ইন্ডিয়ান এবং জাপানিজ মোটরসাইকেলের পাশাপাশি কিছু চাইনিজ মোটরসাইকেল রয়েছে যেগুলো বর্তমানে অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। অনেকেই বলে থাকেন যে চাইনিজ মোটরসাইকেল গুলো নিম্ন মানে এবং টেকসই কম কিন্তু আমার এসব ভুল ধারনা দূর করে দিয়েছে কিওয়ে। কারণ কিওয়ের মোটরসাইকেল ব্যবহার করে মনে হয় না যে এটা একটা চাইনিজ মোটরসাইকেল। বর্তমানে আমি ব্যবহার করছি কিওয়ে আরকেএস ১৫০ সিসি সিবিএস । এই বাইকটার লুক ,ব্রেকিং , কন্ট্রোল ইত্যাদি সব কিছু আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে যার ফলে আমি বাইকটি কিনি।এটা আমার প্রথম বাইক না আমি এর পূর্বে ব্যবহার করেছি ইয়ামাহা এফযেডএস ভার্সন ২। এফযেডএস ভার্সন ২ থেকে আমি মনে করি এই বাইকটি কোনো অংশে কম না।
আমি মোঃ রাজ ইসলাম পেশায় চাকুরিজীবী। প্রায় ৩ মাস যাবত আমি এই বাইকটি ব্যবহার করছি। বাইকটির সব কিছু আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে অন্যদিকে বাইকটিতে ভালো দিকের পাশাপাশি কিছু খারাপ দিকও রয়েছে যা আজ আমি আপনাদের সাথে ভাগাভগি করে নেবো।
বাইকটি চালিয়ে আমি এর অনেক ভালো ইঞ্জিন পারফরমেন্স পেয়েছি। ইঞ্জিন পারফরমেন্স নিয়ে আমি বলবো যে ইঞ্জিনটা হাই আরপিএম এ ভাইব্রেট করে না। আলহামদুল্লিলাহ ইঞ্জিন পারফরমেন্স নিয়ে আমাকে ঝামেলা পোহাতে হয় না।
বিল্ড কোয়ালিটি টা আমার কাছে মোটামুটি মনে হয়েছে। আমি মনে করি যে এর বিল্ড কোয়ালিটি আরও ভালো করা সম্ভব। অন্যদিকে ডিজাইনটা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে তবে এর বডিটা ১৫০ সিসি বাইক হিসেবে তেমন মাস্কুলার না। আমি মনে করি বাইকটির বিল্ড কোয়ালিটি এবং ডিজাইনটা আরেকটু উন্নত করা দরকার।
বাইকটি চালিয়ে খুবই আরাম। আমি ২ দিনে ঢাকা- সিলেট-শ্রীমঙ্গল-ঢাকা প্রায় ৮০০+ কিলোমিটার চালিয়ে কোনো ব্যাক পেইন অনুভব করিনি। সিটিং পজিশনটা খারাপ না তবে আরেকটু চওড়া হলে ভালো হতো। হ্যান্ডেলবারটা ধরে আমি অনেক আরামবোধ করি। হ্যান্ডেলবারের সাথে যে সুইচগুলো রয়েছে সেগুলো আমার কাছে মোটামুটি ভালো মনে হয়েছে। আমি বেশ কয়েকবার রাতে রাইড করেছি এবং এর হেডল্যাম্পের আলোটা আমার কাছে কম মনে হয়েছে।
সিবিএস ব্রেকিং থাকার ফলে আমি অনেক ভালো কন্ট্রোল পাই। আমি এখন পর্যন্ত বাইকের টপ স্পীড তুলেছি ১২০ কিমি প্রতি ঘন্টায় সেটা ছিলো ঢাকা-সিলেট রোড এবং এই টপ স্পীডে আমার কাছে কোনো ভাইব্রেশন অনুভব হয়নি। ব্রেকটা আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে কারণ সিবিএস ব্রেকিং থাকার ফলে আমি অনেক ভালো ব্রেকিং পাই। সামনের সাসপেনশন আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে তবে পেছনের সাসপেনশনটা আমার কাছে শক্ত মনে হলেও আস্তে আস্তে নরম হয়েছে গিয়েছে। সার্ভিস সেন্টার থেকেই সাসপেনশনটা নরম করে দিয়েছে। টায়ারের গ্রিপটা আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে এবং ইমারজেন্সি ব্রেকিং এ চাকা স্কীড করে না।
বাইকটির তেল খরচ বলতে গেলে বেশ ভালো। আমি হাইওয়েতে পেয়েছি ৫৩ কিমি প্রতি লিটার এবং ঢাকা শহরে পেয়েছি ৪২-৪৫ কিমি প্রতি লিটার। বাইকটির মাইলেজ নিয়ে আমি পুরোপুরি সন্তুষ্ট।
সার্ভিসিং সেন্টারের মান আমার কাছে মোটামুটি ভালো মনে হয়েছে। স্পিডোজ আফটার সেলস সার্ভিস সব সময় ভালো দিয়ে আসছে। তাদের ব্যবহার আমার কাছে খুব ভালো মনে হয়েছে।
ভালো দিক
- ব্রেকিং ভালো
- কন্ট্রোলিং ভালো
- ১৫০ সিসি বাইক হিসেবে মাইলেজ ভালো
- লং রাইড করার পরেও ইঞ্জিন শব্দ স্মুথ থাকে
খারাপ দিক
খারাপ দিক বলতে গেলে আমার কাছে এ পর্যন্ত খারাপ কিছু মনে হয়নি তবে গিয়ার শিফটিং টা শক্ত মনে হয়েছেএবং সাইড স্যান্ড ভালো মনে হয় নি। সাইড স্ট্যান্ড করে রাখলে মনে হয় যে অল্পসময়ে বাইকটি পড়ে যাবে।
আমার কাছে বাইকটির কোয়ালিটি এবং পারফরমেন্স অনুযায়ী দাম ঠিক মনে হয়েছে। যদি কেউ এই বাইকটি কিনতে চান তবে আমি বলবো যে নিশ্চিন্তে কিনতে পারেন। এই দামে সিবিএস অনেক ভালো বাইক।