আমি শাহারিয়ার রহমান, পেশায় একজন ছাত্র পাশাপাশি ওয়েব ডেভেলপার। আমি দীর্ঘদিন ধরে keeway RKS 100 বাইকটি ব্যবহার করে আসছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাইক নিয়ে কিছু অভিজ্ঞতা এবং মতামত শেয়ার করতে যাচ্ছি। সেই সাথে আমার এই রিভিউ এর মাধ্যমে অন্যান্য গ্রাহকগন কিছু অভিজ্ঞতা লাভ এবং উপকৃত হবেন। আমি আশা করি আপনারা আমার সাথেই থাকবেন।
আজ থেকে ১২ বছর আগে আমি বাইক চালানো শিখি এবং সেটা ছিল ডায়াং ৮০ সিসি। প্রথম প্রথম বাইক চালাতাম ভালই লাগত তখন ৮০ সিসি বাইক কি আর ১৫০ সিসি বাইক চালানো নিয়ে কথা। এরপর আমি ব্যবহার করতে শুরু করলাম টিভিএস এপাচি ১৫০ সিসি। এক লাফে ৮০ সিসি থেকে ১৫০ সিসির বাইক ব্যবহার করতে শুরু করলাম। অবশ্যই ডায়াং এর থেকে এপাচি বেশ ভাল লাগত কারণ এর কারেন্ট পিকআপ এবং গুম গুমশব্দ শুনে বেশ মুগ্ধ হতাম। তবে বাইকটি চালিয়ে তেমন কম্ফোরট অনুভব করিনি। এই পর্যন্ত আমার বলতে গেলে এই দুটি বাইক ব্যবহার করা হয়েছে এছাড়াও বিভিন্ন সময় বন্ধুদের বাইক চালিয়েছি। সবার মতামত নিয়ে আমি নিয়ে নিলাম keeway RKS 100।
আমার বাইকের আউটলুক এবং পারফরমেন্স নিয়ে কিছু মতামত
সকলের কাছে একই প্রশ্ন এটা কি ১২৫ বা ১৫০ সিসির বাইক। দাম কত? বাহ দেখতে খুব সুন্দর তো ইত্যাদি বিভিন্ন কৌতূহলী প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে। যখন বলি যে আমার বাইক ১০০ সিসির এবং দাম অনেক কম তখন অনেকেই বিশ্বাসই করতে চায় না। আমি বিভিন্ন জায়াগায় বাইক নিয়ে গেছি এমনকি পেট্রল পাম্পের কর্মকর্তা আমাকে কে জিজ্ঞেস করে এটাকি ১৫০ সিসির বাইক? আমি বলি না, এটা ১০০ সিসির বাইক। এরকম অনেকেই বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে। আমি বাইকটির স্পোর্টস লুক,মার্জিত দেখতে, ডিস্ক ব্রেক, দাম কম ইত্যাদি দেখে বাইকটি নিয়ে নেই। আমি মনে করি যে একটি কমিউটার বাইকারের প্রয়োজনীয় সব কিছু ফিচারই রয়েছে এবং দামও অন্যান্য ১০০ সিসি বাইকের থেকে কম। আমি আমার বাইক নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট আছি। বাইকটির সাসপেনশন বেশ ভাল অনেকক্ষন রাইড করার পরেও আমি কোন ব্যাক পেইন অনুভব করিনি। বলে রাখা ভাল যে আমি আমার বাইক নিয়ে একদিনে একটানা ২০০ কিমি চালিয়েছি এবং এখন পর্যন্ত ছোট তেমন বড় কোন সমস্যার সম্মুখীন হইনি। আমি আমার বাইক নিয়ে ২ মাসের কম সময়ের মধ্যে ৩৫০০ কিমি পথ পাড়ি দিয়েছি এবং আমার বাইকের টপ স্পীড ৮৫ কিমি প্রতি ঘন্টায় পেয়েছি। মাইলেজ বলতে গেলে আমি বর্তমানে ৬০ কিমি প্রতি লিটারে পাচ্ছি। ১০০ সিসির বাইক হিসেবে অভাবনীয় মাইলেজ এবং পারফরমেন্স ভাবাই যায় না। এক কথায় বলতে গেলে গ্রাহকদের সাধ্যর মধ্যে সব কিছুই আছে।
আমার বাইকের কিছু ভাল দিক
- স্পোর্টস লুক, অসাধারণ দেখতে, দেখে ১০০ সিসি বাইকের মত মনে হয় না, মাস্কুলার ডিজাইন ইত্যাদি আমার কছে খুব ভাল লেগেছে।
- ব্রেকিং, সাসপেনশন, অনেক ভাল। একটানা বেশীক্ষন রাইড করার পরেও তেমন ব্যাক পেইন অনুভব করিনি এবং অনেক আরামদায়ক একটি বাইক।
-
ফিক্সড লাইট, ডিজিটাল মিটারে নতুন ফিচার, রেয়ার সাসপেনশন অনেক মজবুত, ছোট খাটো সার্ভিসিং করতে কোন ঝামেলা হয় না ইত্যাদি বিভিন্ন দিক আমার খুব ভাল লেগেছে।
- পিলিয়নের বসার স্থানটা বেশ আরামদায়ক।
আমার বাইকের কিছু মন্দ দিক
- প্রথম প্রথম হেডল্যাম্পের আলো ভাল লেগেছে কিন্তু পরবর্তীতে হেডল্যাম্পের আলো একটু কম কম মনে হচ্ছে।
- পেছনের টায়ার সাইজটা ১০০ সিসির মাস্কুলার বাইক হিসেবে অনেক কম মনে হয়েছে। আমি নিজেই এই চিকন টায়ারের জন্য পিছিলিয়ে পড়ে গেছি। যেহেতু মাস্কুলার এবং সুন্দর একটি বাইক সেই হিসেবে টায়ারের সাইজটা মোটা করলে আরও বেশী সুন্দর দেখাতো এবং রাইডিং কন্ট্রোল পাওয়া যেত। শুনলাম ভার্সন ৩ এ পেছনের চাকা মোটা দেয়া হবে।
- আমি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স এবং গিয়ার লিভারে বেশ সমস্যা অনুভব করেছি। এটা শুধু আমার না অনেক keeway RKS 100 ব্যবহারকারীরা এই সমসায় ভুগছে।
সবার শেষে আমি বলতে চাই যে তাদের সার্ভিসিং সেন্টারটা আরও উন্নত এবং প্রশস্ত করা, কমন পার্টসগুলো বেশী করে স্টক করে রাখা, সার্ভিস সেন্টারের আরও দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ দিলে বিক্রয় আরও বৃদ্ধি পাবে।
হ্যাপি রাইডিং
সেফ রাইডিং