০০ সিসির বাইক হিসেবে এত মাইলেজ ভাবাই যায় না। আমি মাঝে মাঝে আমার শো-রুম থেকে বাড়ি ফিরতে বেশ রাত হয়ে যায় এবং আমার বাসা টা আমার শো-রুম থেকে বেশ দূরে। রাতে রাইড করতে দরকার ভাল হেডল্যাম্প এই বাইকটিতে আমি অনেক ভাল হেডল্যাম্প পেয়েছি যেটা অন্ধকার রাস্তায় স্বচ্ছ আলো দেয়। আমি এই পর্যন্ত হেডল্যাম্পের কোন ঘাটতি অনুভব করিনি এবং বলে রাখা ভাল যে আমি এই বাইকটি প্রায় এক বছর যাবত ব্যবহার করছি।
আমার বাইকের কিছু ভাল দিক
- আমার বাইকটির মাইলেজ আমার কাছে খুব ভাল লেগেছে এবং এটা প্রায় ৭০ কিমি প্রতি লিটারের মত।
- বাইকটির আউটলুক এবং দাম অনুসারে দেখে মনে হয় অনেক দামী একটি বাইক এবং অনেকেই কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
- বাইকটির আকর্ষণীয় আরেকটি বিষয় হল যে এটি যে কোন বাইকারের খুব সহজেই নজ কাড়ে এবং অনেকেই বাইকটি নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করে। বিশেষ করে যুবক রাইডাররা বেশী আগ্রহ দেখায়।
আমার বাইকের কিছু মন্দ দিক
- বাইকটির প্রধান খারাপ লাগার দিক হল এর চেইন কভার। চেইন কভারটা খুবই চিকন এবং মাঝে মাঝে এর নাটটা কেটে যায়। চেইন কভারটা আরেকটু ভাল দিলে আমার মনে হয় ভাল হত।
- বাইকের পার্টস গুলোর দাম অনেক, গ্রাহকের কথা মাথায় রেখে এর পার্টস এর দাম গুলো কমালে ভাল সাড়া পাওয়া যাবে।
- আরেকটি বিষয় না বললেই নয় যে বাইকের টায়ার এর বডির তুলনায় বেশ চিকন যেটা দূর থেকে দেখতে খারাপ লাগে এবং মাস্কুলার বডি হিসেবে এর টায়ার আরেকটু মোটা করলে আরও কম্ফোরট পাওয়া যেত।
আমি আমার বাইকের রেটিং ১০ তে ৯ দিব কারণ বাইকটি আমার কাছে খুবই ভাল লেগেছে । আমার সুপারিশ থাকবে যে আগে আমাদের বাইকটি টেস্ট রাইড দিবেন তারপর অন্য কোন বাইক চালাবেন। আমি অন্য যে কোন ১০০ সিসির বাইকের থেকে আমার বাইকটিকে এক ধাপ এগিয়ে রাখব।