Keeway RKS100 motorcycle ownership review by Shahriyar Mahmud Mamun
কেন এই বাইক পছন্দ করলাম?
মোটরসাইকেলের প্রতি দুর্দান্ত আকর্ষণ তো ছিলোই কিন্তু আমার চলাফেরার জন্যও মোটরসাইকেলের দরকার ছিল। শেষ পর্যন্ত আমার বাবা অনুমতি দিলেন বটে কিন্তু আমার বাজেট ছিলো কম। তাই মটরসাইকেল কেনার সময় বাজেটের দিকে মন দিতে হচ্ছিলো বটে কিন্তু আমার ব্যাক্তিত্বের সাথে মানান সই না হলে আমার চলবে না। অনেক খুজা খুজির পরে শেষ পর্যন্ত Keeway RKS100 আমার সব চাহিদা একসাথে পূরণ করে দিলো। আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা আর দুর্দান্ত স্টাইল সাথে ইউজার ফ্রেন্ডলী, দাম আমার নাগালের মধ্যেই . আর কি চাই?
ডিজাইন
আমার মতে বাংলাদেশে পাওয়া যাওয়া বিভিন্ন কোম্পানির ১০০ সিসি মোটরসিকেলের মধ্যে Keeway RKS100 ডিজাইনের দিক থেকে সেরা। এই বিষয়টিতে আমার সাথে অন্যান্য অনেকেই একমত হয়েছেন। মোটরসাইকেল নিয়ে যখনই বের হয়েছি মানুষজনের উৎসুক দৃষ্টি আমার নজর এড়াইনি। অনেকেই আমাকে মোটরসাইকেলের ফিচার সহ অন্যান্য বিষয় জানতে চেয়েছেন। এর দৃষ্টিনন্দন ডিজাইনের প্রশংশা করেছেন অনেকেই। কমিউটার ক্যাটাগরির এই বাইকের বিশেষ করে পেছনের অংশের ডিজাইন ও স্টাইল বিশেষত্তের দাবীদার।
ইনজিন
মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের গুরুত্ব আশা করি ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন হবে না। আমি বাইকটি কেনার পর থেকে আল্লাহ্র রহমতে এখন পর্যন্ত কোন সমস্যার সম্মুক্ষীন হইনি । অনেক দিন কেনা হয়ে গেলো ইনজিন ওয়েল বদলানো ছাড়া তেমন কোন ইঞ্জিনের সার্ভিসিং এর দরকার হয় নি। এর ম্যাক্স পাওয়ার এবং টর্ক চমৎকার। বাইকটি ইঞ্জিন সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ফোর- স্ট্রোক, এয়ার কুল ৯৯.৭ সিসির।
মাইলেজ ও স্পীড
ডিজাইন আর ইঞ্জিন পারফর্মেন্স এর পাশাপাশি এই মাইলেজ এবং টপ স্পীড নিয়ে না বললেই না। বাইকটির এভারেজ মাইলেজ ৫০+কিমি/ লিটার। আমি নিজে ৮০ কিমি/ ঘন্টা গতি তুলেছি এবং আমার কাছে বেশ স্মুথ মনে হয়েছে। আমি একা একবার ৯৯ কিমি/ঘন্টা স্পীড তুলেছিলাম। ১০০ সিসির বাইকের কাছে এতোটা আমি আশা করি নাই । বাইকটি সত্যই আমাকে অভিভুত করেছে।
কন্ট্রোল
যদি কন্ট্রোলের কথা বলেন , এক কথায় বলবো চালিয়ে আপনি মজা পাবেন। বাইকের ব্রেক সিস্টেম অসাধারণ ওজন মানানসই , সামনের টাইয়ার 90-90-17 পেছনেরটা 110-80-17 । পেছনের মোটা চাকার কারণে কন্ট্রোল যেমন ভালো তেমনি দেখার ক্ষেত্রেও আলাদা লুক দিয়েছে। ফুয়েল ট্যাঙ্ক এবং সিটে আপনার বসার আরামদায়ক পজিশানের কারণে এর পাশাপাশি কন্ট্রোল ভালো থাকের কারণে আমি অসাধারণ কম্ফোর্ট ফিল করবেন।
লং জার্নি
আমি বাইকটি নিয়ে বেশ কয়েকবার লং জার্নিতে গিয়েছি। টাঙ্গাইল থেকে ঢাকা তার মধ্যে অন্যতম। কোন লং ড্রাইভেই আমি কোন সমস্যার সম্মুখীন হয়নি। এর বাইরে প্রতিদিনই বলতে গেলে ৩০/৪০ কিমি আমি রাইড করি। আল্লাহর রহমতে কখনোই কোন সমস্যার সম্মুখীন হয়নি।
বাইকের যত্ন
আমি সময় পেলেই বাইকের যত্ন নেই । মাসে অন্তত এক থেকে দুইবার শ্যাম্পু আর পানি দিয়ে বাইক ধুয়ে শুকনা কাপড় দিয়ে মুছি। প্রতি ১০০০ কিমি চালানোর পরে ইঞ্জিন ওয়েল বদলে ফেলি এবং সেদিন এয়ার ফিলটার ও চেনটাও পরিষ্কার করে নেই। ব্যাটারির কন্ডিশান কেমন আছে সময় মতো দেখে নেই , প্রয়োজনে ব্যাটারিতে পানি দেই। আর প্রতিদিনের ঝাড়ামুছার কথা যদি বলেন তা তো করতেই হয়।
পরিশেষে
না আমি কাউকে কেনার জন্য বলছিনা কারণ কেনার পরে যদি কোন সমস্যা হয় তখন আমাকে দোষ দেবেন। তবে আমার মতে বাংলাদেশে পাওয়া যাওয়া বিভিন্ন কোম্পানির ১০০ সিসির বাইকের মধ্যে এই বাইকটি অন্যতম। কেনার আগে পরে অনেকের কাছে অনেক কিছু শুনেছি কিন্তু আমি চালানোর পরে বাইকটি আমাকে হতাশ করেনি। বাইকের সার্বিক পারফর্মেন্স হিসাবে আমার বাইক নিয়ে আমি সন্তুষ্ট ।