আমি মাসুম তালুকদার, একটি আইটিফার্ম পরিচালনার পাশাপাশি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি। বিগত রোজায় কীওয়ে আরকেএস ১২৫সিসি মোটরসাইকেলটি কিনি এবং ব্যবহার করে চলেছি। কেনার পর থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ছোট বড় ট্যুর দেয়া ছাড়াও রেগুলার ব্যবহার করে চলেছি। ব্যবহারের অভিজ্ঞতায় বাইকটির অনেকগুলো ভালো দিকের পাশাপাশি ২/১টি খারাপ দিকও চোখে পড়েছে। আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমার কীওয়ে আরকেএস ১২৫সিসি বাইকটি ব্যবহারের অভিজ্ঞতা।
ছোট থেকেই আমার সাইকেলের প্রতি আগ্রহ। সাইকেল চালাতে পছন্দ করি। সে পছন্দ এখনও রয়ে গেছে। সময়ের প্রেক্ষিতে এবং প্রয়োজনে মোটরসাইকেলের প্রতিও আগ্রহ তৈরী হয়। আর তাই কয়েকবছর আগে বড় ভাইএর ব্যবহৃত Yamaha RX100 দিয়ে আমার মোটরসাইকেল চালানোর হাতেখড়ি হয়। মোটরসাইকেল চালানো শেখার পরে বর্তমানবাইক কেনার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে আমি Dayang Runner AD80S Deluxe এবং Honda CB Trigger বাইক ব্যবহার করেছি।
বাসা থেকে ভার্সিটি যাতায়াতে জ্যাম এবং যানবাহনের অবস্থার উপরে বিরক্ত হয়ে দীর্ঘদিন থেকেই একটি বাইকের অভাব অনূভব করছিলাম। সিদ্ধান্ত নিলাম একটি মোটরসাইকেল কিনবো। আমার ওজন এবং হাইটের সাথে হোন্ডা ট্রিগারটি ম্যাচ হচ্ছিলো না। তাই ভালো ডিজাইনের মধ্যে পছন্দনীয় বাজেটে বাইক খুজতেছিলাম। সব মিলিয়ে কীওয়ে আরকেএসটি আমার পছন্দের শীর্ষে চলে আসে কিন্তু দু:খজনকভাবে সে সময়ে ঢাকার শোরুমে কীওয়ে আরকেএস ১২৫সিসি বাইকটি ছিলো না। বাধ্য হয়ে আমি টাঙ্গাইল শোরুম থেকে বাইকটি কিনে ঢাকায় নিয়ে আসি।
বাইকটির ব্রেক-ইন পিরিয়ড শেষ হতেই আমি বিভিন্ন জায়গায় ট্যুর দেই। যেমন ঢাকা-টাঙ্গাইল একাধিকবার যাতায়াত করি। নাটোর, ময়মনসিংহ ট্যুর দিয়েছি। বাইকটি চালিয়ে আমি অনেক কমফোর্ট ফীল করি। কন্ট্রোল চমতকার। বিশেষ করে নীচু হওয়াতে আমার জন্য অনেক সুবিধা হয়েছে ব্যালেন্স এবং কন্ট্রোলিং এ।
বাইকটির পারফরমেন্স নিয়ে বলতে গেলে কিছুটা প্রসংশা করতেই হয়। বিগত দেড় মাসে প্রায় ৩০০০কিমি চালিয়েছি। জ্বালানি লিটারে প্রায় ৪৫কিমি পথ পাড়ি দিতে পারছি। টপস্পীড পেয়েছি ১১২কিমি/ঘন্টা। একদিনে ঘুরেছি ৩৭৬কিমি। এসকল ক্ষেত্রে বাইকটি আমাকে সত্যিই সন্তুষ্ট করেছে। বাইকের কন্ট্রোল খুবই ভালো, লং রাইডে পারফরমেন্স প্রসংশনীয়। দীর্ঘ ভ্রমনে কখনও ব্যাকপেইন অনুভব করিনি। বাইকটির গঠন আমার কাছে যথেষ্ট মজবুত মনে হয়েছে।
চাঁদেরও কলংক থাকে, আমার বাইকেরও কিছু খারাপ দিয়ে রয়েছে যেগুলো না থাকলে আমার ভালো লাগতো। ব্রেকিং এবং গিয়ার শিফটিং এ কিছু সমস্যায় পড়েছি। অনেক নতুন বাইকারই এ সমস্যায় পড়েন। দুইএকটি ধাতব অংশে মরিচা চোখে পড়েছে। ঢাকার কাস্টমার সার্ভিস খুব ভাল
। সার্ভিস সেন্টার জানানো হলে বাসায় এসে বাইক ঠিক করে দিয়ে যায় । কিন্তু ঢাকার বাইরে সার্ভিস সেন্টার ভাল নয় । আমি মনে করি ঢাকার বাইরের সার্ভিস সেন্টারের মান উন্নয়নের পাশাপাশি পার্টসের সহজলভ্যতার দিকে নজর দেয়া উচিত।
কম বাজেটে সুন্দর লুক এর একটি শক্তিশালী বাইক কিনতে চাইলে কীওয়ে আরকেএস ১২৫ ভালো পছন্দ হতে পারে। সব মিলিয়ে আমি বাইকটিকে ১০ এ ৯ দিবো।