যে স্বপ্ন আমাকে আরো স্বপ্নময় করে আমি সেটাই দেখি । এমন অনেক স্বপ্নের মাঝে একটি স্বপ্ন পূরন হওয়ার গল্প শোনাবো আজ –
ছোট খাটো চাকুরী আমার পেশা, আসলে কিছু করতে হবে তাই, তা না হলে চাকুরী আমার ভাল লাগে না। নাম তৌহিদ রাসেল। আমার নামটাও পছন্দ না, পারলে চেঞ্জ করতাম, বাড়ীটা রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে। ছোট বেলা রাস্তা দিয়ে কোন বাইক দেখলে যত দূর দেখা যেত হাঁ করে তাকিয়ে থাকতাম।এটাকে যদি কেউ আমাকে বাইক প্রেমিক বলতে চান তাহলে আমি তাই। বাইকটা তখন থেকেই আমার কাছে নেশার মত। প্রথম হাতে খড়ি আমার কাজিনের (রঞ্জু ভাই)কাছ থেকে, এর পরে আমার বাবার অফিসিয়াল বাইক দিয়েই যাত্রা শুরু সেটা ২০০০ সালের দিকে। যাই হোক আমার Keeway RKS 150 Sports V2(With CBS) নিয়ে আমার দুই মাসের, প্লাস ২২০০ কি: মি: চালানোর অভিজ্ঞতা বলবো ।
বাইকটা আমি একমাস ধরে ক্রয় করি। খুব কম লোক পাওয়া যাবে এমনটি করেছে। প্রথমে বুকিং দেই। পরে নাম্বার সহ শো- রুম থেকে নেই ১৭/১১/২০১৭ ইং তারিখে। ১৫০ সি সি চালানোর অভিজ্ঞতা এই প্রথম, আগে অবশ্য ১০০ সিসি দিয়েই ১৫০ সিসির স্বাদ নিতে চাইতাম, (এখন বুঝি ব্যাপারটা কি ছিল)।
প্রথমেই লুক নিয়ে কিছু কথা
বাইকটা ক্রয়ের আসল কারন ১৫০ সিসিতে সিফট হওয়া । সেখানে ইন্ডিয়ান বাইকও হতে পারতো। কিন্তু আমি যেটা চাই সেটা একমাত্র কিওয়ে ছাড়া কে দিতে পারে! বুঝতেই পারছেন এর লুকের কারনেই প্রথম পছন্দ ছিল। অসাধারণ ডিজাইন যার তুলনা হয় না।রাস্তা ঘাটে মানুষ হ্যাঁ করে তাকিয়ে থাকে। আমার কাছে হেড লাইট, ইন্ডিকেটর লাইট, আর ব্যাক লাইটটা বেশী জোশ লাগে, যা আলাদা লুক নিয়ে এসেছে।
২য় টায় আমি ব্যালেন্স আর কন্ট্রোলকে আনবো
লাষ্ট ঢাকা যেতে আমার সর্বচ্চ গতি ছিল ১১২, যা আমার জন্য বিস্ময়। এটাই আমার প্রথম ছিল, অথচ আমার ব্যালেন্স আর কন্ট্রোল ছিল অসাধারণ। সিবিএস ব্রেকিং আমাকে বাড়তি কনফিডেন্স দিয়েছিল এটা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই। ও CBS নিয়ে কিছু কথা না বললেই না, এটা বাইকিং জগতে নতুন আবিষ্কারই বলবো। আমি যদি ভুল না করি একসাথে সামনের আর পিছনের চাকা শুধু মাত্র পায়ের ব্রেকেই কন্ট্রোল হবে, যেটা ৪০:৬০। সত্যি অসাধারণ। সামনের ব্রেক ধরার প্রয়োজন নেই।
এবার ইঞ্জিন নিয়ে কিছু কথা
সত্যি কথা বলতে আমি এতটা ভাল বুঝি না। তবে RKS 150 sport v2 CBS এর সাউন্ডটা আমার কাছে জোশ লাগে। শক্তি আছে বলতে হবে । এত শীতের মাঝেও সকালে কখনো হতাশ করেনি আমাকে। একদিনে এখন পর্যন্ত ২০০+ কি:মি: চালানোর পরেও ইঞ্জিন সাউন্ড ইস্মুত ছিল।Keeway RKS 150 sport v2 এমন একটা বাইক যা আমাকে দির্ঘ্য দিন সাপোর্ট দিবে এটা নিশ্চিত। ইঞ্জিন বেশ শক্তিশালী ও মজবুত।
রেডি পিকাপ নিয়ে কিছু কথা
কিওয়ে RKS 150 Sport v2 এটি একটি স্পোর্টস বাইক, তাই এর গতি প্লাস রেডী পিকাপ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। আমি ০.৬ সেকেন্ডে ৬০ কি:মি: গতি তুলেছি। সর্বচ্চ গতি তুলেছি ১১২।
মাইলেজ
সত্যি কথা বলতে আমি এখনো হিসাব করি নাই। আমার কাছে ফুয়েল হিসাব করে বাইক চালানো পছন্দ না। চাকুরী না থাকলে দেখা যাবে ব্যাপারটা। ৪২+ হতে পারে এভারেজ। হাইওয়েতে প্রতি লিটারে ৫৩ কিঃমি মাইলেজ পেয়েছে এক বড় ভাই শুনেছি ।
যে বিষয় ভাল লাগেনি
-বাইকের চেন ও স্পকেট এর কোয়ালিটি আরো ভাল করা যেত। প্রচুর লুজ হয়।
-হেড লাইটের আলো আরো ভাল হতে পারতো। এলইডি হতে পারতো।
যা এই বাইকের বেশী আকর্ষনীয়
- CBS ব্রেকিং সিস্টেম
-মোবাইল চারজিং পোর্ট
- ডুয়েল ডিস্ক ব্রেক
- মনো শক
-এল ই ডি ব্যাক লাইট
-এল ই ডি টার্ন সিগনাল লাইট
-টিউবলেস টায়ার।
শেষ কথা
আমি বলবো এই বাজেটে অসাধাণ একটা বাইক। কিওয়ে আর কে এস ১৫০ স্পোর্টস ভি২ ভিন্ন স্বাদ দিবে আপনাকে। চায়না আইফোন যদি ব্যাবহার করতে দ্বিধা না থাকে, তাহলে কেন কিওয়ে নয়।
সময় এসেছে ভিন্ন কিছুর.....
যদিও আমার ভাললাগা একান্তই আমার, অন্য কারো ভাল নাও লাগতে পারে.....
ভাল থাকবেন, আর সাবধানে বাইক চালাবেন সবাই।
ধন্যবাদ।