সবাইকে স্বাগত জানিয়ে আমি আমার পরিচয় দিয়ে আমার মোটরসাইকেল সম্পর্কে কিছু মতামত তুলে ধরছি। আমার নাম মোঃ মাসুম আলী। আমি একজন ব্যবসায়ী। মোটরসাইকেল কেনার ইচ্ছাটা আমার অনেক আগে থেকেই ছিল। ছোটবেলা থেকেই আমি মোটরসাইকেল এর উপর খুব আকৃষ্ঠ ছিলাম। তবে আমাদের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না। আমি আমার বন্ধুদের মোটরসাইকেল মাঝে মাঝে চালাতাম। যদিও অন্যের মোটরসাইকেল চালাতে আমার একটু খারাপ লাগতো। তখন আমি ভাবতাম আমারও নিজের যদি একটা মোটরসাইকেল থাকত। ভাল মাইলেজ পাবো এমন মোটরসাইকেল আমি অনেকদিন ধরেই খুজছিলাম। কিন্তু মনের মত একটাও খুজে পাচ্ছিলাম না। অনেকেই বিভিন্ন কোম্পানির মোটরসাইকেল এর কথা আমাকে বলেছিল। কিন্তু আআমার সসে গুলো পছন্দ হয় নাই। আমি চেয়েছিলাম আমার বাইকটা সকলের চেয়ে একটু ভিন্ন ধরনের হবে। তারপরে একদিন নাটোর শোরুমে গিয়ে মাহিন্দ্রা সেঞ্চুরো রকস্টার ১১০ সিসির বাইকটা দেখে আমার খুব ভাল লেগে যায়। অবশেষে এটি কিনার সিদ্ধান্ত নিই। আমি দেড় বছর আগে এই মোটরসাইকেলটি কিনেছি। আমি দেড় বছরে প্রায় ৯৫০০ কিমি পথ চালিয়েছি। তবে এটাই আমার জীবনের প্রথম বাইক। আমার ব্যক্তিগত কাজে জন্য মূলত এই মোটরসাইকেলটি কিনেছি। এই মোটরসাইকেলটির পারফরমেন্স খুব ভাল লেগেছে। তবে আমি শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী, তবুও মোটরসাইকেল চালাতে আমার খুব ভালই লাগে। এখন তো আমি এক দিন মোটরসাইকেল না থাকলে চলতেই পারবো না।
মাহিন্দ্রা ১১০ সিসি মোটরসাইকেলটির ডিজাইন ও ব্লিডিং কোয়ালিটি অসাধারণ। এই মোটরসাইকেলের বডির পার্টস ও প্লাস্টিক গুলো অনেক মজবুত মনে হয়েছে। একদিন আমার হাত থেকে মোটরসাইকেল পড়ে গিয়েছিল, কিন্তু মোটরসাইকেলটি পড়ে যাওয়াতে কোন প্রকার ক্ষয় ক্ষতি হয় নাই। তখন বুঝলাম সত্যিই এর বডির প্লাস্টিক গুলো বেশ মজবুত ও টেকসই। যা অল্প আঘাতে ভেংগে যায় না। এজন্য আমি একটু বেশিই খুশি।
এই মোটরসাইকেল থেকে আমি এখন পর্যন্ত ইঞ্জিন পারফরমেন্স খুব ভাল পাচ্ছি। মোটরসাইকেলটিতে এখনো বড় ধরনের কোন সমস্যা দেখা দেয় নাই। এছাড়া ইঞ্জিনটা আমার কাছে খুব শক্তিশালী মনে হয়েছে। এটি বেশিক্ষণ চললেও অন্যান্য মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিনের মত ওভার হীট হয় না। এজন্য বলছি আমার মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিনের পারফরমেন্স খুবই ভাল। আমি মনে করি এই মোটরসাইকেলটি যে কোন বয়সের মানুষের জন্য মানানসই।
মোটরসাইকেলটির সিটিং পজিশন অনেক ভাল হওয়াতে আমি এক সাথে তিন জন নিয়েও চালাতে করতে পারি। এই দিক থেকে আমার পরিবার নিয়ে যাতায়াত করে আমি অনেক
আনান্দ পাই। এছাড়া মোটরসাইকেলটি তেমন উঁচু না হওয়ায় সিটে বসে আমি খুব সহজেই মাটিতে পা রাখতে পারি। আমি হাই রোডে একদিন সর্বোচ্চ ৯৫ গতি তুলেছি। এছাড়া এক দিনে প্রায় ১০০ কিমি পথ চালিয়েছি। তবে দীর্ঘক্ষন বসে চালালে আমার কাঁধে, পিঠে, কোমরে হালকা ব্যথা করে। আমি দীর্ঘ যাতায়াত খুব কম করি। এই মোটরসাইকেল এর সুইচ গুলো দেখতে খুব সুন্দর, যা ব্যবহারে আমার কোন দিন সমস্যা হয় নাই। আমি রাতে বাইকটি চালিয়েও দেখেছি হেড লাইটে অনেক আলো দেয়। যা আমাকে পরিষ্কার রাস্তা দেখাতে সাহায্য করে। তবে এই মোটরসাইকেলটির সাসপেনশন গুলো খুব ভাল। অন্যান্য মোটরসাইকেলের মত খারাপ রাস্তায় অতিরিক্ত ঝাঁকুনি লাগে না। ব্রেক এর কথা বলতে গেলে ব্রেক খুবই ভাল কাজ করে। আমি এটি থেকে অনেক ভাল কন্ট্রোল করতে পারি। এর চাকা দুটো দেখতেও অনেক সুন্দর এবং চাকার গ্রিপ গুলো খুব ভাল। এছাড়া আমি মোটরসাইকেলে বসে গ্লাসের দিকে তাকালে পিছনের দৃশ্যটা খুব পরিষ্কার দেখতে পাই।
মোটরসাইকেলটি কিনার সময় শোরুম থেকে আমাকে বলেছিল এক লিটার তেলে ৬০ কিমি পথ চলতে পারবো। আমি ঠিক এই মাইলেজটি দেড় বছর পরেও পাচ্ছি। এ দিক থেকে আমি খুবই সন্তুষ্ট।
আমার মোটরসাইকেলটি এক দিনও সার্ভিসিং সেন্টারে সার্ভিসিং করাই নাই। আমি সব সময় আমার এক মেকানিক বন্ধুর কাছ থেকে সার্ভিসিং করিয়ে নিই। তবে আমি ১ দিন ঘুরতে ঘুরতে শোরুমে গিয়েছিলাম। নাটোরে আমার কিছু কাজ ছিল, তা শেষ করে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। তারা আমার সাথে ভাল ব্যবহার করেছে।
এই মোটরসাইকেল টির দামটা আমার কাছে একটু বেশি মনে হয়েছে। আমি মনে করি এই মোটরসাইকেলটির বিক্রয়ের হার বাড়াতে হলে দামটা আরো কিছু কমাতে হবে। আমি আগেও বলেছি মাইলেজ নিয়ে খুবই খুশি। এজন্য বলছি মাইলেজ বিবেচনায় মোটরসাইকেলটি খুবই ভাল।
সকলের উদ্দেশ্যে আমার পরামর্শ এই যে, কেউ যদি ১১০ সিসির মধ্যে মোটরসাইকেল কিনতে চান তবে আপনারা নিশ্চিন্তে মাহিন্দ্রা ১১০ সিসির মোটরসাইকেলটি কিনতে পারেন। মোটরসাইকেলটি মোটামুটি সব দিক থেকেই ভাল। দেড় বছর পরেও আমি এটি থেকে বড় কোন ধরনের সমস্যা দেখতে পাই নাই। আমার লিখার মাঝে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে সবাই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন, সবাইকে ধন্যবাদ।