লিফান কেপিআর ১৫০সিসি ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা ৩৭০০০কিমি আবদুল্লাহ

আমরা যারা বাইক পছন্দ করি বা বাইক নিয়ে রাইড করতে ভালোবাসি তারা স্বপ্ন দেখি যে নিজের একটি স্পোর্টস বাইক থাকুক। বাংলাদেশের বাজারে আমরা জানি যে স্পোর্টস বাইকএর দাম তুলনামূলক একটু বেশি হয়ে থাকে কারণ এ সকল বাইকের সাথে কোম্পানি ভালোমানের পার্টস দেওয়ার চেষ্টা করে।  এই সকল কারণে হয়তো ইচ্ছা থাকলেও বাজেটের কারণে স্পোর্টস বাইকএর চাহিদাটা নিজের কাছে পূরণ হয় না। তবে কম দামের মধ্যে ভালো মানের স্পোর্টস বাইক দেওয়া সম্ভব তা লিফান তুলে ধরেছে। চাইনিজ এই লিফান ব্র্যান্ড বাংলাদেশের বাজারে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে কেপিআর সিরিজ দিয়ে।  এই কেপিআর বাইকের মধ্যে আলাদা একটা ভাব রয়েছে যা ১৫০সিসি  সেগমেন্টে নতুন ধারণা নিয়ে আসে।

কেন Lifan KPR 150?

আমি যখন এই বাইকটি দেখলাম তখন কেনার আগে বাইক নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে শুরু করলাম। এক পর্যায়ে দেখলাম যে আসলেই বাজেট অনুযায়ী Lifan KPR 150  অনেক ভালো একটি বাইক। বাইকের রয়েছে সুন্দর ডিজাইন, ইঞ্জিন পারফরম্যান্স,  লুকিং ইত্যাদি সবকিছুই আমি কম বাজেটে পাচ্ছি যার কারণে অন্য কোন স্পোর্টস বাইকে আমি আর ফিরে তাকাইনি। গেল তিন বছর যাবত আমি এই Lifan KPR 150 বাইকটি ব্যবহার করছি এবং এই তিন বছরে আমি বাইক নিয়ে রাইড করেছি প্রায় ৩৭,০০০ কিমি। যেহেতু বাইক কিনে লম্বা একটি সময় পার করেছি এবং বাংলাদেশের বাজারে সুন্দর একটি স্পোর্টস বাইক কম বাজেটে তাই এ বাইক নিয়ে আপনাদের সাথে ভালো-মন্দ শেয়ার করলে আশা করি আপনারা খুবই উপকৃত হবেন। একইভাবে আপনারা এটি কেনার ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। চলুন আমার Lifan KPR 150  বাইকের ভালো এবং খারাপ আপনাদের সাথে শেয়ার করি।

Lifan KPR 150 বাইকের ভালো দিক

আমার কাছে এ বাইকের প্রথম যে বিষয়টি ভালো লেগেছে তা হল এর ডিজাইন।  এত কমদামের মধ্যে স্পোর্টস ডিজাইন আমি অন্য কোন বাইকে লক্ষ্য করিনি। আমি মনে করি যে, বাংলাদেশের বাজারে এই সেগমেন্টে, এই বাজেটে সেরা ডিজাইনের বাইক হচ্ছে Lifan KPR 150। কম বাজেটে সুন্দর একটি ডিজাইন দিয়ে আসলেই বাংলাদেশের বাজারে রাইডারদের নতুন ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছে এ বাইক।

বাইকের সাথে যেহেতু প্লাস্টিক বডি কিট রয়েছে তাই অনেকের মনে শঙ্কা আছে যে দাম যেহেতু কম তাই এর বিল্ড কোয়ালিটি খারাপ হতে পারে কিন্তু না, আমি এই বাইকের বিল্ড কোয়ালিটি নিয়ে অনেক সন্তুষ্ট। এই দামের মধ্যে আসলেই খুব সুন্দর প্লাস্টিক কিট ব্যবহার করা হয়েছে যা মজবুত এবং খুব সহজেই ভঙ্গুর নয়। এই দামের মধ্যে আমার কাছে বিল্ড কোয়ালিটিটাও অনেক ভালো মনে হয়েছে।

১৫০সিসির স্পোর্টস বাইক তাই এর ইঞ্জিন হওয়া চাই অনেক শক্তিশালী এবং সেটাও নিশ্চিত করেছে লিফান। ১৪৯সিসি লিকুইড কুল্ড শক্তিশালী এখানে ব্যবহার করা হয়েছে যা খুব ভালো শক্তি ও টর্ক উৎপন্ন করতে পারে। আমি মুহূর্তেই এ বাইক থেকে খুব ভালো স্পিড তুলতে সক্ষম হয় এবং এখন পর্যন্ত এ বাইকের টপস্পীড আমি পেয়েছি ১৪০কিমি প্রতিঘণ্টা। টপস্পিড,  ভালো ইঞ্জিন পারফরম্যান্স সবকিছুই Lifan KPR 150 এর ইঞ্জিন থেকে পাচ্ছি।

আমার কাছে আরেকটি বিষয়ে খুবই ভালো লেগেছে তা হল এর মাইলেজ।  শুরুতে আমি যে মাইলেজ পাচ্ছিলাম সেটি এখনও পাচ্ছি এটি অবশ্যই সুনাম করার বিষয় যে একটি বাইকের ইঞ্জিন তিন বছর ধরে একই মাইলেজ দিচ্ছে। Lifan KPR 150  এর ইঞ্জিন অবশ্যই ভালো যার কারণে মাইলেজ এখনো ভাল রয়েছে। শহরের মধ্যে আমি মাইলেজ পাচ্ছি ৩৫কিমি প্রতি লিটার এবং হাইওয়েতে মাইলেজ পাচ্ছি ৩৮কিমি প্রতিলিটার। ১৫০সিসির ইঞ্জিন থেকে এত সুন্দর মাইলেজ অনেক প্রশংসনীয়।

আমি যেহেতু এই বাইকটি তিন বছর ধরে রাইড করেছি এই তিন বছরে আমি কন্ট্রোলটা খুব ভালো ভাবেই অনুভব করছি। কন্ট্রোলিংএর দিক থেকে একটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে এবং আমি যেকোন পরিস্থিতিতে খুব ভালো ভাবেই কন্ট্রোল করে নিতে পারি। বাইকের ব্রেকিং সিস্টেম, সাসপেনশন,  সিটিং পজিশন সবকিছু মিলিয়েই খুব ভালো কন্ট্রোল প্রদান করে।


Lifan KPR 150 এর মন্দদিক

এই বাইকটি আমি এতদিন ধরে রাইড করছি এবং শুধুমাত্র একটি সমস্যা ছাড়া আর কোন কোন সমস্যা আমার কাছে মেজর সমস্যা মনে হয়নি। একটি সমস্যার মধ্যে যে বিষয়টি বেশি লক্ষ্য করেছে তা হল হ্যান্ডেলবারটা একটু কম ঘোরে। সাধারণত ইউটার্ন নেওয়ার সময় কিংবা ছোটখাটো বাক নেওয়ার সময় আমি এই সমস্যাটা অনুভব করি। হ্যান্ডলবারটা যদি আরও বেশি ঘুরতো তাহলে আমার মনে হয় বাইকটি রাইড করে আরও বেশি ভালো লাগতো।

Lifan KPR 150 নিয়ে এই ছিলো আমার ভালো মন্দ অভিজ্ঞতা। আপনারা সবাই সাবধানে রাইড করবেন এবং অবশ্যই ভালো মানের হেলমেট ব্যবহার করবেন।

ধন্যবাদ সবাইকে।

All LIFAN bike price in bd

Lifan KPR 150