Yamaha Banner
Search

English Version
2016-10-28
Owned for 3months-1year   []   Ridden for 10000km+

Lifan KPR 150 20000 km ride review by Asim Nafis Ador


Lifan KPR 150 20000 km ride review by Asim Nafis Adorফেব্রুয়ারি মাসে রাসেল ইন্ডাসট্রীজ থেকে KPR টি কিনি। ব্রেক ইন এর নির্দেশনা ছিল ৩ হাজার কিলোমিটার । আমি ১৫০০ কিলোমিটার এ ব্রেক সমাপ্তি দেই নিজ দায়িত্বে । প্রথম ৩০০ কিলোমিটারে প্রথম ইঞ্জিন লুব ড্রেইন, পরবর্তীতে ১০০০ কিলোমিটারে ইঞ্জিন লুব ড্রেইন। ১৫০০ কিলোমিটারে সিন্থেটিক Mobil 1 Racing 4T . প্রতি ১৫০০ কিলোমিটারেও চেঞ্জ করতাম । পরবর্তীতে Motul 7100 10w40 তে শিফট করে প্রতি ২৫০০ তে ড্রেন দিচ্ছি ।

১৫১০ কিলোমিটার থেকে কেপিআর টি নিয়ে হাইওয়ের যাত্রা শুরু করে এখনও চলছে। যাওয়া হয়েছে বান্দরবান, আলিকদম , কক্সবাজার, সিলেট, বরিশাল, বরগুনা , পটুয়াখালী, রায়েন্দা , শরণখোলা, সাজেক , নোয়াখালী, চিটাগাং, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, খুলনা, বাগেরহাট আরও অনেক জায়গায়...
মোট ২০ হাজার কিলোমিটারে ১৪ হাজার কিলোমিটার চলেছে হাইওয়েতে আর বাকি ৬ কিমি হাজার সিটিতে ।

এইবার আসি এই লম্বা যাত্রায় কিভাবে সাপোর্ট পেয়েছি এই বাইক থেকে আর কি কি পাইনি ।

হেডলাইট
বিল্ড ইন এলিডি প্রোজেকশন । ৩০০০ লুমেন । লো বীম , হাই বীমে অসাধারণ আলো । যতই ফগ লাইট স্পট লাইট , ফ্লাড লাইট ব্যবহার করেছি স্টক লাইট টিই বেস্ট । স্টক সেগমেন্ট এ এতো ভালো আলো Pulsar AS আর KPR ছাড়া অন্য কোন বাইকের নেই । হেড লাইট শিল্ড বা কাভার টা বেশ শক্ত । হার্ড কেজুএলটি ছাড়া ভাঙ্গে না । পার্কিং লাইটটি চোখ ধাঁধানো।

উইন্ডশিল্ড
ক্লিয়ার উইন্ডশিল্ড। 2D ডায়মেনশন কাট । ভালো বাতাস কাটে । লিন ড্রাইভে আই লেভেল এর নিচে থাকে ।

ড্যাশবোর্ড
ড্যাশবোর্ড চওড়া কিটিং করা দেখতে ভালো ।

মিটার
আরপিএম মিডেল এ ডিজিট স্পষ্ট । স্পিডো মিটার ডিজিটাল । ঘড়ি, ট্রিপ রিডিং আছে । ট্রিপ রিডিং ১০০০ এরপর আবার ০ হয়ে যায় । ঘড়ি মাসে ১১ মিনিট স্লো হয়ে যায় আস্তে আস্তে । স্পিড ডিজিট আর একটু বড় হলে ভাল হত । ডিসপ্লে কালার চেঞ্জ করা যায় অরেঞ্জ আর ব্লু ।

ট্যাংক
১৭ লিটার এর হিউজ ট্যাংক। ২ লিটার রিজার্ভ । ট্যাংকের ডিজাইন কাট এজ খুবই সুন্দর । লিন হয়ে বা শুয়ে চালানোর জন্য ভালো সাপোর্ট পাওয়া যায় ।

সীট
রাইডার এর ওকে, পিলিওন সিট বেশ আরামদায়ক । পিলিওন ফুট রেস্ট আর একটু পেছনে হলে ভালো হত । সিটিং পজিশন প্রথম এক সপ্তাহ কষ্ট হয়েছে, পরবর্তীতে আমার এডজাস্ট হয়ে গেছে ।

গ্র্যাব রেইল
এলয় গ্র্যাব রেইল । দুটো গ্র্যাব রেইলে দুই দুই চারটি নটিং বার বা স্পেস আছে, যাতে ব্যাগ বাধার সময় স্ট্রেপ কে নট দেয়া যায় ।

টেইল লাইট
১২ টি ক্লিয়ার এল ই ডি। বেশ দূর থেকে দেখা যায় ।

রিয়ার মাড গার্ড
ম্যাট প্লাস্টিক । ফ্লেক্সিবল । হার্ড কেজুএলটি ছাড়া লকও ভাঙে না ।

ফ্রন্ট সাসপেনশন
ফ্রন্ট সাসপেনশন গুলো খুবই রেসপন্সসিভ, যে কোন ভাঙা গর্তে ফ্রন্ট শকার যথেষ্ট কমফোর্ট রেসপন্স করে । যেই পরিমান অফরোড ভাঙা আর গর্ত হিট করেছি চিন্তার বাহিরে। 90 + স্পীডে হঠাৎ হঠাৎ অর্ধশত স্পীড ব্রেকার হিট করার পরও এখনো একটা ফর্ক সিলের কোন লিক নেই, একটু ফর্ক ওয়েল লিকও করে নাই ।

রিয়ার শক
মনো ক্রস সিঙ্গেল শক। রিয়ার শক ভালো কিন্তু আরাম দায়ক নয়, প্রথম দিকে অনেক হার্ড থাকে, পরবর্তীতে একটু সফট্ হয় । তারপরও এতটা আরাম দায়ক নয়। অফরোডে বা ভাঙা তে খুব একটা আরামদায়ক নয় । কিন্তু অন্যান্য ডুয়েল শকার এর তুলনায় ভাল । হোন্ডা ইউনিকর্ন এর শকার বসানো যায় । কিন্তু আমার কাছে হোন্ডা শকার এর তুলনায় লিফানের স্টক টি বেটার মনে হয়েছে । কারণ হোন্ডার শকার সেট আপের পরে বরং আরো হার্ড মনে হয়েছে । স্পোর্টস বাইকে কমফোর্ট লেভেল একটু কম থাকে সেই বিবেচনায় খারাপ নয় ।

রেসিং বল সেট/বল রেসার
বল রেসার এর কোয়ালিটি অসাধারণ, এত ভাঙা চোড়া দৈনিক যাত্রাবাড়ীর মত অসহনীয় রাস্তা দিয়ে যাতায়াত এর পরও একবারও টাইট লুজ করতে হয় নাই ।

ক্লাচ, এক্সেলেরটর কেবল
কেবল এর ইনার ওয়ার কোয়ালিটি খুবই ভালো । কোন রাস্ট , কোন ভাজ বা ছিড়ার দাগ ছিল না । কিছু দিন আগে লং এ যাবো বলে ১৫০০০ কিলোমিটার এ নিজ প্রয়োজন এ সেফটি ইস্যু চিন্তা করে চেঞ্জ করেছি , পুরনো গুলো যে কেউ আরামে আরও ১০০০০ কিলোমিটার চালাতে পারবে ।

প্লাগ ও এয়ার ফিল্টার
প্লাগ (NGK-R) এর কোয়ালিটি নিয়ে যে কেউ চমকাতে পারেন । ৬০০০ কিলোমিটার এ ইরিডিয়াম লাগিয়ে ছিলাম, ১৫০ কিলোমিটার পরে আবার স্টকে শিফট করেছি। ১০০০০ কিলোমিটারে প্লাগ প্রায় নতুনের মতো ছিল, প্লাগ ইন্ডিয়ান অনেক বাইকের সাথে মিললেও কোম্পানির চাইনিজ টাই বেস্ট পারফর্ম করে । এয়ার ফিল্টার এর কোয়ালিটিও ভালো, এয়ার ফিল্টার ইউনিকর্ন এর সাথে মিলে ।

ব্রেকিং সিস্টেম
এক কথায় ভালো, ফ্রন্ট এর ব্রেকিং একেবারে এফজি এর মত। প্যানিক ব্রেকিং এ চোখ বন্ধ করে ব্রেক কষলেও দেখবেন সুন্দর অন স্পট বাইক দাড়িয়ে গেছে । পেছনের ব্রেকও ভালো, প্রেশার বেশি হলে হালকা স্কিড করে কিন্তু বাইক ব্যালেন্স হারায় না । টায়ার চেঞ্জ করলে এই সামান্য স্কীড ও থাকে না । টায়ার(পিরিলি) আর ব্রেক প্যাড(ফ্রন্ট - RTR , রিয়ার- TRIGGER) চেঞ্জ করলে ব্রেকিং এফজি এর মার্ক এসে দাঁড়ায় ।

ব্রেক প্যাড
টোটাল বাইকের সব থেকে খারাপ দিক হচ্ছে এর স্টক ব্রেক প্যাড । এতটাই হার্ড ছিল যে ৪০০০ কিলোমিটারে ডিস্ক শেষ হয়ে যেত । কাস্টমার এর অভিযোগ এখতিয়ার এ নিয়ে রাসেল ইন্ডাস্ট্রীজ দ্রুত ব্রেক প্যাড এর কোয়ালিটি চেঞ্জ করার প্রত্যাশা দিয়েছে । এখন আর কেউ না ভুগলেও পেছনের ব্রেক প্যাড নিয়ে আমি বেশি ভুক্তভোগী । সামনের ব্রেক পেড R.T.R আর পেছনের ব্রেক পেড TRIGGER এর সাথে মিলে, আগে এটা জানতাম না । অনেকেই বলে ডিস্কের কোয়ালিটি ভালো না তাই ক্ষয় হয়ে যায়, এটা ভুল ধারণা ।

টায়ার
এই বিষয়ে আমি একটু বেশিই খুত খুতে । নির্দিধায় C.S.T. একটি ভালো টায়ার ব্রেন্ড , কিন্তু যে বিটের টায়ার ব্যবহার করছে তা আমাদের দেশের জন্য কোন মতেই যুক্তি যুক্ত নয় । পেছনের টায়ার টি চলে কিন্তু সামনের টায়ার টি আমার কাছে অযৌক্তিক । আমি সামনে পেছনে পিরিলি স্পিড ডেমন ইন্সটল করেছি স্টক সাইজের । টায়ার চেঞ্জের পর পুরো বাইকের ব্যালেন্স আর কন্ট্রোল চেঞ্জ হয়ে গেছে । ব্রেকিং , কর্নারিং , হেন্ডেলিং সব অসাভাবিক হারে ইমপ্রুভ হয়েছে । শুধু দুটো টায়ার পুরো বাইকের পারফরমেন্স ডায়মেনশন চেঞ্জ করে দিয়েছে ।

চেইন সেট
চেইন সেট ভালো কিন্তু ১০০০০ কিলোমিটার চালানোর পর বড় হয়ে যায়, আমার চেইন জোরা বা কাটা কাটি পছন্দ নয় । স্টক চেইন লাগাবো না বলে টেমপোরারি একটা সেপ্মল দেশি চেইন দেয় , যেটা ছেড়ার পর আমি RK SSS 428 চেইন লাগিয়ে নেই যেটা আমার আগেই প্ল্যান ছিল, চেইন টা হাতে পেতে দেরি হচ্ছিল ।

বডি কিট, গ্রিলিং ও প্লাস্টিক
বডি কিট যথেষ্ট শক্ত । পয়েন্ট টু পয়েন্ট গ্রিলিং করা প্রয়োজনীয় জায়গায় নাটের বদলে ছোট স্ক্রু দেয়া নাই । প্লাস্টিক এর কোয়ালিটি যথেষ্ট ভালো এমনকি ইন্ডিয়ান কিছু কিছু বাইকের থেকেও প্লাস্টিক কোয়ালিটি অনেক অনেক ভালো ।

টার্নিং রেডিয়াস
টার্নিং রেডিয়াস অনেক কম । তবে জ্যাম ও মাত্রারিক্ত চিপা গলি ছাড়া সমস্যা হয় না । টার্নিং এ লিন করে চালাতে হয় ।

ব্যাটারি
৯ এম্পিয়ার ১২ ভোল্ট এর শক্তিশালী ব্যাটারি । যেকোনো অবস্থায় এক সেলফ এ স্টার্ট নিতে সক্ষম । ২০+২০=৪০w এর এক্সট্রা লাইট , চার্জার , দুটি হর্ণ এক সাথে সাপোর্ট এ ব্যাটারিতে কোন প্রকার প্রেসার লক্ষ করি নাই ।

লুক
লুক নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই, কেপিআর এর মূল আকর্ষণীয় বিষয়ই লুক আর পারফরমেন্স ।

ইঞ্জিন
ইঞ্জিন খুবই একটা সেনসেটিভ বিষয় যে কোন বাইকের ক্ষেত্রে । এক কথায় এই টাকায় কেপিআর এর ইঞ্জিনে একটা বিস্ট ফিল আছে। জি বিস্ট এই ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে একটু ভদ্র ভাষা হয়ে যায় । লিফান ও রাসেল ইন্ডাস্ট্রীজ এর ক্লেইম অনুযায়ী এটা 14.8 bhp এর ইঞ্জিন কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে এর bhp আরো অনেক বেশি ।

Lifan KPR 150 20000 km ride review by Asim Nafis Adorবিশ হাজার কিলোমিটার এর মধ্যে সাজেক টুর এর পর পনের হাজার কিলোমিটার এ টেবিট-টাইমিং মেলানোর জন্য শুধু একবার হেড কাভার খোলা ছাড়া কোন নাটে রেঞ্জ ও ধরাতে হয়নি । এখানোও ক্লাচ পেল্ট সম্পূর্ণ সুস্থ আছে ।

গিয়ার শিফটিং ৩০০০-৫০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হার্ড , এর পর সামান্য সফট হয়ে অনেকটা IPL HUNK এর মত হয়েছে । পরবর্তীতে খেয়াল করলাম শিফটার রডে একটা এডজাস্টার আছে, এডজাস্টার টা টাইট দেয়ার পর গিয়ার ফুল স্মুথ হয়ে গিয়েছে । আমার মতে এটা রাসেল ইন্ডাস্ট্রিড এর এসেম্বলি লাইনের ভুল, তারা এই বিষয় টি মোটেও মনে হয় খেয়াল করে না, অযথাই হার্ড শিফটিং নিয়ে অনেক দিন কষ্ট করলাম ।

ইঞ্জিন পারফরমেন্স একেবারে ক্ষুধার্ত জানোয়ার এর মত । থ্রোটল টুইস্ট করতে দেরি সাড়ে তিন হাত
গ্যাপে ও.টি. মারা যায় চোখের পলকে । বাংলাদেশে লিগ্যাল ১৫০ সেগমেন্টের কোন এয়ার কুল্ড ইন্ডিয়ান/চাইনিজ বাইক কেপিআর এর টেইল লাইট দেখতেও সক্ষম নয় । 3RD গিয়ারেই নক আউট হয়ে যায়, শুধুমাত্র পালসার এএস টাফ কম্পিটিশন দেয় । উভয়ের টপ 137/137 . কম্প্রেশন ও BHP রেশিও এর কারণে টাফ কম্পিটিশন এর সৃষ্টি হয় । উক্ত বিষয়ে কোন প্রকার সন্দেহ নেই এবং আমি নিজে প্রমাণিত । এছাড়া সিবিআর, R15 ও অন্যান্য 150 সিসি হাই পারফরমেন্স বাইককে টপে ওভারটেক করা যায় না, এমন কি ১২০ এর পর সমান সমান ও থাকা যায় না । যদি এতে কেউ দ্বিমত পোষণ করে তাহলে সেটা চরম মিথ্যা কথা । তবে ১৩০ পর্যন্ত এদের পেছনে পেছনে আরামে থাকা যায় । পিস্টনের ঠিক কানেক্টিং এর পাশ দিয়ে একটা ইঞ্জিন লুব ইনজেকটর আছে যেটা হাইয়ার আরপিএম এ কোনাকুনি পিস্টনের নিচে লুব স্প্রে করে ।

যে কোন গিয়ারে আরপিএম ১১৫০০ পর্যন্ত নেয়া যায়, কেপিআর এর CDI তে আরপিএম ও স্পিড লক নেই । এভারেজ টপ 137 KMPH , কখনো কখনো 141 KMPH যেটা পারিপার্শিক পরিবেশ ও বাইকের কন্ডিশন , ইঞ্জিন লুব , ফুয়েল , রোড ও বাতাসের উপর নির্ভর করে ।

তেল খারাপ পরলে বাইক ধাক্কায় না, ঘন ঘন স্টার্ট বন্ধ হয় না । কিন্তু এক্সেলারেশন ও টপ কমে যায় ।

সামনের স্প্রকেট ছোট করলে হান্ক এর 14 বসিয়ে আন্ডার গিয়ার করলে 9000 RPM এ 112 KMPH @ TOP GEAR

আর স্টকে 9000 RPM এ 120-125 KMPH @ TOP GEAR .

প্রথম পাওয়ার দেয় 5000-9000 Rpm পর্যন্ত, পরবর্তী পাওয়ার দেয় 10000-11500 Rpm পর্যন্ত ।

6th গিয়ারেও চিন্তাতীত পাওয়ার সপ্লাই করে ।

কুলিং সিস্টেম
ডুয়েল পার্ট রেডিওটর । সিঙ্গেল Panasonic এর ফ্যান । সারা বাইকে এক মাত্র পার্টস যেটা মেড ইন জাপান । কুলিং সিস্টেম পারফেক্ট কাজ করে । রিজার্ভ ট্যাংক পিলিওন সিটের নিচে । কিন্তু অনেক সময় একাধারে জ্যামের রোডে চালালে অনবরত 15 সেকেন্ড এর বিরতিতে কুলিং ফ্যান চলে ইঞ্জিন তাপমাত্রা সহনীয় হলেও ট্যাংক গরম হয়ে যায় । যেটা আবার 2 মিনিটের ফ্রি রোড পেলে সেই গরম ভাপ টা চলে যায় । হাইওয়েতে একটানা 260 কিলোমিটার চালানোর পরও ইঞ্জিন হাত দিয়ে ধরে দেখছি, হাতে সহনীয় তাপমাত্রা ।

ওয়ারেন্টি এন্ড রিপ্লেস
ওয়ারেন্টি এন্ড রিপ্লেস নিয়ে রাসেল ইন্ডাসট্রীজ বেশ একটিভ । এতে কোন সন্দেহ নেই । যে কোন ওয়ারেন্টি ক্লেইম করার পর গ্র্যান্টেড/যুক্তিযুক্ত হলে সর্বোচ্চ পরের দিনের মধ্যেই রিপ্লেস পেয়েছি । অনেকে দেখলাম সেই দিনই পেয়ে গেছে। আমি দুটি ওয়ারেন্টি ক্লেইম করে ছিলাম ১. মিটার: ১৮০০ কিলোমিটারে আরপিএম মিটার হঠাৎ হঠাৎ আটকে যেত ২. পেছনের ডিস্ক , একটু এক জায়গায় একটা কাট ঠিক ছিল না আওয়াজ করত । দুটোই পরের দিন চেঞ্জ ।

সার্ভিস এন্ড স্পেয়ার্স
রাসেল ইন্ডাসট্রীজ এর লালমাটিয়ায় মেইন সার্ভিস সেন্টার । চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেখিয়ে বলতে পারবো বাংলাদেশের অনেক অনেক বড় বড় বাইক কোম্পানির এমন একটা রেসপন্সসিভ, একটিভ ও এক্সপার্ট সার্ভিস টিম নেই । অন্যদের মত অনেক আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই কিন্তু এর পরেও ঐসব আধুনিক যন্ত্রপাতি ওয়ালা বড় বড় কোম্পানি এদের কাজ ও কাজের গতি ও পারফেকশন দেখলে লজ্জা পাবে। মাঝে মেকানিক্সরা বেশ গা ছাড়া ভাবে কাজ করত, আমিও দু দিন ভুগেছি । এনিয়ে বেশ হৈ হুল্লোড় পর এখন দেখলাম আবার মেকানিক্সরা পুরোপুরি সোজা হয়ে গিয়েছে ম্যানেজমেন্ট এর চাপে। প্রয়োজন ছাড়া অযথা স্পেয়ার্স চেঞ্জ করার ডিমান্ড করে না । বাহির থেকে ব্রেক সু কিনে তাদের কাছে চেইন্জ করতে গেলেও কোন চার্জ নেই । সার্ভিস চার্জ ফ্রি । আঁটটি ফূল সার্ভিস ফ্রি ।

এরা কাস্টমার এর জবকার্ড কমপ্লেইন অনুযায়ী কাজ করে। সিরিয়াল অনুযায়ী ও ছোট বড় কাজ অনুযায়ী কাজ করে । যেমন ব্রেক পেড ফিল্টার, চেক আপ আগে ছাড়ে । ইঞ্জিন ঘটিত বিষয় ধীরে সুস্থে সময় নিয়ে করে ।

স্পেয়ার্স এভেলেবল। হঠাৎ কখনো শর্ট পরলেও পরবর্তী দিনই ফেক্টরি থেকে ব্যাকআপ এর ব্যাবস্থা করে । কোন স্পেয়ার্স পরিবর্তন এর প্রয়োজন হলে, সার্ভিস টীম ইঞ্জিনিয়ার এর পরামর্শ নেয়। স্পেয়ার্স এর দাম আকাশ চুম্বি না । অন্যান্য বাইকের মত নরমাল দাম ।

সারমর্ম
সর্বশেষে ব্রেক প্যাড টায়ার বাদে অন্যান্য সমস্যা গুলো আমার কাছে তুচ্ছ বিষয় । যে গুলো কে সমস্যার কাতারে ধরা যায় না কারণ এই ধরনের ল্যাকিংস্ সব বাইকেই কম বেশি থাকে । থাই সিবিআর এর ও চেইন কিট সেট আমাদের দেশের জন্য ভালো না, সবাই নিজে আপগ্রেড করে নেয় ।

ব্রেক প্যাড ও টায়ার আপগ্রেড করার পর এই মূল্যে এই ধরণের শক্তিশালী ইঞ্জিন ও অসাধারণ পারফরমেন্স এর জন্যে সামান্য কমফোর্ট আমি বিসর্জন দিতে রাজি । তবে গিয়ার শিফটিং নিয়ে রাসেল ইন্ডাস্ট্রীজ কে একটা R&D করার এবং আফটার এসেম্বলি Q&C কে আরেটু কঠোর অবস্থানে নেয়ার জন্য অনুরোধ করছি। তাহলে যে সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয় গুলো আমি ঠিক করে নিয়েছি সে গুলো নিয়ে পরবর্তী ক্রেতাদের কোন ঝামেলায় জড়াতে হবে না, কোন কমপ্লেইন ও থাকবে না । আমি লোকাল মেকানিক্স এর সাহায্যে দশ মিনিটে গিয়ার শিফটিং এর সমস্যার সমাধান করতে পারলে তারা এটা আরও স্মুথ করতে পারবে ।

গুরুত্বপূর্ণ কিছু সমস্যা/প্রশ্ন ও তার সমাধান

*** ট্যাংক প্রচন্ড হিট হয় ।
> রেডিয়েটর ফিন ভেন্ট পরিস্কার রাখুন, আরপিএম 1000 এ রাখুন । দিনে এক দু'বার স্টার্ট বন্ধ হতে পারে কিন্তু ট্যাংক গরম হবে না গ্যারান্টি । কুলেন্ট ক্যাস্ট্রোল বা মটুল ব্যবহার করতে পারেন । জ্যাম এ এই সমস্যা বেশি হয় সিগনাল এ ইঞ্জিন অফ রাখুন ।

*** টায়ার ব্যালান্স নিয়ে দ্বিধায় আছি।
> স্টক সাইজের ভালো ব্রেন্ড এর টায়ার লাগান, তবে অবশ্যই স্পোর্টস বিট বা ইনার কাট সেগমেন্ট এর টায়ার লাগাবেন । আমি পিরিলি ব্যবহার করছি । টায়ার চেঞ্জ এর পর ব্যালেন্স, কনট্রোল, কর্নারিং বেশ আপগ্রেড হয়েছে । তবে টপ কমেছে ।

*** ব্রেকিং সমস্যা / ডিস্ক প্রবলেম ।
> ব্রেকিং এর সর্বধরনের সমস্যার সমাধান ও আপগ্রেড করতে উভয় ব্রেক পেড চেঞ্জ করুন । সামনে RTR পেছনে TRIGGER. সামনের ডিস্ক KAWASAKI NINGA 300 এর সাথে আর পেছনের ডিস্ক TRIGGER সাথে মিলে।

*** কোন ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করব?
> যে কোন ভালো ব্র্যান্ড এর 4T ইঞ্জিন ওয়েল । মিনারেল হলে 20W40 আর সিন্থেটিক হলে 10W40 । সিন্থেটিক এ মবিল রেসিং এর থেকে মটুল 7100 তে ভালো পারফরমেন্স পেয়েছি । তবে সিন্থেটিক এ ইঞ্জিন সাউন্ড একটু ফাটা লাগে মিনারেল এর তুলনায় ।

*** গিয়ার শিফটিং হার্ড ।
> শিফটার আর গিয়ার শ্যাফট এর মাঝে একটা এডজাস্টেবল সেটাকে টাইট করলেই হবে । উভয় দিক থেকে দুই প্যাচ গ্যাপ বা তিন দুই গ্যাপ দিলেই বিষয়টি সমাধান হয় ।

*** ভাঙা রোডে ঝাকি লাগে ।
> টায়ার প্রেসার সামনে 25 পেছনে 35 করুন । ঝাকি খুব একটা টের পাবেন না ।

*** চেইন চেঞ্জ করব ।
> RK SSS 428 (128L) এর চেইন ব্যবহার করতে পারেন । 420 ও ব্যবহার করতে পারেন 428 একটু মোটা । চেইন কেপিআর এর একটা গুরুত্বপূর্ন বিষয় । সব সময় চেইন লুব করে রাখবেন ।

*** রিয়ার সাসপেনশন
> TRIGGER টা বসে তবে আমার কাছে স্টক টাই ভালো মনে হয়েছে । রেসপন্স কম মনে হলে এক স্টেপ হাই করে দেখতে পারেন ।

*** প্লাগ
> স্টক টা বেশ ভাল । তবে কেউ চাইলে ইরিডিয়াম বা RTR এর প্লাগ ব্যবহার করতে পারেন ।

সবাই সাবধানে বাইক চালাবেন ।
লেন চেঞ্জ এর আগে লুকিং গ্লাস ও ইন্ডিকেটর ব্যবহার করুন ।
সবসময় সামনের থাকা যানবাহনের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখুন ।
শুধু হেলমেট পরিধান করবেনই না হেলমেট এর স্ট্রাইপ/বেল্ট লক করুন ।

ধন্যবাদ












Rate This Review

Is this review helpful?

Rate count: 41
Ratings:
Rate 1
Rate 2
Rate 3
Rate 4
Rate 5

More reviews on Lifan KPR 150

লিফান কেপিআর ১৫০সিসি ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা ৩৭০০০কিমি আবদুল্লাহ
2021-09-19

আমরা যারা বাইক পছন্দ করি বা বাইক নিয়ে রাইড করতে ভালোবাসি তারা স্বপ্ন দেখি যে নিজের একটি স্পোর্টস বাইক থাকুক। বাং...

Bangla English
লিফান কেপিআর ১৫০সিসি ৬২০০ কিমি ব্যাবহারিক অভিজ্ঞতা আবু মুসা
2021-01-10

মোটরসাইকেল কেনার কথা বলতে গেলে আমি যখনই নিজের বাইকের কথা ভাবতাম কখনই সাধারন বাইক আমার মনে ধরতো না। আমি সবসময়ই চে...

Bangla English
লিফান কেপিআর ১৫০ রাইডিং অভিজ্ঞতা মোঃ সাইফুজ্জামান
2020-09-03

পেশায় আমি একজন চাকরিজীবি আমার বর্তমান বসবাস রাজধানী ঢাকাতে প্রিতিদিন আমাকে ছুটে বেড়াতে হয় ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়...

Bangla English
লিফান কেপিআর ৬,৫০০কিমি রাইডিং অভিজ্ঞতা - জামিউল হাসান বিশাল
2020-05-21

তরুণ রাইডারদের কাছে সর্বদা ভালো ডিজাইনের বাইক অগ্রাধিকার বেশি পায়। শুধু দেখতে ভালো হলে হবে না ডিজাইনের পাশাপাশ...

Bangla English
লিফান কেপিআর ২৪,০০০কিমি রাইডিং অভিজ্ঞতা - শোভন বসু
2020-04-11

আমি শোভন বসু , বরগুনা জেলার বেতাগীতে আমার জন্ম । বর্তমানে ভোলা থাকি এবং বাংলাদেশ পুলিশ এ চাকরী করছি । আজ আমি আপনাদ...

Bangla English
লিফান কেপিআর ১৫০ ৫০০০কিমি রাইডিং অভিজ্ঞতা - ইফতেখার
2020-02-09

বাইক চালানোর শখ সেই ছোট বেলা থেকেই । আমি যখন দেখি যে আমার আশেপাশের বড়ভাই কিংবা বন্ধুরা তাদের বাইক রাইড করত তখন আম...

Bangla English
লিফান কেপিআর ১৫০ ভি২ ১৭,৫০০কিমি রাইডিং অভিজ্ঞতা - বাপ্পা রাজ দাশ
2020-01-11

আমি যখন বাইক কিনবো বলে মনে মনে সংকল্প করেছিলাম ঠিক তখন থেকেই খুঁজতে থাকি আমার পছন্দের বাইক । আমি অনেক বাইক রাইড ক...

Bangla English
লিফান কেপিআর ৯৯৯৯কিমি রাইডিং রিভিউ - আসিফ জোবায়ের
2019-02-17

প্রাক্তন বাইক রাইডিং এর অভিজ্ঞতাঃ Apache RTR 150 V2 প্রায় ৪ বছর। প্রাক্তন অভিজ্ঞতা দেয়ার কারণ, এতে করে আমারে রাইডিং স্কিল/...

Bangla English
লিফান কেপিআর ১৫০ মোটরসাইকেল রিভিউ - মোকলেসুর রহমান
2019-01-30

বাইক চালানো শিখেছিলাম আজ থেকে প্রায় ৮ বছর আগে। এরপরে আমি ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের বাইক, টিভিএস এপ্যাচি আরটিআর এবং বা...

Bangla English
লিফান কেপিআর ১৫০ মোটরসাইকেল রিভিউ - সালমান খালিদ শাহরিয়ার
2018-11-03

সবার কাছে অনুরোধ রইলো পুরাটা না পড়তে পারলেও শেষটা পড়ে নিবেন। কিছুদিন আগে একটা পোস্ট করেছিলাম ১০০০০ কিমি পূর্ণ...

Bangla English
লিফান কেপিআর ১৫০ মোটরসাইকেল রিভিউ - রাফি আহমেদ
2018-07-31

আমার নাম রাফি আহমেদ শিবলু। আমি পেশায় একজন ছাত্র। যেহেতু একটু কম বয়স তাই বাইকের উপর আমার ভালোলাগা একটু বেশি। বাই...

Bangla English
লিফান কেপিআর ১৫০ মোটরসাইকেল রিভিউ - ইয়াছির আরাফাত
2018-06-02

আমার নাম মোঃইয়াছির আরাফাত। আমি একজন মেডিক্যাল স্টুডেন্ট ইতিপূর্বে আমি ব্যবহার করতাম বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটি ...

Bangla English
কম দামে ভাল ফীচার সমৃদ্ধ বাইক – লিফান কেপিআর ১৫০সিসি ব্যবহারকারী নাফিউ মল্লিক
2018-05-18

সেই ছোট বেলা থেকেই বাইকের প্রতি আমার নেশা। তখন থেকেই যখনই কোন বাইক পেতাম রাইড দিয়ে ফেলতাম। আমি প্রায় এক যুগেরও ব...

Bangla English
লিফান কেপিআর ১৫০ মোটরসাইকেল রিভিউ - মামুন আকতার
2018-05-17

হোন্ডা সিডি ৮০ দিয়ে বাইক চালানোর হাতে খড়ি আজ থেকে প্রায় ১২ বছর আগে। বাইক চালানো শেখার পর থেকে বাইকের প্রতি আমার আ...

Bangla English
2017-10-12

2016 সালের ২৫ নভেম্বরে কিনি Rasel Industry থেকে। বাইক টা কিনা না কিনা নিয়ে তেমন ভয় ছিল না যে চায়না বাইক কেমন হবে না হবে। বাজে...

Bangla English
2016-10-28

ফেব্রুয়ারি মাসে রাসেল ইন্ডাসট্রীজ থেকে KPR টি কিনি। ব্রেক ইন এর নির্দেশনা ছিল ৩ হাজার কিলোমিটার । আমি ১৫০০ কিলোমিট...

Bangla English
2015-06-27

...

English
2017-10-12
2016-10-28
2015-06-27
Filter