মোটরসাইকেল যেমন মানুষের চলার পথকে সহজ করে দিয়েছে ঠিক তেমনিভাবে রাইডিং এ নিয়ে এসেছে অনাবিল আনন্দের ছোঁয়া। শহরের তীব্র জ্যাম এবং সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য বর্তমানে বেশি মোটরসাইকেলের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। যাদের মোটরসাইকেল রয়েছে তারা খুব সহজেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলাচল করতে পারে এমনি মোটরসাইকেল নিয় দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়ানোর প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে বর্তমানে মোটরসাইকেল বাজারে বিভিন্ন ব্রান্ডের মধ্যে ব্যাপক প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়। জাপানি ও ইন্ডিয়ান ব্যাণ্ডের পাশাপাশি চাইনিজ ব্র্যান্ড গুলো বেশ ভালো ক্রেতা সন্তুষ্টি অর্জন করছে। এ সকল চাইনিজ ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ব্র্যান্ড হলো লিফান। লিফান বাংলাদেশের রোড কন্ডিশন এবং গ্রাহকদের চাহিদা অভিরুচি অনুসারে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোটরসাইকেল বাজারে নিয়ে এসেছে। এ সকল বাইকের মধ্যে ১০০ সিসির কমিউটার একটি বাইক হল লিফান গ্লিন্ট ১০০ । সুন্দর ডিজাইন, লম্বা সিটিং পজিশন সব মিলিয়ে কমিউটার বাইকের সকল বৈশিষ্ট্য ধরে রেখেছে লিফান গ্লিন্ট। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক তাদের এই বাইকটিতে কি কি ফিচারস রয়েছে ।
ডিজাইন
লিফান গ্লিন্ট ১০০ সিসির এই মোটরসাইকেলটি খুব সুন্দর ও মার্জিত ডিজাইন রয়েছে। মোটরসাইকেলটির বিশেষ আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে এর ইঞ্জিনটা দেখতে অনেক বড় এবং এটা ডিজাইনে ভিন্ন একটি আউটলুক এনে দিয়েছে। এছাড়াও সুন্দর কালার কম্বিনেশন, গ্রাফিক্স, এলয় রিম, সামনের ডিস্ক ব্রেক, মোটা আকৃতির হেডল্যাম্প এসব কিছু ডিজাইন্টাকে আরও সুন্দর করে তুলেছে। মোটকথা ১০০ সিসির কমিউটার বাইক হিসেবে লিফান গ্লিন্ট অনেক সুন্দর ডিজাইন ধরে রেখেছে।
ডাইমেনশন
ডাইমেনশন নিয়ে বলতে গেলে লিফান গ্লিন্টের রয়েছে লম্বায় ২০৫৭ মিমি, চওড়ায় ৭৩৬ মিমি এবং উচ্চতায় ১২৭০ মিমি । এদিকে হুইল বেজ রয়েছে ১২৭০ মিম, গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৫২ মিমি এবং ১২ লিটার তেল ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ফুয়েল ট্যংকার রয়েছে যা এর ডাইমেনশনে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। বাইকটির গঠনের দিক দিয়ে কমিউটার বাইকের বৈশিষ্ট্য ধরে রেখেছে বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে কিংবা শহরের রাস্তা বাইকটি দাপিয়ে বেড়ানোর জন্য একদম পারফেক্ট।
ইঞ্জিন
১০০ সিসির কমিউটার বাইক হিসেবে লিফান গ্লিণ্টের ইঞ্জিনে রয়েছে ৯৯ সিসির সিংগেল সিলিন্ডার, এয়ার কুল্ড ইঞ্জিন। এই ইঞ্জিন ম্যাক্স পাওয়ার ৫.৮@৭৫০০ আরপিএম এবং ম্যাক্স টর্ক ৭.৮@৬০০০ আরপিএম । ইঞ্জিন চালু করার জন্য রয়েছে শুধুমাত্র কিক স্টার্ট অপশন এবং ৪টি ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন গিয়ার সিস্টেম রয়েছে। লিফান দাবি করে যে তাদের এই বাইকটি আনুমানিক ৬৫ কিমি প্রতি লিটারে মাইলেজ দিবে। সব মিলিয়ে ১০০ সিসির বাইক হিসেবে বেশ ভালোই ইঞ্জিন বলা যায়।
সিটিং পজিশন
রাইডার এবং পিলিয়নের জন্য রয়েছে আরামদায়ক ফ্যাল্ট সিটিং পজিশন যা পিলিয়ন নিয়ে যে কোনো রাস্তা আরামদায়ক রাইডিং নিশ্চয়তা প্রদান করবে এবং অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় যে ব্রেক করলে পিলিয়ন সামনের দিকে সড়ে আসে কিন্তু এর সিটিং পজিশনটা সমান্তরাল থাকার ফলে পিলিয়ন সামনের দিকে ঝুঁকে আসার প্রবণতা কম থাকে।
ইলেকট্রিক্যাল ও মিটার কনসোল
ইলেকট্রিক্যাল দিকে রয়েছে ১২ ভোল্টের ব্যাটারি। 12V 35-35W এর মোটা ও পরিষ্কার হেডল্যাম্প। সুন্দর দেখতে গোলাকার টেল ল্যাম্প এবং পরিষ্কার ও স্বচ্ছ টার্ন ল্যাম্প। অন্যদিকে মিটার কনসোলে আমারা লক্ষ্য করলে দেখতে পাই সম্পূর্ণ এনালগ এবং এতে রয়েছে স্পীডোমিটার, ফিয়ার ইন্ডিকেটর এবং ফুয়েল ইন্ডিকেটর। কমিউটার বেশীর ভাগ মোটরসাইকেলে আর পি এম মিটারটি কম লক্ষ্য করা যায়। তবে রাইডারের জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছুই রয়েছে মিটার কনসোলটিতে।
টায়ার, সাসপেনশন ও ব্রেকিং
সামনের চাকার পরিমাপ রয়েছে 2.75-17 এবং পেছনের টায়ারের পরিমাপ রয়েছে 3.00-17 । দুটো টায়ারই যে কোনো রাস্তায় আশা করা যায় খুব ভালো পারফরমেন্স দিবে। এদিকে রাইডার যেনো আরামের সাথে বাইকটি রাইড করতে পারে সেজন্য রয়েছে সামনের দিকে টেলিস্কোপিক সাসপেনশন এবং পেছনের দিকে রয়েছে টুইন শক সাসপেনশন । ব্রেকিং এর দিক দিয়ে সামনে ডিস্ক ব্রেক রয়েছে যা বেশিরভাগ ১০০ সিসির কমিউটার বাইকগুলো থাকে না এবং পেছনে ড্রাম ব্রেক রয়েছে। দুটো ব্রেকের খুব সুন্দর কম্বিনেশন লক্ষ্য করা যায়।
শেষ কথা
১০০ সিসির কমিউটার বাইক হিসেবে এই বাইকটি তার বৈশিষ্ট্য ধরে রেখেছে। গ্রামের আকা বাকা রাস্তা কিংবা শহরের ওলি গলিতে এই বাইকটি নিয়ে খুব সহজেই রাইড করতে পারবেন এবং আশা করা যায় বাইকটি পারফরমেন্সের দিক দিয়ে আপনাদের খুব বেশি হতাশ করবে না।