প্রায় ১.৫ বছর যাবত আমি এই কেটিএম আরসি ১২৫ বাইকটা ব্যবহার করছি এবং বলতে গেলে আমার কেটিএম বাইকটা বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম দিকের কেটিএম বাইকের সারির মধ্যে পরে কারন যখন বাংলাদেশে প্রথম কেটিএম বাইক আসা শুরু করে তখন আমি এই বাইকটা কিনেছি। এখন এই বাইকটা আমাদের দেশে আরও জনপ্রিয় এবং তরুণদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে।
যখন আমি এই বাইকটা কিনি তখন বলতে গেলে ভাইরাল একটা বাইক ছিলো আমি বিভিন্ন সোশাল মিডিয়াতে এই বাইকটা দেখি এবং আমার চোখের সামনে এই বাইকটা বার বার চলে আসে তাই বাইকের এই মায়া ত্যাগ করতে না পেরে শেষমেশ কিনেই ফেলি আমার ও সকলের পছন্দের কেটিএম আরসি ১২৫। এই বাইকটা কেনার পর আমি মোট রাইড করেছি ১০ হাজার কিলোমিটার। আমার এই ১০ হাজার কিলোমিটারের মধ্যে এই বাইক থেকে কি কি সমস্যা পাচ্ছি এবং ভালো কি কি পাচ্ছি সেগুলো আপনাদের সাথে আজ শেয়ার করবো।
প্রথমেই আমি বলবো যে আমার এই বাইকের ব্রেকিং খুবই ভালো। এই ব্রেকিং এর জন্য আমি অনেক দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছি এবং এই বাইকের প্রধান সুরক্ষা কবজ হচ্ছে এই ব্রেকিং । আমি অনেক সন্তুষ্ট এই বাইকের ব্রেকিং নিয়ে এবং আশা করি এই ব্রেকিং আমি যতদিন বাইক চালাবো ঠিক এই ভাবেই সাপোর্ট দিয়ে যাবে।
ডিজাইনের দিক দিয়ে তো মাশা আল্লাহ অনেক সুন্দর ডিজাইন। আমি এই বাইকের ডিজাইন থেকে প্রথমে আকৃষ্ট হই তারপর আমি বিভিন্ন সোশাল মিডিয়াতে দেখি যেটা শুরুতেই বলেছি তো সব মিলিয়ে আমার কাছে বাইকের ডিজাইন অনেক অনেক প্রিমিয়াম লেগেছে এবং এই ডিজাইনে আমি সন্তুষ্ট।
ইঞ্জিনের দিক থেকেও আমি অনেক শক্তিশালী অনুভব করেছি। বাইকের ইঞ্জিন ১২৫ সিসি হলেও তার শক্তি এবং এক্সেলেরেশন ১৫০ সিসি বাইককে টেক্কা দেওয়ার মত। আমি এই বাইকের ইঞ্জিন থেকে খুব ভালো পারফরমেন্সও পাচ্ছি। যে কোন রাস্তায় আমি ইঞ্জিনের পারফরমেন্স খুব ভালো অনুভব করি।
বাইকের করনারিং আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে এবং কর্নারিং করার সময় ব্যাল্যান্স অনেক ভালো থাকে। এই বাইক নিয়ে আমি অনেকবার খুব ভালোভাবে কর্নারিং করেছি এবং সেই অভিজ্ঞতাটাও অনেক ভালো পেয়েছি।আসোলে এই বাইকের বডি গঠনের সাথে কর্নারিং স্ট্যাবিলিটি অনেক ভালো করেছে।
আমি এই বাইকের ২টা মন্দ দিক আপনাদের বলছি ,প্রথমটা হল এই বাইক নিয়ে লং রাইড করলে অনেক ব্যাক পেইন অনুভব হয়। আমি জানিনা অন্যান্য রাইডার ভাইয়েরা কেমন অনুভব করেন কিন্তু আমার কাছে লং রাইডে অনেক ব্যাক পেইন অনুভুত হয়। দ্বিতীয় যে মন্দ বিষয়টি সেটি হল এই বাইকের মাইলেজ অনেক কম। আমি শহরের মধ্যে মাইলেজ পাই ২০ কিমি প্রতি লিটার এবনহ হাইওয়েতে মাইলেজ পাই ২৫ কিমি প্রতি লিটার। মাইলেজ নিয়ে আমি খুবই হতাশ কারন এই মাইলেজ বাইক থেকে পাওয়া গেলে সেটা অনেক কষ্টকর।
আমি একদিনে এই বাইক নিয়ে মোট রাইড করেছি ৩৯০ কিমি সেটা ছিলো গাজিপুর থেকে খুলনা । এই লং রাইডে আমি ব্যাক পেইন বাদে অন্যান্য সব বিষয় থেকে খুব ভালো অভিজ্ঞতা পেয়েছি। আমার কাছে ব্যাক পেইনটা একটু খারাপ লেগেছে। ১২৫ সিসির এই ইঞ্জিন থেকে আমি টপ স্পীড পেয়েছি ১২০ কিমি এবং আরও উঠানো সম্ভব ছিলো কিন্তু আমাদের দেশের রাস্তায় ওভার স্পীডিং এর জন্য না।
সব মিলিয়ে বাইক হিসেবে আমার কাছে কেটিএম আরসি ১২৫ খারাপ লাগেনি তবে এর মাইলেজ এবং ব্যাক পেইন আমাকে একটু সমস্যার মধ্যে রাখে। আপনারা যারা কিনবেন তারা এই সমস্যাটা নাও পেতে পারেন। ধন্যবাদ সবাইকে ।