২০১৭ সালে মানে এই বছরে লনসিন জিপি বাইকটি বাংলাদেশে আসে। বাইকটি নিয়ে আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে বাইক নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা দেখি এবং বাইকটির নেভেটিভ সাইডের থেকে পজিটিভ সাইডগুলো আমার বেশি পছন্দ হয়। আমি মোঃ রাজিব খান পেশায় একজন ছাত্র।আমার বর্তমান ঠিকানা ঝালকাঠি,বরিশাল। আমি ৫ মাস যাবত লনসিন জিপি বাইকটি ব্যবহার করছি। বাইকটি ডিজাইনে অনেক সুন্দর এবং দামে অনেক কম তাই কিনে ফেলি। আমি এর আগে টিভিএস এপ্যাচি আরটিআর এবং বাজাজ এভেঞ্জার বাইকটি ব্যবহার করেছি। লনসিন জিপি বাইকটি ব্যবহারে আমার এই বাইক সম্পর্কে কিছু ভালো মন্দ দিক আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে চাই।আশা করি আপনারা আমার সাথেই থাকবেন।
এই বাইকটি কেনার মুল কারন হল বাইকটি ডিজাইনের দিক থেকে অনেক সুন্দর একটি বাইক। আমার কাছে ১৫০ সিসির বাইক হিসেবে
ডিজাইন একটু বেশী আসাধারন মনে হয়েছে। বাইকটি আমি ৫ মাস ধরে ব্যবহার করছি ।এই ৫ মাসে আমি বাইকটির কোন খারাপ দিক খুঁজে পায়নি। বাইকটি যথেষ্ট ভালো পারফরমেন্স দিচ্ছে। বাইকটির ডিজাইন এবং বিল্ড কোয়ালিটি বলতে গেলে অনেক ভালো এবং এখন পর্যন্ত ডিজাইন ও বিল্ড কোয়ালিটিতে কোন ঘাটতি খুঁজে পাই নি।
লনসিন জিপি বাইকটি আমাকে রাইডিং এর ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভালো আরাম এনে দেয়। বাইকটি হ্যান্ডেলবারটা ধরে অন্যরকম এক অনুভুতি আসে।অন্যদিকে দিকে হ্যান্ডেলবারের সাথে সংযুক্ত সুইচগুলো বেশ মজবুত ও ব্যবহার উপযোগী।বাইকটির হেডল্যাম্পটা অনেক স্টাইলিশ কিন্তু লো-বিমে কিছুটা আলোর স্বল্পতা দেখা দেয়। অন্যদিকে সিটিং পজিশনটা অনেক আরামদায়ক। বাইকটির সিটিং পজিশনে বসে হ্যান্ডেলবারটা ধরলে একটু রেসিং রেসিং ভাব চলে আসে। সব মিলিয়ে বাইকটি বেশ ভালো আরামদায়ক একটি বাইক।
বাইকটি কন্ট্রোলিং এর দিক দিয়েও বেশ ভালো। বাইকটির সর্বচ্চো গতি আমি পেয়েছি ১২৭ কিমি প্রতি ঘন্টা অনেকেই বলে যে এর টপ স্পীড তারা চেক করতে পারে নাই। আমি মনে করি একটা মাস্কুলার বাইক হিসেবে এর টপ স্পীড যথেষ্ট ভালো। বাইকটির ব্রেকিং টাও বেশ ভালো যেহেতু বাইকটিতে ডাবল ডিস্ক ব্রেকিং রয়েছে তাই আমি বলবো যে ব্রেকিং এর দিক দিয়ে অনেক সেফটি এবং আধুনিক ফিচার সমৃদ্ধ একটি বাইক। তবে মাঝে মাঝে একটু কষে ব্রেক করলে পেছনের চাকা স্লিপ খায়। আমি মনে করি যে এই সমস্যা তেমন একটা গুরুত্বর না কারন কষে ব্রেক করলে বেশীরভাগ বাইকের চাকা স্লিপ খায়। আমি বিভিন্ন এবরো- থেবড়ো, আঁকা বাঁকা রাস্তায় চালিয়েছি সেক্ষেত্রে আমি বাইকের সাসপেনশনের ভালো পারফরমেন্স পেয়েছি এবং এর সাসপেনশনটা আমার কাছে খুবই নরম মানে স্মুথ লেগেছে যেটা রাইডিং করার ক্ষেত্রে বেশ সহায়ক হয়।
বাইকটির একটা দিক আমার কাছে বেশ খারাপ লেগেছে সেটা হল এর তেল খরচটা। বাইকটিতে তেল খরচ অনেক বেশী। ১৫০ সিসি হিসেবে অন্যান্য বাইকের তুলনায় অনেক কম মাইলেজ দেয়। আমার মতে তেল খরচটা আরেকটু কম হলে নিশ্চিন্তে যে কোন জায়গায় রাইড করা যেত। যদিও এমন স্পোর্টস বাইকে তেল খরচ একটু বেশি হবে এটিই স্বাভাবিক।
তাদের আফটার সেলস সার্ভিস ভালো।আমি প্রায় সময়ই তাদের সার্ভিসিং সেন্টারে যাই এবং তাদের ঠিক করার মান, আচার ব্যবহার আমার কাছে ভালো লেগেছে। সব কিছু মিলিয়ে আমি বলবো তাদের সার্ভিসিং সেন্টারের মান আরেকটু উন্নত করলে ভালো হতো।
বাইকটির কিছু দিক যেগুলো আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে সেগুলো হলো –এর স্পীডটা অনেক ভালো, অনেক আরামদায়ক এবং কন্ট্রোলিং অনেক ভালো।
বাইকটির কিছু দিক যেগুলো আমার কাছে খারাপ লেগেছে সেগুলো হলো- বাইকটার সিট হাইট টা অনেক বেশী খাট রাইডারদের জন্য একটু সমস্যা অনুভব হতে পারে।
যারা বাইকটি নিতে চান তাদের কাছে আমার পরামর্শ হলো যে। যে সকল রাইডাররা তেল খরচের চিন্তা করেন না তারা নিঃসন্দেহে বাইকটি নিতে পারেন। এতক্ষন সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ সবাইকে।