KEEWAY একটি বহুজাতিক মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারক কোম্পানী। যাদের সাথে রয়েছে ইতালী এবং আর্জেন্টিনার প্রসিদ্ধ ডিজাইন টীম। তাই কীওয়ের প্রতিটি মোটরসাইকেল সর্বাধুনিক ডিজাইনের হয়ে থাকে। বাংলাদেশে কীওয়ে তাদের কমিউটার মোটরসাইকেলের পাশাপাশি কীওয়ে সুপারলাইট ১৫০সিসি ক্রুজার মোটরসাইকেলটি নিয়ে এসেছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে ক্রুজারটি ২০০সিসি হলেও বাংলাদেশে সিসি সীমাবদ্ধতার কারনে মোটরসাইকেলটি ১৫০সিসি।
গঠন ও ডিজাইন
পুরো বাইকটিতেই ধাতব অংশের ব্যবহার অনেক। তাই বাইকটির মাঝে মজবুত গঠন লক্ষনীয়। ম্যাট ব্লাক রং এবং বিভিন্ন স্থানে ক্রোম এর ব্যবহার যে কারোরই চোখ জুড়িয়ে দেবে। ১৪৪০মিমি লম্বা হুইলবেইজ থাকায় বাইকটি আকারে লম্বা, ফলে চালকের ঝাকুনি অনুভব হবে কম এবং ব্রেকিং ও কমফোর্ট বেশি। একজোড়া সাইলেন্সার পাইপ মোটরসাইকেলটিকে দর্শনীয় করে তুলেছে।
সীট
দুইজনের উপযোগী লম্বা এবং প্রসস্ত সীট; চালক এবং পিলিয়ন উভয়ের জন্যই আরামদায়ক। চালকের জন্য ৭৩০মিমি নীচু এবং প্রসস্ত সীট খুবই আরামদায়ক। সীটে ব্যবহার করা হয়েছে আরামদায়ক নরম গদি, দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েও চালক কষ্ট অনুভব করবে না। যদিও পিলিয়নের জন্য কোন ব্যাকরেস্ট নেই, যেটির প্রয়োজন ছিলো।
ফুটরেস্ট
চালকের জন্য সামনে লম্বা এবং চওড়া ফুটরেস্ট বা পাদানি রয়েছে। লম্বা পথ পাড়ি দেবার জন্য আরামের সাথে বসার উপযোগী করেই ফুটরেস্টটি তৈরী। ঘরের মেঝেতে চেয়ারে বসে পা রাখার অনুভতি দিবে এই ফুটরেস্ট। আকারে বড় হওয়াতে যে কোন সাইজের জুতো অনায়াসেই বসতে পারবে। যদিও পেছনের পিলিয়নের জন্য ব্যবহৃত ফুটরেস্টটি একদম সাধারন এবং গতানুগতিক।
জ্বালানী ট্যাংক
সীটের দিকে সরু হওয়া এবং সামনের দিকে চওড়া ডিজাইনের জ্বালানি ট্যাংকটি ১৫লিটার জ্বালানি ধারনে সক্ষম। যা দিয়ে অনায়াসেই ৬০০+কিমি পথ পাড়ি দেয়া যাবে। কালো ম্যাট রং এর ট্যাংকির মাঝে বড় আকারের ক্রোম করা ঢাকনা এবং তাতে লাগানো রয়েছে ফুয়েলগজ। এই অংশটুকু ক্রুজারটির ডিজাইনে ভিন্ন মাত্রা এনে দিয়েছে।
ইনজিন
ক্রুজার বাইকের ইনজিনের বৈশিষ্ট্যই হলো তার শক্তি। শক্তিশালী ইনজিন ব্যবহার করা হয় দীর্ঘপথ পাড়ি দেবার জন্য। কিন্তু বাংলাদেশে সিসি সীমাবদ্ধতা থাকায় ইনজিনটি ১৫০সিসি যা ১২হর্সপাওয়ার শক্তি এবং ১১এনএম টর্ক উৎপন্ন করতে পারে। যা আপনাকে অনায়াসেই ১২০কিমি/ঘন্টা গতি দিবে।
ইলেক্ট্রিক্যাল
ক্রুজারটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১২ভোল্ট ব্যাটারী। যেটি ইলেক্ট্রিক স্টার্ট ছাড়াও প্রয়োজনীয় অন্যান্য জায়গায় ব্যবহার করা হয়েছে। দুই হাতে ব্যবহৃত সুইচগুলো গতানুগতিক মোটরসাইকেল থেকে বড় এবং মজবুত। চালক খুবই আরামের সাথে সুইচগুলো ব্যবহার করতে পারবে।
হেডলাইট ও আলো
সামনে গোলাকৃতি বড় হেডলাইট রয়েছে। যার পেছনে কালো এবং সামনের অংশে ক্রোম করা। হেডলাইটটি পর্যাপ্ত উজ্বল আলোর জোগান নিশ্চিত করে বলেই রাতের আধারে লং রাইডে চালককে সমস্যায় পড়তে হবে না।
মিটার কনসোল
সামনের জোড়া মিটার কনসোল গোলাকৃতি এবং এনালগ। রয়েছে স্পীডোমিটার, অডোমিটার, ট্রিপ মিটার এবং আরপিএম মিটার। মিটার কনসোলটি সাধারন এবং শতভাগ ক্রুজারসুলভ। পুরোটা জুড়েই রয়েছে ক্লাসিক ভাব।
সাসপেনশন
ক্রুজারটির সামনে টেলিস্কোপিক ফর্ক এবং পেছনে কয়েল স্প্রীং ডুয়েল সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। লং রাইডে এবং বিশেষকরে একটু বেশি ওজনের চালক বা পিলিয়নের জন্য পর্যাপ্ত আরামদায়ক। ঝাকুনিরোধ, ব্রেকিংয়ে সুবিধা জোগানে সমান পারদর্শী। পেছনের সাসপেনশনটি পুরোটাই ক্রোম করা হওয়ায় কালোর জমিনে সহজেই দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।
টায়ার ও হুইল
টায়ার বেশ মোটা। সামনে ১১০মিমি এবং পেছনের টায়ার ১৩০মিমি। যে সকল বাইকার মোটা চাকা পছন্দ করেন তাদের খুব সহজেই ভালো লেগে যাবে। সামনের হুইল ১৬ইঞ্চি এবং পেছনে ১৫ইঞ্চি।
ব্রেক
KEEWAY Superlight 150 ক্রুজারটির সামনে রয়েছে বড় এবং শক্তিশালী ডিস্ক ব্রেক এবং পেছনে ড্রাম ব্রেক। মোটা চাকা এবং ১৩৪কেজি ওজন থাকায় যেকোন পরিস্থিতিতে খুব সহজেই মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রনে আনা সম্ভব।
পরিশেষে
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবচেনায় মোটরসাইকেলটি ক্রুজারপ্রেমীদের সহজেই ভালো লেগে যাবে। ডিজাইন, বৈশিষ্ট্য এবং সুবিধা বিবেচনায় মোটরসাইকেলটি দামের সর্বোচ্চ ব্যবহার হবে বলেই আশা করা যায়।