কীওয়ে ব্রান্ডের বিভিন্ন মডেলগুলো ডিজাইনের পাশাপাশি চমতকার ইনজিন পারফরমেন্সের কারনে ইতমধ্যেই গ্রাহকদের পছন্দের তালিকাতে চলে এসেছে । ইতিপূর্বে আমরা কীওয়ের বিভিন্ন বাইকের ফিচার,দাম এবং এর পাশাপাশি কিছু ইউজার রিভিউ ও কিছু ফিচার রিভিউ দেখেছি। এগুলো উপর ভিত্তি করে আমরা খুব সহজেই এই ব্রান্ডের বাইকের পারফরেমেন্স সম্পর্কে অবগত হতে পারি এবং সেই সাথে দাম এবং ফিচার সম্পর্কে যথেষ্ট ভাল ধারনা লাভ করতে পারি। আজ আমারা কিওয়ে আর কে এস ১২৫ সিসি বাইক নিয়ে এবং বাইকের ফিচারগুলো নিয়ে কিছু আলোচনা করতে যাচ্ছি।
প্রথম দেখাতেই বলা যেতে পারে যে এই বাইকটিতে অনেক সুন্দর গ্রাফিক্স রয়েছে এবং এই সুন্দর ডিজাইনের মাধ্যমে ইতালিয়ান কোম্পানী বেনেলী তাদের বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে। চকচকে কালার এবং সুন্দর ডিজাইন ছাড়াও রয়েছে নতুন ডিজাইনের এলয় রিম, স্টাইলিশ সাইড ইনডিকেটর, সামনে ডিস্ক ব্রেক এগুলো বাইকটিকে আরও বেশী সুন্দর করে তুলেছে। নিচে বাইকটি ফিচার নিয়ে কিছু আলোচনা করা হল।
ডিজাইন
কিওয়ে আর কে এস ১২৫ সিসি বাইকটি নিঃসন্দেহে একটি চমৎকার ডিজাইনের বাইক যেটার বডি ডিজাইনটা আর কে এস ১০০ সিসির মতই।বাইকটির ডিজাইনের কথা বলতে গেলে ১২৫ সিসির বাইক হিসেবে খুব ভাল এগ্রেসিভ ডিজাইন রয়েছে। স্পোর্টস নেকেড বডি ডিজাইন, মাস্কুলার ফুয়েল ট্যাংকার, সিলভার রঙয়ের সাইলেন্সার গার্ড, ভাল কালার কম্বিনেশন এবং অসাধারণ ডাইমেনশন সাথে স্প্লিট সিট ইত্যাদি এই বাইকটিকে নজরকারা আউটলুক এনে দিয়েছে।শুধু কালার কম্বিনেশনই নয় বাইকটিতে আরও রয়েছে খুব সুন্দর ডিজাইনের টেল ল্যাম্প সাথে লম্বা টায়ার ফেন্ডার,সামনে ডিস্ক ব্রেক, স্টাইলিশ এলয় রিম এবং চমৎকার ইন্ডিকেটর বাইকটির সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলেছে।
ডাইমেনশন
আমরা বলতে পারি যে বাইকটির সুন্দর ডিজাইনের পাশাপাশি সুন্দর ডাইমেনশন রয়েছে এবং এই সুন্দর ডাইমেনশনের ফলে রাইডার বেশ আরামের সাথে বাইকটি রাইড করতে পারবে। বাইকটির অসাধারণ ডাইমেনশনের ফলে দেখতে অনেক সুন্দর করে তুলেছে। ১২৫ সিসির এই বাইকটির ডাইমেনশন রয়েছে লম্বায় ২০৪০মিমি, চওড়ায় ৭৮০মিমি এবং উচ্চতা ১০৭০মিমি। অন্যদিকে হুইলবেজ এবং গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স রয়েছে যথাক্রমে ১২৬০মিমি এবং ১৮৫ মিমি তে। বাইকটির সমস্তকিছু পরিমাপ অনুসারে অনেক বড় একটি বাইক এবং এর বডির ওজনটাও ভাল কন্ট্রোলিং এর জন্য বেশ উপযুক্ত যেটা প্রায় ১২৪ কেজি। ফুয়েল ট্যাংকারের ধারন ক্ষমতা ১৬ লিটার। আমরা অবশ্যই বলতে পারি যে ইতালিয়ান কোম্পানি বেনেলীর কারণে বাইকটি চমৎকার ডিজাইন এবং ডাইমেনশন পেয়েছে।
ইঞ্জিন
প্রত্যেক গ্রাহকগন চায় যে তার বাইকের ইঞ্জিনটা এবং ইঞ্জিনের পারফরমেন্সটা ভাল হোক। গ্রাহকদের কথা বিবেচনায় নিয়ে প্রস্তুতকারক কোম্পানী চেষ্টা করেছে তাদের বাইকের সাথে ভাল মানের ইঞ্জিন সরবরাহ করার যাতে করে গ্রাহকের বাইক চালিয়ে স্বাচ্ছন্দবোধ করে। কিওয়ের ১২৫ সিসির এই বাইকটিতে রয়েছে ১২৪ সিসির এয়ার কুল্ড, সিংগেল সিলিন্ডার,৪ স্ট্রোক, টুইন ভাল্ভ, SOHC ইঞ্জিন যেটা ম্যাক্স পাওয়ার ১১.২ বিএইচপি এবং ম্যাক্স টর্ক ৯.২ এনএম রয়েছে। এই ধরনের ইঞ্জিন আশা করা যার খুব ভাল পারফরমেন্স দিবে। ইঞ্জিনের কম্প্রেশান রেশিও রয়েছে ১০:৬:১ যেটা ১২৫ সিসির বাইকের ইঞ্জিন হিসেবে অসাধারণ। বাইকটির ইগ্নিশন সিস্টেম হচ্ছে টি এল আই এবং আরও রয়েছে ৫ টি স্মুথ ট্রান্সমিশন গিয়ার বক্স। ইঞ্জিন চালু করার জন্য শুধু রয়েছে ইলেকট্রিক এবং কিক স্টার্ট অপশন।
ইলেকট্রিক্যাল এবং মিটার কনসোল
রাইডারের প্রয়োজনীয় সকল আধুনিক ইলেক্ট্রিক্যাল ফিচার এবং মিটার কনসোল এই বাইকটিতে রয়েছে। ইলেকট্রিক্যাল দিকে রয়েছে ১২ ভোল্টের ব্যাটারি, ৩৫/৩৫ হ্যালোজিন হেডল্যাম্প, পরিষ্কার টেল ল্যাম্প, সুন্দর ডিজাইনের এলিডি ইন্ডিকেটর, ইঞ্জিন কিল সুইচ, পাস সুইচ ইত্যাদি। অন্যদিকে বাইকটির মিটার কনসোলটি ডিজীটাল এবং এনালগ মিটারের সম্বনয়ে তৈরি করা হয়েছে যেখানে রয়েছে আরপিএম ইন্ডিকেটর, লো-ফুয়েল ইন্ডিকেটর, ঘড়ি স্পীডোমিটার,গীয়ার ইন্ডিকেটর এবং আরও প্রয়োজনীয় সন কিছুই রয়েছে এখানে।
টায়ার
টায়রের দিক বলতে গেলে বাইকটির উভয় চাকাতেই টিউবলেস টায়র ব্যবহার করা হয়েছে এবং সেই সাথে রয়েছে নতুন ডিজাইনের এলয় হুইল। সামনের চাকার পরিমাপ হচ্ছে ৯০/৯০-১৭ এবং পেছনের চাকার পরিমাপ হচ্ছে ১১০/৮০-১৭।
সাসপেনশন এবং ব্রেকিং
আর কে এস সিরিজের প্রত্যেকটি বাইকে যে ব্রেকিং এবং সাসুপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে ঠিক তেমনভাবে এই বাইকটিতেও একই ব্রেকিং এবং সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। সামনের দিকে রয়েছে টেলিস্কোপ ফরক সাসপেনশন এবং সামনের চাকার ব্রেকিং রয়েছে ডিস্ক ব্রেকিং সিস্টেম অন্যদিকে পেছনের দিকে ব্যবহার করা হয়েছে টুইন-শক সাসপেনশন এবং পেছনের চাকার ব্রেকিং রয়েছে ড্রাম ব্রেকিং সিস্টেম।
শেষকথা
আমরা সকলেই জানি যে প্রত্যেকটি মেকানিক্যাল জিনিসের কিছু খুটি নাটি সমস্যা থেকে থাকে এবং যদি সেই মেশিন ভাল পারফরমেন্স দেয় তবে গ্রাহকগন ছোট খাট সমস্যা গুলো আমলে নেয় না। এই বাইকটির সমস্ত ফিচার দেখার পর আশা করা যায় যে বাংলাদেশের রাস্তায় বাইকটি বেশ ভাল পারফরমেন্স দিবে। কিওয়ে আর কে এস ১২৫ সিসির বাইকটির ৩ টি ভিন্ন কালার রয়েছে (সাদা,লাল,কালো)।