আসসালামু আলাইকুম, আমি আবজাল হোসেন এবং আমার বর্তমান ঠিকানা নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার ভিতরভাগ গ্রামে। পেশাগতভাবে আমি একজন কৃষক। আমার বাড়ি গ্রামে হওয়ার কারনে বহুদিন থেকে আমি একটা বাইকের প্রয়োজন অনুভব করছিলাম কারণ আমাকে যাতায়াতের সময় বেশ সমস্যায় পড়তে হয় কিন্তু বিভিন্ন সমস্যার কারনে আমি মোটরসাইকেল কিনতে পারি না। গতবছরে আমি আমাদের স্বদেশি ব্রান্ড রানারের একটি মোটরসাইকেল কিনি যা আমি এখনও ব্যবহার করছি। আমি রানারের যে মোটরসাইকেল ব্যবহার করছি তা হলো “রানার আরটি”। কিছুদিন আগে মোটরসাইকেলভ্যালীর পক্ষ থেকে আমি আমার মোটরসাইকেলের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার প্রস্তাব পাই এবং আজ আমি আপনাদের সাথে আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার করার জন্য হাজির হয়েছি। আমি মনে করি, আপনাদের এ কথা বলে রাখা ভাল যে আমি কোন পেশাদার মোটরসাইকেল চালক না কাজেই যদি কোন ভুল আপনাদের চোখে পড়ে তবে তা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো।
আমি আমার মোটরসাইকেল বা অন্য কোন মোটরসাইকেল সম্পর্কে খুব বেশি জানা নেই তবে আমি আমার মোটরসাইকেল চালিয়ে যতটুকু বুঝতে পেরেছি তা আপনাদেরকে জানাবো। এই মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনটা বেশ ভাল সুবিধা দিচ্ছে কিন্তু একই সাথে কিছু সমস্যাও আমার চোখে পড়েছে। ইঞ্জিনটা খুব তাড়াতাড়ি গরম হয়, এটি গতি বেশ ভাল তুলতে পারে তবে গতি তুলতে অনেক সময় নেয় আবার তেল খরচটাও ভাল বলার মত না যা বর্তমানে আমি পাচ্ছি ৫০ কিলোমিটার প্রতি লিটার যা স্বাভাবিকভাবে সবাই একটু বেশি আশা করে ৮০ সিসি একটি মোটরসাইকেল থেকে। যদি সর্বোচ্চ গতির কথা জানতে চান? আমি ৭০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা সর্বোচ্চ গতি পেয়েছি।
এবার আসি এর গঠন নিয়ে কিছু কথা বলতে। আমি এর ডিজাইনটা সেভাবে পছন্দ করি না কারণ এর বডিতে ব্যবহৃত প্লাস্টিক গুলোর মান কোনভাবেই ভাল বলতে পারছি না আবার এগুলার স্থায়ীত্ব নিয়েও আমার সন্দেহ আছে। রংটি আকর্ষন করার মত কিন্তু এই মোটরসাইকেলটি দীর্ঘস্থায়ীত্ব নিয়ে আমার সন্দেহ থাকার কারনে আমি এর গঠনের মান নিয়ে সন্তুষ্ট না। আমার মোটরসাইকেলের বসার সীটটা বেশ নরম কিন্তু আমি তাতে বেশিক্ষন বসে থাকতে পারি না। বেশি গতিতে চালানোর সময় আমার পা ব্যাথা করে আবার অনেক সময় পিঠেও ব্যাথা অনুভব করি অনেকক্ষন ধরে মোটরসাইকেলে বসে থাকলে। আমি একদিনে ১০০ কিলোমিটার চালিয়েছি এবং তা থেকে আমি বলতে পারি যে এই মোটরসাইকেলটা লম্বা পথ পাড়ি দেওয়ার জন্য না। ব্রেক বলার মত ভাল তবে এর সাসপেনশন তেমন ভাল না আমার মতে। খারাপ রাস্তায় আমি সাসপেনশনের তেমন কোন কার্যকরি ভুমিকা খেয়াল করিনি যা আমার মতে এই বাইকের অন্যতম একটি নেতিবাচক দিক।
এই গুলোই মুলত আমার মোটরসাইকেলের বৈশিষ্ঠ যা আমি এখন পর্যন্ত অনুভব করেছি। সব মিলিয়ে ইঞ্জিনের পারফরমেন্স ভাল কিন্তু মাইলেজ ভাল না। ব্রেকিংটা ভাল সাপোর্ট দেয় কিন্তু সাসপেনশনটা ঠিক যেমন হউয়া উচিত ছিল তা একেবারেই না। আমার মোটরসাইকেলের গতি বলার মত ভাল কিন্তু বেশিক্ষন ধরে চালানোর মত না। তাই আমি মনে করি আমার মোটরসাইকেলের ভাল এবং খারাপ দুটা দিকই আছে।
আমি তাদের সার্ভিসিং সেন্টারে গিয়েছি এবং তাদের সার্ভিস নিয়ে আমি ৫০% খুশি কারণ তারা কাস্টমারের সাথে বেশ ভালোই আন্তরিক কিন্তু তাদের কাজের মান আমার কাছে ভাল লাগেনি।
সবশেষে আমার মোটরসাইকেলের মান বিবেচনা করে আমার মনে হয় এর দামটা একটু বেশি এবং কোম্পানির প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে যে এর নেতিবাচক দিকগুলাকে অতিসত্বর উন্নত করার জন্য। যদিও আমি এই বাইক নিয়ে তেমন সন্তুষ্ট না কিন্তু আমি বলব যে এটি প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য ভাল।