আমি মোঃমোস্তাফিজুর রহমান পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসায়িক বিভিন্ন কাজে এবং ব্যাক্তিগত ঘুরাঘুরি করার জন্য মোটরসাইকেল আমার কাছে খুবই প্রয়োজনীয় একটি বাহন। আমি অনেক আগে থেকেই মোটরসাইকেল ব্যবহার করি । আমি ডায়াং ১০০ সিসি, ওয়ালটন ফিউশন ১০০ সিসি সহ অনেক মোটরসাইকেল ব্যবহার করছি। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলা দরকার তাই আমি চিন্তা করলাম যে ভালো ডিজাইন সমৃদ্ধ একটি মোটরসাইকেল দরকার। প্রায় অনেক দিক থেকেই দেখছি যে কিওয়ের মোটরসাইকেলগুলোর ডিজাইন চোখ ধাঁধানো এবং কেউ খারাপ বলবে না। আমি সাধারণত বেশী গতি পছন্দ করি না তাই ১৫০ সিসি মোটরসাইকেলগুলো থেকে দূরে থাকি। তারপর রাজশাহীর নিউ শুভ এন্টারপ্রাইজ থেকে কিনে ফেলি কিওয়ে আর কে এস ১০০ সিসি। আমি প্রায় ৩ মাস ধরে কিওয়ে আর কে এস ১০০ সিসি ব্যবহার করছি এবং প্রায় ৪০০০ কিমি পথ পারি দিয়ে ফেলেছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে এর ভালো মন্দ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।
আমি মূলত এর ডিজাইন দেখেই কিনেছি কারণ , মোটরসাইকেলটির ডিজাইন আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে । খালি চোখে দেখে কেউ বলবে না যে এটা ১০০ সিসির একটি বাইক। অন্যদিকে আমি বিল্ড কোয়ালিটি নিয়ে সন্তুষ্ট না কারণ এর হর্নটা আমার কাছে ভালো মনে হয়নি জোড়ালো হলে ভালো হত , চেইনটা মাঝে মাঝে প্রায় ৪০০ কিমি চালানোর পর ঢিল হয়ে যায় । সব কিছু বিবেচনায় এর বিল্ড কোয়ালিটিটা আরেকটু উন্নত করা দরকার তবে ডিজাইন একদম পারফেক্ট আছে।
চালিয়ে অনেক আরাম পেয়েছি। সিটিং পজিশন দারুন একইভাবে সিটিং পজিশনে বসে হ্যান্ডেলবারটা ধরে আমি অনেক আরাম অনুভব করি তবে হ্যান্ডেলের সাথে সংযুক্ত সুইচগুলো আমার কাছে ভালো মনে হয়নি কারণ আমার কাছে ইলেক্ট্রিক্যাল শর্ট সার্কিট হয়েছে। রাতে চালানোর জন্য আমি মনে করি এর হেডল্যাম্পের আলোটা যথেষ্ট।
কন্ট্রোল ভালো হয়। আমি টপ স্পীডেও কোনো ভাইব্রেশন লক্ষ্য করিনি এবং আমি টপ স্পীড ৮৭ কিমি প্রতি ঘন্টায় তুলতে সক্ষম হয়েছি। ব্রেকিং আমার কাছে সামনের এবং পেছনের দুটাই অনেক ভালো মনে হয়েছে কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে যে এর সামনের সাসপেনশনটা খুব কম নাড়াচাড়া করে তবে পেছনেরটা একদম ঠিক আছে। টায়ারের যথেষ্ট ভালো গ্রিপ পেয়েছি এবং যেকোনো রাস্তাতেই খুব কম স্লিপ খায়। কন্ট্রোলিং এর দিক দিয়ে আমি বল্বোযে কিওয়ে আরকেএস অনেক ভালো মনের একটি মোটরসাইকেল।
তেল খরচটা ১০০ সিসির তুলনায় অনেক বেশি মনে হয়েছে। আমি এখন লিটারে প্রায় ৫০ কিমি পাচ্ছি কিন্তু অন্যান্য ১০০ সিসির মোটরসাইকেলে আমি অনেক ভালো মাইলেজ লক্ষ্য করি যেটা আমারটাতে পাচ্ছি না ।
সার্ভিসিং মান অনেক ভালো তাদের আচরণ, ঠিক করা ইত্যাদি আমার কাছে ভালো লেগেছে তবে একটি বিষয় আমার কাছে খারাপ লেগেছে যেটা সাধারণত সবারই লাগার কথা সেটা হল- আমরা অন্যান্য কোম্পানির সার্ভিসিং সেন্টারের দিকে লক্ষ্য করলে দেখতে পাই যে তাদের আলাদা একটা নির্দিষ্ট স্থানে সার্ভিসিং করায়। কিন্তু কিওয়ের ক্ষেত্রে সেটা ভিন্ন আমি লক্ষ্য করেছি যে তাদের সার্ভিসিং এর জন্য আলাদা কোনো স্থান নেই। রাস্তায় বাইক রেখে সার্ভিসিং করায় এটি খুবই দৃষ্টিকটু । সার্ভিসিং এর জন্য ভালোমানের টুলসএর স্বল্পতাও চোখে পড়ে। শোরুমে যথেষ্ট পরিমাণে স্পেয়ার পার্টসও মজুদ থাকে না। আমি বলবো যে তাদের সার্ভিসিং মানটা আরও উন্নত করা হোক।
ভালো দিক
- ডিজাইন সুন্দর
- আরামদায়ক
- কন্ট্রোল ভালো হয়
খারাপ দিক
- চেইনে সমস্যা
- বিল্ড কোয়ালিটি তেমন ভালো না
- পার্টস তেমন বাজারে নেই
কোয়ালিটি পারফরমেন্স মিলিয়ে আমি বলবো যে এর দামটা একদম ঠিক আছে বরং অন্যান্য ১০০ সিসি মোটরসাইকেলের তুলনায় কমই আছে। যদি কেউ এই মোটরসাইকেলটি কিনতে চান তবে আমার পরামর্শ থাকবে যে ডিজাইনের দিক দিয়ে এটি পারফেক্ট তাই কেউ যদি ভালো ডিজাইন সমৃদ্ধ ১০০ সিসি মোটরসাইকেল কিনতে চান তবে আমি বলবো কিওয়ে আরকেএস এর বিকল্প নেই।