Owned for 3months-1year [] Ridden for 10000km+
Lifan KPR 150 20000 km ride review by Asim Nafis Ador
১৫১০ কিলোমিটার থেকে কেপিআর টি নিয়ে হাইওয়ের যাত্রা শুরু করে এখনও চলছে। যাওয়া হয়েছে বান্দরবান, আলিকদম , কক্সবাজার, সিলেট, বরিশাল, বরগুনা , পটুয়াখালী, রায়েন্দা , শরণখোলা, সাজেক , নোয়াখালী, চিটাগাং, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, খুলনা, বাগেরহাট আরও অনেক জায়গায়...
মোট ২০ হাজার কিলোমিটারে ১৪ হাজার কিলোমিটার চলেছে হাইওয়েতে আর বাকি ৬ কিমি হাজার সিটিতে ।
এইবার আসি এই লম্বা যাত্রায় কিভাবে সাপোর্ট পেয়েছি এই বাইক থেকে আর কি কি পাইনি ।
হেডলাইট
বিল্ড ইন এলিডি প্রোজেকশন । ৩০০০ লুমেন । লো বীম , হাই বীমে অসাধারণ আলো । যতই ফগ লাইট স্পট লাইট , ফ্লাড লাইট ব্যবহার করেছি স্টক লাইট টিই বেস্ট । স্টক সেগমেন্ট এ এতো ভালো আলো Pulsar AS আর KPR ছাড়া অন্য কোন বাইকের নেই । হেড লাইট শিল্ড বা কাভার টা বেশ শক্ত । হার্ড কেজুএলটি ছাড়া ভাঙ্গে না । পার্কিং লাইটটি চোখ ধাঁধানো।
উইন্ডশিল্ড
ক্লিয়ার উইন্ডশিল্ড। 2D ডায়মেনশন কাট । ভালো বাতাস কাটে । লিন ড্রাইভে আই লেভেল এর নিচে থাকে ।
ড্যাশবোর্ড
ড্যাশবোর্ড চওড়া কিটিং করা দেখতে ভালো ।
মিটার
আরপিএম মিডেল এ ডিজিট স্পষ্ট । স্পিডো মিটার ডিজিটাল । ঘড়ি, ট্রিপ রিডিং আছে । ট্রিপ রিডিং ১০০০ এরপর আবার ০ হয়ে যায় । ঘড়ি মাসে ১১ মিনিট স্লো হয়ে যায় আস্তে আস্তে । স্পিড ডিজিট আর একটু বড় হলে ভাল হত । ডিসপ্লে কালার চেঞ্জ করা যায় অরেঞ্জ আর ব্লু ।
ট্যাংক
১৭ লিটার এর হিউজ ট্যাংক। ২ লিটার রিজার্ভ । ট্যাংকের ডিজাইন কাট এজ খুবই সুন্দর । লিন হয়ে বা শুয়ে চালানোর জন্য ভালো সাপোর্ট পাওয়া যায় ।
সীট
রাইডার এর ওকে, পিলিওন সিট বেশ আরামদায়ক । পিলিওন ফুট রেস্ট আর একটু পেছনে হলে ভালো হত । সিটিং পজিশন প্রথম এক সপ্তাহ কষ্ট হয়েছে, পরবর্তীতে আমার এডজাস্ট হয়ে গেছে ।
গ্র্যাব রেইল
এলয় গ্র্যাব রেইল । দুটো গ্র্যাব রেইলে দুই দুই চারটি নটিং বার বা স্পেস আছে, যাতে ব্যাগ বাধার সময় স্ট্রেপ কে নট দেয়া যায় ।
টেইল লাইট
১২ টি ক্লিয়ার এল ই ডি। বেশ দূর থেকে দেখা যায় ।
রিয়ার মাড গার্ড
ম্যাট প্লাস্টিক । ফ্লেক্সিবল । হার্ড কেজুএলটি ছাড়া লকও ভাঙে না ।
ফ্রন্ট সাসপেনশন
ফ্রন্ট সাসপেনশন গুলো খুবই রেসপন্সসিভ, যে কোন ভাঙা গর্তে ফ্রন্ট শকার যথেষ্ট কমফোর্ট রেসপন্স করে । যেই পরিমান অফরোড ভাঙা আর গর্ত হিট করেছি চিন্তার বাহিরে। 90 + স্পীডে হঠাৎ হঠাৎ অর্ধশত স্পীড ব্রেকার হিট করার পরও এখনো একটা ফর্ক সিলের কোন লিক নেই, একটু ফর্ক ওয়েল লিকও করে নাই ।
রিয়ার শক
মনো ক্রস সিঙ্গেল শক। রিয়ার শক ভালো কিন্তু আরাম দায়ক নয়, প্রথম দিকে অনেক হার্ড থাকে, পরবর্তীতে একটু সফট্ হয় । তারপরও এতটা আরাম দায়ক নয়। অফরোডে বা ভাঙা তে খুব একটা আরামদায়ক নয় । কিন্তু অন্যান্য ডুয়েল শকার এর তুলনায় ভাল । হোন্ডা ইউনিকর্ন এর শকার বসানো যায় । কিন্তু আমার কাছে হোন্ডা শকার এর তুলনায় লিফানের স্টক টি বেটার মনে হয়েছে । কারণ হোন্ডার শকার সেট আপের পরে বরং আরো হার্ড মনে হয়েছে । স্পোর্টস বাইকে কমফোর্ট লেভেল একটু কম থাকে সেই বিবেচনায় খারাপ নয় ।
রেসিং বল সেট/বল রেসার
বল রেসার এর কোয়ালিটি অসাধারণ, এত ভাঙা চোড়া দৈনিক যাত্রাবাড়ীর মত অসহনীয় রাস্তা দিয়ে যাতায়াত এর পরও একবারও টাইট লুজ করতে হয় নাই ।
ক্লাচ, এক্সেলেরটর কেবল
কেবল এর ইনার ওয়ার কোয়ালিটি খুবই ভালো । কোন রাস্ট , কোন ভাজ বা ছিড়ার দাগ ছিল না । কিছু দিন আগে লং এ যাবো বলে ১৫০০০ কিলোমিটার এ নিজ প্রয়োজন এ সেফটি ইস্যু চিন্তা করে চেঞ্জ করেছি , পুরনো গুলো যে কেউ আরামে আরও ১০০০০ কিলোমিটার চালাতে পারবে ।
প্লাগ ও এয়ার ফিল্টার
প্লাগ (NGK-R) এর কোয়ালিটি নিয়ে যে কেউ চমকাতে পারেন । ৬০০০ কিলোমিটার এ ইরিডিয়াম লাগিয়ে ছিলাম, ১৫০ কিলোমিটার পরে আবার স্টকে শিফট করেছি। ১০০০০ কিলোমিটারে প্লাগ প্রায় নতুনের মতো ছিল, প্লাগ ইন্ডিয়ান অনেক বাইকের সাথে মিললেও কোম্পানির চাইনিজ টাই বেস্ট পারফর্ম করে । এয়ার ফিল্টার এর কোয়ালিটিও ভালো, এয়ার ফিল্টার ইউনিকর্ন এর সাথে মিলে ।
ব্রেকিং সিস্টেম
এক কথায় ভালো, ফ্রন্ট এর ব্রেকিং একেবারে এফজি এর মত। প্যানিক ব্রেকিং এ চোখ বন্ধ করে ব্রেক কষলেও দেখবেন সুন্দর অন স্পট বাইক দাড়িয়ে গেছে । পেছনের ব্রেকও ভালো, প্রেশার বেশি হলে হালকা স্কিড করে কিন্তু বাইক ব্যালেন্স হারায় না । টায়ার চেঞ্জ করলে এই সামান্য স্কীড ও থাকে না । টায়ার(পিরিলি) আর ব্রেক প্যাড(ফ্রন্ট - RTR , রিয়ার- TRIGGER) চেঞ্জ করলে ব্রেকিং এফজি এর মার্ক এসে দাঁড়ায় ।
ব্রেক প্যাড
টোটাল বাইকের সব থেকে খারাপ দিক হচ্ছে এর স্টক ব্রেক প্যাড । এতটাই হার্ড ছিল যে ৪০০০ কিলোমিটারে ডিস্ক শেষ হয়ে যেত । কাস্টমার এর অভিযোগ এখতিয়ার এ নিয়ে রাসেল ইন্ডাস্ট্রীজ দ্রুত ব্রেক প্যাড এর কোয়ালিটি চেঞ্জ করার প্রত্যাশা দিয়েছে । এখন আর কেউ না ভুগলেও পেছনের ব্রেক প্যাড নিয়ে আমি বেশি ভুক্তভোগী । সামনের ব্রেক পেড R.T.R আর পেছনের ব্রেক পেড TRIGGER এর সাথে মিলে, আগে এটা জানতাম না । অনেকেই বলে ডিস্কের কোয়ালিটি ভালো না তাই ক্ষয় হয়ে যায়, এটা ভুল ধারণা ।
টায়ার
এই বিষয়ে আমি একটু বেশিই খুত খুতে । নির্দিধায় C.S.T. একটি ভালো টায়ার ব্রেন্ড , কিন্তু যে বিটের টায়ার ব্যবহার করছে তা আমাদের দেশের জন্য কোন মতেই যুক্তি যুক্ত নয় । পেছনের টায়ার টি চলে কিন্তু সামনের টায়ার টি আমার কাছে অযৌক্তিক । আমি সামনে পেছনে পিরিলি স্পিড ডেমন ইন্সটল করেছি স্টক সাইজের । টায়ার চেঞ্জের পর পুরো বাইকের ব্যালেন্স আর কন্ট্রোল চেঞ্জ হয়ে গেছে । ব্রেকিং , কর্নারিং , হেন্ডেলিং সব অসাভাবিক হারে ইমপ্রুভ হয়েছে । শুধু দুটো টায়ার পুরো বাইকের পারফরমেন্স ডায়মেনশন চেঞ্জ করে দিয়েছে ।
চেইন সেট
চেইন সেট ভালো কিন্তু ১০০০০ কিলোমিটার চালানোর পর বড় হয়ে যায়, আমার চেইন জোরা বা কাটা কাটি পছন্দ নয় । স্টক চেইন লাগাবো না বলে টেমপোরারি একটা সেপ্মল দেশি চেইন দেয় , যেটা ছেড়ার পর আমি RK SSS 428 চেইন লাগিয়ে নেই যেটা আমার আগেই প্ল্যান ছিল, চেইন টা হাতে পেতে দেরি হচ্ছিল ।
বডি কিট, গ্রিলিং ও প্লাস্টিক
বডি কিট যথেষ্ট শক্ত । পয়েন্ট টু পয়েন্ট গ্রিলিং করা প্রয়োজনীয় জায়গায় নাটের বদলে ছোট স্ক্রু দেয়া নাই । প্লাস্টিক এর কোয়ালিটি যথেষ্ট ভালো এমনকি ইন্ডিয়ান কিছু কিছু বাইকের থেকেও প্লাস্টিক কোয়ালিটি অনেক অনেক ভালো ।
টার্নিং রেডিয়াস
টার্নিং রেডিয়াস অনেক কম । তবে জ্যাম ও মাত্রারিক্ত চিপা গলি ছাড়া সমস্যা হয় না । টার্নিং এ লিন করে চালাতে হয় ।
ব্যাটারি
৯ এম্পিয়ার ১২ ভোল্ট এর শক্তিশালী ব্যাটারি । যেকোনো অবস্থায় এক সেলফ এ স্টার্ট নিতে সক্ষম । ২০+২০=৪০w এর এক্সট্রা লাইট , চার্জার , দুটি হর্ণ এক সাথে সাপোর্ট এ ব্যাটারিতে কোন প্রকার প্রেসার লক্ষ করি নাই ।
লুক
লুক নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই, কেপিআর এর মূল আকর্ষণীয় বিষয়ই লুক আর পারফরমেন্স ।
ইঞ্জিন
ইঞ্জিন খুবই একটা সেনসেটিভ বিষয় যে কোন বাইকের ক্ষেত্রে । এক কথায় এই টাকায় কেপিআর এর ইঞ্জিনে একটা বিস্ট ফিল আছে। জি বিস্ট এই ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে একটু ভদ্র ভাষা হয়ে যায় । লিফান ও রাসেল ইন্ডাস্ট্রীজ এর ক্লেইম অনুযায়ী এটা 14.8 bhp এর ইঞ্জিন কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে এর bhp আরো অনেক বেশি ।
বিশ হাজার কিলোমিটার এর মধ্যে সাজেক টুর এর পর পনের হাজার কিলোমিটার এ টেবিট-টাইমিং মেলানোর জন্য শুধু একবার হেড কাভার খোলা ছাড়া কোন নাটে রেঞ্জ ও ধরাতে হয়নি । এখানোও ক্লাচ পেল্ট সম্পূর্ণ সুস্থ আছে ।
গিয়ার শিফটিং ৩০০০-৫০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হার্ড , এর পর সামান্য সফট হয়ে অনেকটা IPL HUNK এর মত হয়েছে । পরবর্তীতে খেয়াল করলাম শিফটার রডে একটা এডজাস্টার আছে, এডজাস্টার টা টাইট দেয়ার পর গিয়ার ফুল স্মুথ হয়ে গিয়েছে । আমার মতে এটা রাসেল ইন্ডাস্ট্রিড এর এসেম্বলি লাইনের ভুল, তারা এই বিষয় টি মোটেও মনে হয় খেয়াল করে না, অযথাই হার্ড শিফটিং নিয়ে অনেক দিন কষ্ট করলাম ।
ইঞ্জিন পারফরমেন্স একেবারে ক্ষুধার্ত জানোয়ার এর মত । থ্রোটল টুইস্ট করতে দেরি সাড়ে তিন হাত গ্যাপে ও.টি. মারা যায় চোখের পলকে । বাংলাদেশে লিগ্যাল ১৫০ সেগমেন্টের কোন এয়ার কুল্ড ইন্ডিয়ান/চাইনিজ বাইক কেপিআর এর টেইল লাইট দেখতেও সক্ষম নয় । 3RD গিয়ারেই নক আউট হয়ে যায়, শুধুমাত্র পালসার এএস টাফ কম্পিটিশন দেয় । উভয়ের টপ 137/137 . কম্প্রেশন ও BHP রেশিও এর কারণে টাফ কম্পিটিশন এর সৃষ্টি হয় । উক্ত বিষয়ে কোন প্রকার সন্দেহ নেই এবং আমি নিজে প্রমাণিত । এছাড়া সিবিআর, R15 ও অন্যান্য 150 সিসি হাই পারফরমেন্স বাইককে টপে ওভারটেক করা যায় না, এমন কি ১২০ এর পর সমান সমান ও থাকা যায় না । যদি এতে কেউ দ্বিমত পোষণ করে তাহলে সেটা চরম মিথ্যা কথা । তবে ১৩০ পর্যন্ত এদের পেছনে পেছনে আরামে থাকা যায় । পিস্টনের ঠিক কানেক্টিং এর পাশ দিয়ে একটা ইঞ্জিন লুব ইনজেকটর আছে যেটা হাইয়ার আরপিএম এ কোনাকুনি পিস্টনের নিচে লুব স্প্রে করে ।
যে কোন গিয়ারে আরপিএম ১১৫০০ পর্যন্ত নেয়া যায়, কেপিআর এর CDI তে আরপিএম ও স্পিড লক নেই । এভারেজ টপ 137 KMPH , কখনো কখনো 141 KMPH যেটা পারিপার্শিক পরিবেশ ও বাইকের কন্ডিশন , ইঞ্জিন লুব , ফুয়েল , রোড ও বাতাসের উপর নির্ভর করে ।
তেল খারাপ পরলে বাইক ধাক্কায় না, ঘন ঘন স্টার্ট বন্ধ হয় না । কিন্তু এক্সেলারেশন ও টপ কমে যায় ।
সামনের স্প্রকেট ছোট করলে হান্ক এর 14 বসিয়ে আন্ডার গিয়ার করলে 9000 RPM এ 112 KMPH @ TOP GEAR
আর স্টকে 9000 RPM এ 120-125 KMPH @ TOP GEAR .
প্রথম পাওয়ার দেয় 5000-9000 Rpm পর্যন্ত, পরবর্তী পাওয়ার দেয় 10000-11500 Rpm পর্যন্ত ।
6th গিয়ারেও চিন্তাতীত পাওয়ার সপ্লাই করে ।
কুলিং সিস্টেম
ডুয়েল পার্ট রেডিওটর । সিঙ্গেল Panasonic এর ফ্যান । সারা বাইকে এক মাত্র পার্টস যেটা মেড ইন জাপান । কুলিং সিস্টেম পারফেক্ট কাজ করে । রিজার্ভ ট্যাংক পিলিওন সিটের নিচে । কিন্তু অনেক সময় একাধারে জ্যামের রোডে চালালে অনবরত 15 সেকেন্ড এর বিরতিতে কুলিং ফ্যান চলে ইঞ্জিন তাপমাত্রা সহনীয় হলেও ট্যাংক গরম হয়ে যায় । যেটা আবার 2 মিনিটের ফ্রি রোড পেলে সেই গরম ভাপ টা চলে যায় । হাইওয়েতে একটানা 260 কিলোমিটার চালানোর পরও ইঞ্জিন হাত দিয়ে ধরে দেখছি, হাতে সহনীয় তাপমাত্রা ।
ওয়ারেন্টি এন্ড রিপ্লেস
ওয়ারেন্টি এন্ড রিপ্লেস নিয়ে রাসেল ইন্ডাসট্রীজ বেশ একটিভ । এতে কোন সন্দেহ নেই । যে কোন ওয়ারেন্টি ক্লেইম করার পর গ্র্যান্টেড/যুক্তিযুক্ত হলে সর্বোচ্চ পরের দিনের মধ্যেই রিপ্লেস পেয়েছি । অনেকে দেখলাম সেই দিনই পেয়ে গেছে। আমি দুটি ওয়ারেন্টি ক্লেইম করে ছিলাম ১. মিটার: ১৮০০ কিলোমিটারে আরপিএম মিটার হঠাৎ হঠাৎ আটকে যেত ২. পেছনের ডিস্ক , একটু এক জায়গায় একটা কাট ঠিক ছিল না আওয়াজ করত । দুটোই পরের দিন চেঞ্জ ।
সার্ভিস এন্ড স্পেয়ার্স
রাসেল ইন্ডাসট্রীজ এর লালমাটিয়ায় মেইন সার্ভিস সেন্টার । চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেখিয়ে বলতে পারবো বাংলাদেশের অনেক অনেক বড় বড় বাইক কোম্পানির এমন একটা রেসপন্সসিভ, একটিভ ও এক্সপার্ট সার্ভিস টিম নেই । অন্যদের মত অনেক আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই কিন্তু এর পরেও ঐসব আধুনিক যন্ত্রপাতি ওয়ালা বড় বড় কোম্পানি এদের কাজ ও কাজের গতি ও পারফেকশন দেখলে লজ্জা পাবে। মাঝে মেকানিক্সরা বেশ গা ছাড়া ভাবে কাজ করত, আমিও দু দিন ভুগেছি । এনিয়ে বেশ হৈ হুল্লোড় পর এখন দেখলাম আবার মেকানিক্সরা পুরোপুরি সোজা হয়ে গিয়েছে ম্যানেজমেন্ট এর চাপে। প্রয়োজন ছাড়া অযথা স্পেয়ার্স চেঞ্জ করার ডিমান্ড করে না । বাহির থেকে ব্রেক সু কিনে তাদের কাছে চেইন্জ করতে গেলেও কোন চার্জ নেই । সার্ভিস চার্জ ফ্রি । আঁটটি ফূল সার্ভিস ফ্রি ।
এরা কাস্টমার এর জবকার্ড কমপ্লেইন অনুযায়ী কাজ করে। সিরিয়াল অনুযায়ী ও ছোট বড় কাজ অনুযায়ী কাজ করে । যেমন ব্রেক পেড ফিল্টার, চেক আপ আগে ছাড়ে । ইঞ্জিন ঘটিত বিষয় ধীরে সুস্থে সময় নিয়ে করে ।
স্পেয়ার্স এভেলেবল। হঠাৎ কখনো শর্ট পরলেও পরবর্তী দিনই ফেক্টরি থেকে ব্যাকআপ এর ব্যাবস্থা করে । কোন স্পেয়ার্স পরিবর্তন এর প্রয়োজন হলে, সার্ভিস টীম ইঞ্জিনিয়ার এর পরামর্শ নেয়। স্পেয়ার্স এর দাম আকাশ চুম্বি না । অন্যান্য বাইকের মত নরমাল দাম ।
সারমর্ম
সর্বশেষে ব্রেক প্যাড টায়ার বাদে অন্যান্য সমস্যা গুলো আমার কাছে তুচ্ছ বিষয় । যে গুলো কে সমস্যার কাতারে ধরা যায় না কারণ এই ধরনের ল্যাকিংস্ সব বাইকেই কম বেশি থাকে । থাই সিবিআর এর ও চেইন কিট সেট আমাদের দেশের জন্য ভালো না, সবাই নিজে আপগ্রেড করে নেয় ।
ব্রেক প্যাড ও টায়ার আপগ্রেড করার পর এই মূল্যে এই ধরণের শক্তিশালী ইঞ্জিন ও অসাধারণ পারফরমেন্স এর জন্যে সামান্য কমফোর্ট আমি বিসর্জন দিতে রাজি । তবে গিয়ার শিফটিং নিয়ে রাসেল ইন্ডাস্ট্রীজ কে একটা R&D করার এবং আফটার এসেম্বলি Q&C কে আরেটু কঠোর অবস্থানে নেয়ার জন্য অনুরোধ করছি। তাহলে যে সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয় গুলো আমি ঠিক করে নিয়েছি সে গুলো নিয়ে পরবর্তী ক্রেতাদের কোন ঝামেলায় জড়াতে হবে না, কোন কমপ্লেইন ও থাকবে না । আমি লোকাল মেকানিক্স এর সাহায্যে দশ মিনিটে গিয়ার শিফটিং এর সমস্যার সমাধান করতে পারলে তারা এটা আরও স্মুথ করতে পারবে ।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু সমস্যা/প্রশ্ন ও তার সমাধান
*** ট্যাংক প্রচন্ড হিট হয় ।
> রেডিয়েটর ফিন ভেন্ট পরিস্কার রাখুন, আরপিএম 1000 এ রাখুন । দিনে এক দু'বার স্টার্ট বন্ধ হতে পারে কিন্তু ট্যাংক গরম হবে না গ্যারান্টি । কুলেন্ট ক্যাস্ট্রোল বা মটুল ব্যবহার করতে পারেন । জ্যাম এ এই সমস্যা বেশি হয় সিগনাল এ ইঞ্জিন অফ রাখুন ।
*** টায়ার ব্যালান্স নিয়ে দ্বিধায় আছি।
> স্টক সাইজের ভালো ব্রেন্ড এর টায়ার লাগান, তবে অবশ্যই স্পোর্টস বিট বা ইনার কাট সেগমেন্ট এর টায়ার লাগাবেন । আমি পিরিলি ব্যবহার করছি । টায়ার চেঞ্জ এর পর ব্যালেন্স, কনট্রোল, কর্নারিং বেশ আপগ্রেড হয়েছে । তবে টপ কমেছে ।
*** ব্রেকিং সমস্যা / ডিস্ক প্রবলেম ।
> ব্রেকিং এর সর্বধরনের সমস্যার সমাধান ও আপগ্রেড করতে উভয় ব্রেক পেড চেঞ্জ করুন । সামনে RTR পেছনে TRIGGER. সামনের ডিস্ক KAWASAKI NINGA 300 এর সাথে আর পেছনের ডিস্ক TRIGGER সাথে মিলে।
*** কোন ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করব?
> যে কোন ভালো ব্র্যান্ড এর 4T ইঞ্জিন ওয়েল । মিনারেল হলে 20W40 আর সিন্থেটিক হলে 10W40 । সিন্থেটিক এ মবিল রেসিং এর থেকে মটুল 7100 তে ভালো পারফরমেন্স পেয়েছি । তবে সিন্থেটিক এ ইঞ্জিন সাউন্ড একটু ফাটা লাগে মিনারেল এর তুলনায় ।
*** গিয়ার শিফটিং হার্ড ।
> শিফটার আর গিয়ার শ্যাফট এর মাঝে একটা এডজাস্টেবল সেটাকে টাইট করলেই হবে । উভয় দিক থেকে দুই প্যাচ গ্যাপ বা তিন দুই গ্যাপ দিলেই বিষয়টি সমাধান হয় ।
*** ভাঙা রোডে ঝাকি লাগে ।
> টায়ার প্রেসার সামনে 25 পেছনে 35 করুন । ঝাকি খুব একটা টের পাবেন না ।
*** চেইন চেঞ্জ করব ।
> RK SSS 428 (128L) এর চেইন ব্যবহার করতে পারেন । 420 ও ব্যবহার করতে পারেন 428 একটু মোটা । চেইন কেপিআর এর একটা গুরুত্বপূর্ন বিষয় । সব সময় চেইন লুব করে রাখবেন ।
*** রিয়ার সাসপেনশন
> TRIGGER টা বসে তবে আমার কাছে স্টক টাই ভালো মনে হয়েছে । রেসপন্স কম মনে হলে এক স্টেপ হাই করে দেখতে পারেন ।
*** প্লাগ
> স্টক টা বেশ ভাল । তবে কেউ চাইলে ইরিডিয়াম বা RTR এর প্লাগ ব্যবহার করতে পারেন ।
সবাই সাবধানে বাইক চালাবেন ।
লেন চেঞ্জ এর আগে লুকিং গ্লাস ও ইন্ডিকেটর ব্যবহার করুন ।
সবসময় সামনের থাকা যানবাহনের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখুন ।
শুধু হেলমেট পরিধান করবেনই না হেলমেট এর স্ট্রাইপ/বেল্ট লক করুন ।
ধন্যবাদ