
আমি মায়িশা তাসনিম, রাজশাহী বরেন্দ্র ইউনিভার্সিটির একজন ছাত্রী। খুব ছোটো থেকেই ইচ্ছে ছিলো বাইকে চেপে ঘুরে বেড়ানোর। ইচ্ছেগুলো আরো শাখা প্রশাখা মেলে ধরে যখন আমি ভার্সিটিতে ভর্তি হই। ভার্সিটি যাতায়াতের জন্য ব্যক্তিগত বাহনের প্রয়োজন থেকেই আমি কিনে ফেলি মাহিন্দ্রা রোডিও আরজেড স্কুটারটি।বিগত তিন বছরে স্কুটারে চেপে ছুটে বেড়িয়েছি রাজশাহী এবং এর পার্শ্ববর্তী জেলা গুলোর বিভিন্ন প্রান্তে। প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা মোটরসাইকেল ভ্যালীর মাধ্যমে প্রকাশ করতে চাই। আশা করি সাথেই থাকবেন।
রাজশাহীতে এমনিতেই স্কুটারের প্রচলন অনেক কম। আমি যখন স্কুটার কেনার আগ্রহ প্রকাশ করলাম তখন শোরুম গুলোতে তেমন সুন্দর ডিজাইনের স্কুটার ছিলো না। মাহিন্দ্রা রোডিও আরজেড স্কুটারটি আমার মোটামুটি ভালো লেগে যায় এবং আমি কিনে ফেলি। বলে ফেলা ভালো এটি আমার জীবনের প্রথম বাইক।

স্কুটারটি কেনার সময় এটি সাদা রং ছিলো। পরে আমি কিছু নীল রং করে নেই। তারও পরে লাল রং এর হাল্কা মডিফাই করি। স্কুটারটির ডিজাইন এবং গঠণ আমার মোটামুটি ভালোই লাগে।খারাপের কথা বলতে গেলে এর বডিতে ব্যবহৃত প্লাস্টিক গুলো খুবই নিম্নমানের। বাইক পড়ে গেলেই কিছু না কিছু ভেংগে যায়। আর সেক্ষেত্রে পার্টসগুলোও সহজে পাওয়া যায় না।
স্কুটারটিতে ১২৫সিসি ইন্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। আমার চলাচলের জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী এবং কার্যকরী বলেই আমি মনে করি। কেননা বিগত ৩বছরে প্রায় ১০হাজার কিমি এরও বেশি পথ চলেছি। ইনজিনটি ভালোই সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে। তবে দূরের পথে ইনজিনে কিছুটা নয়েজ তৈরী হয় এবং গরম হয়ে যায়।

৩ বছরের ব্যবহারের অভিজ্ঞতায় বলতে পারি স্কুটারটি ব্যবহারে যথেষ্ট আরামদায়ক, আমি এখনও খারাপ কো্ন সমস্যার সম্মুখিন হইনি। বাইকটির ব্রেকিং যথেষ্ট ভালো। তবে খারাপ রাস্তায় ঝাকুনি বেশি লাগে। শকআপ(সাসপেনশন) একটু হার্ড।
স্কুটারটির জ্বালানি খরচ কিছুটা হতাশ করেছে আমাকে। শোরুম থেকে ৬০কিমি/লিটার যাবে বললেও শুরুতে ৪০কিমি/লিটার এবং বর্তমানে ৩০-৩৫কিমি/লিটার পাচ্ছি। যা আমার জন্য কষ্টকর।
সার্ভিসিং সেন্টারের লোকজন আন্তরিক হলেও সহজে পার্টস পাওয়া যায় না, ফলে বাইকের একটু বড় সমস্যা হলে ১-২ মাস লেগে যায় সেটি সমাধান করতে।
বাইকের যে দিক গুলো খারাপ লেগেছে
- দুর্বল বিল্ড কোয়ালিটি
- কম মাইলেজ
- ইনজিন নয়েজ
- শক্ত সাসপেনশন
- স্পেয়ার পার্টস না পাওয়া
কোম্পানীর প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে বাইকের সমস্যাগুলোর দিকে দৃষ্টি দেয়া এবং পার্টসের সহজলভ্যতার দিকে খেয়াল রাখা। এছাড়াও টায়ারগুলো টিউবলেস হলে বেশি ভালো হতো বলে আমি মনে করি। একাধিক রং এর স্কুটার হলে পছন্দমতো রং বেছে নেবার সুযোগ থাকে। আগামিতে ইচ্ছে রয়েছে টিভিএস বা হোন্ডার কোনো স্কুটার কেনার।
সবাইকে ধন্যবাদ।