Yamaha Banner
Search

বাইকটি নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা ভাল নয় – রানার নাইটরাইডার ব্যবহারকারী নাঈমুল হাসান

English Version
2018-04-16


This user provides ratings about this bike


  5 out of 10
Design
Comfort & Control
Fuel Efficient
Service Experience
Value for money

বাইকটি নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা ভাল নয় – রানার নাইটরাইডার ব্যবহারকারী নাঈমুল হাসান



Runner-KnightRider-user-review-by-Nayemul-Hasan

রানার “নাইট রাইডার”- ২০১৭ সালে রানার এর মোটামুটি আলোচিত একটি বাইকের নাম। এর বাজার মূল্য ছিল – ১,৫৬,০০০/- টাকা, সি.সি-১৫০। আমি মোঃ নাঈমুল হাসান বিগত ২৩শে মে, ২০১৭ইং তারিখ এ অনেক আবেগের ঠেলায় একটি “নাইট রাইডার” কিনে ফেলি। ৭০০০/- টাকা ডিসকাউন্ট ও পাই। এখন পর্যন্ত মোট ১১,১১১ কি.মি চালাইলাম, এইবার আসি মূল কথায় কেমন হলো আমার অভিজ্ঞতা-



Runner-KnightRider-body-review-by-Nayemul-Hasan-02

আভিজ্ঞতা-১
অভিজ্ঞতা-১ মে-২০১৭ এর ২৩ তারিখ মালিবাগ শো-রুম থেকে অনেক আশা নিয়ে রানার নাইট রাইডার ক্রয় করি। ঝক-ঝকে/ তক-তকে। বাইক এর সাউন্ড ও বেশ ভালো, দেখতেও একটু ভাব-টাব আছে। নতুন কিনেই অনেক আবেগের ঠেলায় রেজিস্ট্রেশন করতে টাকা দিয়ে দিলাম শোরুমেই, এইবার বাধল ১ম বিপত্তি ১৫ দিন পর ব্যাংক জমার স্লিপ পাইলাম। (যেই জায়গায় নিজে দিলে ১দিনেই সম্ভব) তার পরেও মেনে নিলাম উনারা অনেক বাইক এর পেপার একসাথে করতে দেয় তাই দেরি হইছে। তার ১০-১২ দিন পর বাইক এর নাম্বার আর বাকি পেপার গুলো দিয়ে দিল। মোট কথায় বাইকের রেজিঃ নাম্বার পেতে পেতে–১মাস।



Runner-KnightRider-meter-review-by-Nayemul-Hasan-03

অভিজ্ঞতা-২
এই বার আসি বাইক এর কথায়- ১ম ৩-৪দিন খুব ভালই গেল, সাউন্ড বেশ ভালো, ৪০-৫০ স্পীড এ বাইক চালাই নতুন বাইক বলে কথা আর.পি.এম- ৪-৫ এর মধ্যে ব্রেকিন প্রিওড তাই কোন টানা-টানি হবে না। ৫-৬ দিন পরেই বাধল বিপত্তি – বাইক থেকে “ক্যাঁচ-ক্যাঁচ” শব্দ- মনে হইতেছে বাশর ঘরে নতুন বউ নিয়া শুইতে গেছি পুরান খাটে, আরে কি মুসিবত। রাস্তায় ৩/৪ জন নাইট রাইডার চালক ভাইদের কে জিজ্ঞাস করলাম “ভাই আপনাদের বাইক ও কি শব্দ হয়” তারা বললেন তাদের ও এই সমস্যা ছিল তবে ১ম সার্ভিসিং এর পর ঠিক হয়ে গেছে। আহ আলহামদুলিল্লাহ্ বাঁচা গেল- কথা শুনে আশ্বস্ত হলাম। অপেক্ষা করতে লাগলাম ১ম সার্ভিসিং এর সময় পর্যন্ত। বেশি দিন আর বাইক বাবাজির তর সইল না- ১দিন রাস্তায় সুন্দর আমাকে দার করাইয়া দিলেন, “গিয়ার বক্স ব্লক” ১ম গিয়ার থেইকা ২য় গিয়ার আর বাইক নিতে পারি না। বাধ্য হয়েই সার্ভিসিং সেন্টার এ নিয়ে গেলাম। সার্ভিসিং করাইলাম, ক্যাঁচ-ক্যাঁচ বন্ধ হইল (এখন আর নাই) গিয়ার বক্স এর সমস্যা ও ঠিক হইল (তবে পুরাপুরি না)। সার্ভিসিং ততটা সুবিধার মনে হইল না। এখন পর্যন্ত ১১,১১১ কি.মি হইয়া গেছে কিন্তু বাইক এর এই গিয়ার এর সমস্যা আজও পুরাপুরি সমাধান হয় নাই।

অভিজ্ঞতা-৩
১ম সার্ভিসিং এর পর ৫-৬ দিন কোন ঝামেলা পোহাইতে হয় নাই। ১টা ব্যাপারেই সমস্যা মনে হইতেছিল যে বাইক বাবাজি তেল একটু বেশী খাইতেছেন। আগে চালাইছি ১২৫ সি.সির বাইক লিটারে ৪৫-৪৮কি.মি পাইছি এখন ১৫০ সি.সি কিনছি লিটারে জায় ২৬-২৭ কি.মি, সার্ভিসিং সেন্টার এর ১জন ভাই এর সাথে কথা বললাম, উনি বলল ভাই কয়েক দিন একটু বেশী তেলে চালান ইঞ্জিন ভালো থাকবে,উনার কথা শুইনা চিন্তা করলাম থাক একটু বেশী তেলেই চালাই ভবিষ্যৎ ভালো হবে। অবশেষে ৯০০০ কি.মি চালানোর পর বাধ্য হয়ে পকেটের টাকার কথা চিন্তা করে কার্বোরেটর খানা পরিবর্তন করি, যার বিনিময় এখন লিটার এ ৩৫-৩৭ কি.মি পাই। সার্ভিসিং এর ৫-৬ দিন পর থেকেই বাইক এর খালি “স্টার্ট ছেরে দেয়” আচ্ছা ভেজাল তো ভাবলাম ক্লাস-রেইস এডজাস্ট হইতেছে না। নিয়া গেলাম আবার সার্ভিসিং সেন্টার এ ওই ভাই কে পাইলাম, বললাম ভাই এই সমস্যা উনি দেখলাম ক্লাস টা একটু টাইট কইরা দিল আর রেইস ও একটু বারাইয়া দিল। ১-২ দিন এইভাবে বাইক চালাইয়া মনে হইল এই ক্লাস এ ঢাকা সিটির রাস্তায় বাইক চালাইলে আমার বাম হাত খানা দিয়া কাজকর্ম করতে ভবিষ্যতে ভালই বেগ পোহাতে হবে, ক্লাস টা এইবার নিজেই একটু লুজ দিয়া নিলাম। বার বার কি সার্ভিসিং সেন্টার এ জাওয়া সম্ভব? তাই এই “স্টার্ট ছেরে দেয়া” সমস্যার সমাধান এখনও হয় নাই। একটু হাল্কা পিকাআপ এ রাইখা বাইক চালাইতে হয় এই আরকি। এই পর্যন্ত মোট ১১,১১১ কি.মি এ ক্লাস ক্যাবল পালটাইছি ৩ বার। নাইট রাইডার কেনার পর থেইকা ১ টা সমস্যা প্রতি্নিয়তই হইতেছিল যেটা ১ম এ ততটা মাথায় আনি নাই “চেইন বার বার লুজ” হয়ে যায়, ২-৩ দিন পর পরই টাইট দেয়াই ঠিক হয়ে যায়, কিন্তু হটাৎ করে ১দিন থেকে টাইট দিয়া আর লাভ হইতেছে না অনবরত চেইন স্পোকেট থেইকা শব্দ হইতেছে, বুঝলাম চেইন স্পকেট বাবাজি শেষ ২৯০০ কি.মিতেই। গেলাম সার্ভিসিং সেন্টার এ সব সমস্যার কথা বললাম ‘বললাম আমার চেইন সেট বদলাইয়া দেন’ ‘ক্লাস ক্যাবল টাইট হইয়া যায় এইটা ও বদলাইয়া দেন’- এখন বলে চেইন সেট টাকা দিয়া কিনতে হবে, এইটা নাকি ওয়ারেনটির মধ্যে পরে না, উনাদের কাছে স্পেয়ার পার্টস ও নাই ৩-৪ দিন পর যোগাযোগ করতে। -এই বার বলেন আমার কি করা উচিৎ, আমার বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা থেকে বলতেছি (ভুল হইলে ক্ষমা করবেন) ৫০০০-৬০০০ কি.মি তেও যদি চেইন সেট বাদ হইত দুঃখ ছিল না, ৩০০০ এর আগেই চেইন সেট পালটাইতে হইব তাও আবার সেটা তারা দিবে না, এ কেমন বিচার ???? যাই হোক পুরা চেইন স্পোকেট সেট পাল্টাইয়া হিরো হাঙ্ক এর চেইন স্পোকেট লাগাইলাম, এখন পর্যন্ত এইটা ভালই চলতেছে।

অভিজ্ঞতা-৪
এখন পর্যন্ত নাইট রাইডার বাইকটি চালাইয়া যা বুঝলাম এই বাইক গুলোর ইঞ্জিন কন্ডিশন খুব বেশি খারাপ না, বাইকের টান ও মোটামুটি ভাল। (যদিও আমি ৭০-৮০ স্পীড এর চলক,২-৩ বার মনে হয় ১০০ র উপর তুলছিলাম) তবে কোম্পানি বাইকগুলোর নির্মাণ এ অনেক বেশি নিম্ন মানের পার্টস ব্যাবহার করেছে, যেমন- ব্রেকশু, ক্লাস ক্যাবল, ক্লাস প্লেট, চেইন স্পোকেট, কার্বোরেটর ইত্যাদি। রানার এর সার্ভিসিং ও খুব বেশি ১টা ভাল না। বাইক কেনার পর থেকে এই পর্যন্ত বরাকরই মটুল-20w-40 গ্রেড এর ইঞ্জিন অয়েল ব্যাবহার করেছি, যার কারনে আমি বাইকের পারফর্মেন্স মোটামুটি ভালোই পেয়েছি। ১০,০০০ কি.মি থেকে 20w-50 (Technosynthese) গ্রেড এর ইঞ্জিন অয়েল ব্যাবহার করছি। এখন দেখা যাক নাইট রাইডার আমাকে আর কতটুকু সার্ভিস দেয়।

আমার মূল কথা হল যেই টাকা দিয়ে আমরা রানার কোম্পানির বাইক কিনতেছি সেই সমপরিমাণ টাকা দিয়ে হয়ত বা অন্য কোন ব্রান্ড এর ইন্ডিয়ান বাইক কেনা সম্ভব, তবে কিস্তির সুবিধা প্রদান করার জন্য এই বাইক গুলোর প্রতি আমাদের আগ্রহ হচ্ছে, কিন্তু কোম্পানি চাইলেই এই নিম্ন মানের পার্টস গুলোর পরিবর্তে ভাল পার্টস দিয়ে বাইকগুলো বাজারে ছাড়তে পারে। তাই নয় কি???

পুরো রিভিউটি ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

মোঃ নাঈমুল হাসান, টিম থ্রটলার এর একজন সদস্য।


Rate This Review

Is this review helpful?

Rate count: 156
Ratings:
Rate 1
Rate 2
Rate 3
Rate 4
Rate 5

More reviews on Runner KnightRider

বাইকটি নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা ভাল নয় – রানার নাইটরাইডার ব্যবহারকারী নাঈমুল হাসান
2018-04-16

রানার “নাইট রাইডার”- ২০১৭ সালে রানার এর মোটামুটি আলোচিত একটি বাইকের নাম। এর বাজার মূল্য ছিল – ১,৫৬,০০০/- টাকা, সি.সি...

Bangla English
2017-06-24

বিভিন্ন মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারক এর মধ্যে রানার অটো মোবাইল একটি উদীয়মান এবং স্বদেশী মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারক ...

Bangla English
Filter