লিফান কেপিআর ১৬৫ এফআই ১৩০০কিমি রাইডিং অভিজ্ঞতা - শাকিলুর রহমান

বাইক চালানো শিখি ২০০৫ সালের দিকে কিন্তু সেই সময় বাইকের এত ব্যপকতা ছিল না। ২০১৮ সালের শেষের দিকে নিজের টাকা দিয়ে একটা ডিসকাভার ১০০ সিসি কেনার সামর্থ্য হয়। তারপর ৬/৭ মাস পরে হাঙ্ক ডাবল ডিস্ক ব্যবহার করা শুরু করি। হাঙ্ক বাইক টাও প্রায় সাত মাস চালিয়েছি এর মাঝে বাইক চালানো টা নেশায় পরিণত হয়ে যায়। সেইসময় বিভিন্ন জেলার বাইকিং গ্রুপ ও তাদের গ্রুপ ট্যুর দেখি। তখন সিরাজগঞ্জ জেলায় কোন বাইকিং গ্রুপ ছিল না। ২০১৯ সালের ২৯ শে এপ্রিল আমি ও আমার দুই বন্ধু মিলে সিরাজগঞ্জ রাইডারস নামে আমাদের জেলায় একটা বাইকিং গ্রুপ চালু করি এবং নিয়মিত ভাবে প্রতি মাসেই ট্যুর করি। ট্যুর করতে করতেই ইচ্ছে জাগে একটা স্পোর্টস বাইক কেনার। গত কয়েকমাস যাবত মোটরসাইকেল ভ্যালি তে বিভিন্ন স্পোর্টস বাইকের রিভিউ দেখে আসছি। এর মাঝে এক বড় ভাইয়ের লিফান কে পি আর ১৬৫ এফ আই ভার্শন চালানোর সুযোগ হয়। তখনই বাইকটি আমার নজর কেড়ে নেয়। তখন থেকে বিভিন্ন ব্লগে বাইকটির রিভিউ দেখি সেই সাথে আরও খেয়াল করি মূলত কোন ধরনের রাইডার এই বাইক ব্যবহার করে। বেশ কয়েকজন ব্যবহারকারীর থেকে আশ্বস্ত হয়ে বাইকটি গত ২০ শে মার্চ ২০২০ ইং তারিখে নিয়ে নেই। মোটরসাইকেল ভ্যালি তে বাইকটির একটি অফার আছে সেই ফর্ম আগেই পূরণ করে রেখেছিলাম। মোটরসাইকেল ভ্যালি এই বাইক কেনার জন্য আমাকে একটা সার্টিফাইড হেলমেট উপহার দেয়।


এবার আসি বাইকের ১৩০০ কিলোমিটার রিভিউ প্রসঙ্গেঃ


বাইকের স্পোর্টস লুকটা প্রথমেই নজর কেড়েছিল।বাইকের স্পেসিফিকেশন সম্পর্কে বলার কিছু নাই কারণ স্পেসিফিকেশন আপনারা মোটরসাইকেল ভ্যালির ওয়েবসাইটে পেয়ে যাবেন। আমি আসি আমার নিজস্ব মতামত নিয়ে।

মাইলেজঃ মোটামুটি ৪০+ মাইলেজ পাচ্ছি। আশা করি ব্রেক ইন পিরিয়ড শেষ হলে আরও বেশি পাব ইনশাআল্লাহ।
টপস্পীডঃ যেহেতু বাইকের ব্রেক ইন পিরিয়ড শেষ হয় নি তাই বাইকে ৫০০০ RPM এর বেশি যাই নি। তবে ৫০০০ RPM এ ৬ গিয়ারে ৭০kmph পেয়েছি।


সাসপেনশনঃ নতুন বাইক হিসাবে ফ্রন্ট ও রেয়ার সাসপেনশন যথেষ্ট ভাল।

রাইডিং ও পিলিওন সীটঃ বাইকের রাইডিং সীট বেশি উচু নাই তাই রাইড করতে কোন সমস্যা হয় না। কিন্তু সিটিতে বেশিক্ষণ রাইড করলে হালকা পেইন হয়। হাইওয়ে তে একাধারে ১৫০ কিলোমিটার রাইড করার পরেও তেমন কোন পেইন হয় নি। পিলিওন সীট যথেষ্ট কমফোর্টেবল।


টায়ারঃ আমি NBF2 ভার্শন নিয়েছি। যার পিছনের টায়ার সাইজ ১৩০ সেকশনের যা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয় কিন্তু সামনের টা একটু মোটা হলে ভাল হত।


হেডলাইটঃ লিফান কে পি আর দিয়েছে প্রজেকশন হেডলাইট যা রাতে অনেক ভাল সাপোর্ট দেয়।


ব্রেকঃ বাইকটিতে ডুয়েল ডিস্ক ব্যবহার করা হয়েছে। যা অনেক ভাল কাজ করে। কিন্তু হার্ড ব্রেক করলে বাইক কিছুটা স্কীড করে।


গিয়ারঃ বাইকের গিয়ার অনেক স্মুথ।


বাইকের ইঞ্জিন এর পারফর্মেন্স অনেক ভালো। যদিও প্রথম 500 কিলোমিটার পর্যন্ত ইঞ্জিন অনেক হিট হতো। কিন্তু এখন আর তেমন হিট হয় না।

বাইক যেহেতু উচ্চ আরপিএম এ চালানো হয়নি তাই ভাইব্রেশন সম্পর্কে কোনো মতামত করছি না।


মন্দ দিকঃ
১. বাইক ঘোরাতে অনেক বেশি জায়গা লাগে। তাই সিটি রাইডে অনেক সমস্যা হয়।
২. বাইকে শাড়িগার্ড দেওয়া হয়নি।
৩. বাম্পার দেওয়া হয় নি।
৪. সি বি এস ব্রেক নাই।


পরিশেষেঃ
যদিও কোন বাইকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয় না। তবে এই বাজেটে লিফান কেপিআর ১৬৫ এফআই এর পারফরম্যান্স আমাকে সন্তুষ্ট করেছে। বাইকটি অন রোড ও অফ রোডে চালিয়ে অনেক ভালো লেগেছে।

All LIFAN bike price in bd

Lifan KPR 165 EFI