চলাচল করার জন্য বাইক একটি যুগান্তকারী বাহন।বাইকের কারনে এখন আমরা অনেক কম সময়ে এবং সহজে যাতায়াত করতে পারি।আমার বাইকের ওপর ঝোঁক অনেক আগে থেকেই এবং বাইক নিয়ে ঘুরতে অনেক ভালো লাগে তাই আমি অনেক আগেই বাজাজ কোম্পানির ডিসকভার ১০০ সিসি বাইকটি কিনেছিলাম এবং তার বেশ কিছু দিন পর আমি ডিসকভার ১২৫ সিসি বাইকটি কিনি এবং ব্যাবহার করতে থাকি।হঠাৎ করে আমার চোখে পড়ে কিওয়ে কোম্পানির সুপারলাইট ১৫০সিসির বাইকটি এবং আউটলুকটি আমার নজর কেড়ে নেয়। আমি কিছু দিনের মধ্যে বাইকটি কিনে ফেলি এবং পাঁচ মাস যাবত বাইকটি ব্যাবহার করছি এই পাঁচ মাস এ আমার কিছু ভালো ও খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছে।আমি মোঃ শাহনেওয়াজ আলী পেশায় একজন চাকুরিজীবি আজকে মটরসাইকেল ভ্যালীর মাধ্যম দিয়ে আপানদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো আমার ব্যাবহারের অভিজ্ঞতা।প্রথম বারের মতো আপানাদের সামনে আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি তাই ভুলত্রুটি হলে ক্ষমার চোখে দেখবেন।
ইঞ্জিনঃ
বাইকটির ইঞ্জিন অনেক শক্তিশালী এবং স্মুথ কিন্তু মাঝে মাঝে আমি স্মুথ ফিল করি না।অনেকক্ষণ চালানোর পর ইঞ্জিন তেমন গরম হয়না তবে থামার পর কট কট শব্দ করে।আমি কয়েকবার অনেক দূর পর্যন্ত গেছি সেই ক্ষেত্রে আমি লক্ষ করেছি বাইকের শব্দ একটু বদলে যায় কেমন যেন খসখসে শব্দ করে যেটি আমার কাছে ভালো লাগনি। তবে আমি ইঞ্জিন কোয়ালিটি নিয়ে অনেক খুশি এবং ভালোই পারফমেন্স পাচ্ছি।
ডিজাইন ও বিল্ড কোয়ালিটিঃ
বাইকটির ডিজাইন আমার কাছে মনমুগ্ধোকর লেগেছে। মুলত ডিজাইনের কারনে বাইকটি আমার কেনা। বিশেষ করে যদি বলতে হয় বাইকটির আউতলুক অনেক ভালো এবং দুর্দান্ত। বাইকটির বিল্ড কোয়ালিটি অনেক ভালো।তবে কিছু পার্টসের কোয়ালিটি তেমন ভালো লাগেনি আমার কাছে তবে বডির পার্টস গুলো মজবুত আছে।সব মিলিয়ে ডিজাইন ও বিল্ড কোয়ালিটি বেশ ভালো মনে হয়েছে আমার কাছে।
কন্ট্রোল ও কম্ফোরটঃ
বাইকটির কম্ফোরট নিয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই আমি অনেক আরামের সাথে বাইকটি ব্যাবহার করছি। বাইকটির সীটের কোয়ালিটি অনেক ভালো এবং নরম।ক্রুজার বাইক হওয়াই সীট একটু নিচু তাই মাটিতে পা পেতে কোন সমস্যা হয়না।আমি বাইক নিয়ে বেশ কয়েক বার দুরের পথ পাড়ি দিয়েছে সেই ক্ষেত্রে আমি কোন রকম পেইন ফিল করিনি। অনেক ক্ষণ চালানোর পরও হাতে পায়ে ঝিঝি ধরেনি।বাইকটির সুইচ গুলো একটু অন্য রকম তাই প্রথমে ব্যাবহার করতে একটু কষ্ট হয়েছিলো এখন তেমন সমস্যা হয়না এব এবং সুইচ এর কোয়ালিটি অনেক ভালো।আমি একজন চাকুরিজীবি তাই বাইকটি রাতের বেলাই বেশি চালানো হয়। রাতের বালাই বাইক চালাতে হলে হেডল্যাম্প অনেক গুরুত্বপূর্ণ।বাইকটির হেডল্যাম্পের আলো নিয়ে আমি যথেস্ট সন্তুষ্ট এবং আলো অনেক দূর পর্যন্ত ছড়ায় তাই দুরের জিনিস গুলো অনেক সহজে লক্ষ করা সম্ভব হয়। বাইকটির কন্ট্রোল অনেক ভালো এবং আমার কাছে অসাধারন মনে হয়েছে। আমি সর্বচ্চো গতি তুলেছি ৮০ কিলোমিটার এর মাঝে আমি বাইকটিকে অনেক সহজে কন্ট্রোল করতে সক্ষম হয়েছি।জরুরি সময় গুলোতে বাইকটি আমাকে অনেক ভালো কন্ট্রোল দিচ্ছে।আমি লক্ষ করেছি হতাৎ করে ব্রেক করলে পেছনের চাকা কখনই স্লিপ করেনা বরং মাটি আকড়ে ধরে এই বিষইয়টি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। বাইকটির আর একটি ভালো দিক হলো সাসপেন্সন।আমি যখন খারাপ রাস্তায় বাইকটি চালাই আমি খুব অল্প ঝাঁকুনি ফিল করি।বাইকটির সাসপেন্সনের কারনে আমি অনেক আরামদায়ক ভাবে বাইকটি চালাতে পারি।পরিশেষে আমি মনে করি বাইকটির কন্ট্রোল অনেক ভালো এবং কম্ফোরট বেশ আরামদায়ক।
মাইলেজ ও সার্ভিসঃ
আমি যখন বাইকটি কিনি সেই সময় শো-রুম থেকে বলা হয়েছিলো ৫০ কিলোমিটার মাইলেজ পাবো আমি এখনও পর্যন্ত মাইলেজ মাপি নাই। তাবে ক্রুজার বাইক হিসেবে আমার মনে হয় যতটুকু পাচ্ছি অনেক ভালো পাচ্ছি।আমি অনেক বার সার্ভিসিং সেন্টারে গেছি তবে তাদের ব্যাবহার অনেক ভালো কিন্তু দক্ষ কোন টেকনিশিয়ান না থাকার কারনে বাইকের সার্ভিস ভালো হয়না কয়েকদিন পর আবার নিয়ে যাওয়া লাগে এবং মালামাল গুলো সহজে পাওয়া যায়না।
দাম ও সব মিলিয়েঃ
আমার কাছে বাইকটির দাম একদম ঠিক মনে হয়েছে কারন আমি যেমন পারফমেন্স পাচ্ছি সেই দিক বিবেচনা করলে দাম একদম সঠিক।আমার কাছে বাইকটি অনেক প্রিয় এবং আমি বাইকটির সব কিছু নিয়ে অনেক সন্তুষ্ট। তবে কোম্পানির কাছে আমার পরামর্শ আছে যেমন, তাদের সার্ভসিং সেন্টারের মান আর উন্নত করতে হবে , মালামাল গুলো সহজল্ভ্য করতে হবে।
ভালো দিকঃ চমতকার ডিজাইন, শক্তিশালী ইঞ্জিন, সহনীয় দাম
খারাপ দিকঃ পাস লাইট নেই, গ্র্যাব রেইল ধরতে কষ্ট হয়, গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স কম