মাইলেজ খুব কম - এইচ পাওয়ার জারা ১০০ সিসি মোটরসাইকেল ব্যবহারকারী পলাশ কুমার

বাংলাদেশে প্রায় প্রতিটি ব্যক্তির কাছেই মোটরসাইকেল একটি জনপ্রিয় বাহন। কারণ, মোটরসাইকেল এর মাধ্যমে যে কোন সময় অতি দ্রুত যাতায়াত করা যায়। সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি পলাশ কুমার। আমি একজন ব্যবসায়ী। আমার ব্যবসার কাজের জন্য ও ব্যক্তিগত কাজের উদ্দেশ্যে এই মোটরসাইকেলটি মূলত আমি কিনি। আমার মোটরসাইকেল এর নাম এইচ পাওয়ার জারা ১০০ সিসি। এই মোটরসাইকেলটি আমি “এ কে মটরস” পুঠিয়া, রাজশাহীর একটি শোরুম থেকে কিনি। মোটরসাইকেলটি আমি ৬ মাস যাবত ব্যবহার করছি। ৬ মাসে প্রায় ৯,০০০ কিমি পথ চালিয়েছি। আজকে আমি আমার এইচ পাওয়ার জারা ১০০ সিসি মোটরসাইকেল সম্পর্কে ভাল ও মন্দ কিছু বিষয় সবার সামনে তুলে ধরবো। এটা আমার জীবনের প্রথম মোটরসাইকেল। আমি নিজের পছন্দ অনু্যায়ী মোটরসাইকেল কিনছি। আগে থেকে আমার কোন পছন্দ ছিল না। মোটরসাইকেলটি কিনার ৫ দিন পরেই আমার মন ভেংগে যায়। কারণ, মোটরসাইকেলটিতে তেল শেষ হয়ে যাবার পরে যদি আবার তেল তুলি, তখন আর স্ট্রাট হয় না। যতই চেষ্টা করি কোনই লাভ হয় না। নতুন মোটরসাইকেল হিসেবে এই সমস্যাটি আমার কাছে খুব বিরক্তিকর। আমি সমস্যাটি নিয়ে সার্ভিসিং সেন্টারে গিয়েছি, তারা সমস্যাটি সমাধান করে দেবার ২ দিন পরে আবার দেখি সেই সমস্যাটি থেকেই গেছে। এছাড়াও মোটরসাইকেলটির তেল খুবই বেশি। আমি পুঠিয়া থেকে নাটোর ১ বার যাওয়া-আশা করলেই ১ লিটার তেল শেষ হয়ে যায়। এই দুইটা সমস্যাকে আমি মেজর সমস্যা মনে করছি।

আমি এই মোটরসাইকেলটি শুধু পারফরমেন্স বিবেচনা করে কিনি নাই। বরং বাইকের ডিজাইন ও ভাল মাইলেজ পাবার আশায় কিনেছি। এই ডিজাইনটা আমার কাছে পারফেক্ট মনে হয়েছে। এছাড়া আমার কাছে এর বডির প্লাস্টিকগুলোও অনেক মজবুত মনে হয়েছে, যা খুব সহজে ভেংগে যায় না। আমি মনে করি এই মোটরসাইকেলটি যে কোন বয়সের মানুষের সাথে মানানসই হবে। এই ডিজাইন নিয়ে আমি খুব সন্তুষ্ট।

এখন ইঞ্জিনের পারফরমেন্স বিষয়ে কিছু কথা বলব। ১০০ সিসির মোটরসাইকেল হিসেবেও এটি অনেক ভাল শক্তি উৎপন্ন করতে পারে। কারন এর ইঞ্জিন খুব শক্তিশালী মনে হয়েছে। আমি খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে একটি সঠিক গতিতে নিমিষেই তুলতে পারি। এই মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিনের শব্দটা অনেক সুন্দর। তাছাড়া অন্যান্য বাইকের মত এই ইঞ্জিনের ভেতরে কোন খারাপ শব্দ করে না। তবে বেশিক্ষণ চললে মোটরসাইকেলটির ইঞ্জিন একটু বেশিই গরম হয়। এই বাইকের ইঞ্জিনের কোন সমস্যা নেই। কিন্তু আমি ভাল মাইলেজ পাই না। এছাড়া মোটরসাইকেলটির কন্ট্রোল অনেক ভাল। তবে ডিস্ক ব্রেক বা হাইড্রোলিক ব্রেক থাকলে আরো ভাল কন্ট্রোল করা যেত। এছাড়া অতি বেশী স্পীডে একটু ঝাঁকুনি মনে হয়, তবে এটি আমি এমন আমলে নেই নাই। কারণ আমি বেশি স্পীডে মোটরসাইকেল চালাই না।

এই মোটরসাইকেলটি কেনার সময় আমাকে বলা হয়েছিল ১ লিটার তেলে প্রায় ৬০ প্লাস কিমি পথ চলা যাবে। আমি এক দিনের জন্যেও এই মাইলেজ পাই নি। । তেল খরচ কম হবে ভেবেই আমি ১০০ সিসির এই মোটরসাইকেলটি কিনিছি। এখন আমি ১ লিটার তেলে ৪৩ কিমি পথ চলতে পারি। এজন্য আমার মনটা অনেক খারাপ। তাদের কথার সাথে কাজের মিল পাই নাই।

আমি সার্ভিসিং সেন্টারে যখন সার্ভিসিং করাই, তখন সাথে সাথে সমস্যাগুলো থাকে না। কিন্তু এক বা দুই দিন পরে থেকেই সেই সমস্যা জেগে উঠে। তবে তাদের ব্যবহার খুব ভাল। তাদের কাজের মান আমার ভাল লাগে নাই। সকল পারফরমেন্স বিবেচনায় এই মোটরসাইকেল এর দাম আমার কাছে অনেক বেশি মনে হয়েছে। এগুলো বিবেচনা করে দামটা আরো কম হলে ভাল হত।

মোটরসাইকেলটির সিটিং পজিশন খুব ভাল। সিট নরম হওয়ায় সিটে বসে আরাম আছে। এক সাথে ২/৩ জন বসে আমি আরামেই রাইডিং করতে পারি। আমি আমার পরিবার নিয়ে এক সাথে চলাচলের জন্য এমন সিটিং পজিশন দেখেই মোটরসাইকেলটি কিনেছি। এছাড়া সিটে বসে আমি খুব সহজেই মাটিতে পা রাখতে পারি। কারন এটি খুব বেশি উঁচু না। এর সুইচ গুলো দেখতে সুন্দর ও এগুলো ব্যবহার করতে আমার কোন সমস্যা হয় না। এছাড়া রাতে হেড লাইট থেকে প্রচুর আলো পাই। আমি মোটরসাইকেলটি হাই রোডে সর্বোচ্চ ৮০ গতিতে তুলেছি। তবে ৭০ এর উপরে গতি তুললে আমার হাত ঝিনঝিন করে। এছাড়া এক দিনে প্রায় ১০০ কিমি পথ চালিয়েছি। তবে দীর্ঘক্ষণ বসে রাইড করলে হাতে, পিঠে, কোমরে ব্যথা করে। এই মোটরসাইকেলটির সাসপেনশন আমার পছন্দ হয় নাই, কারণ খারাপ রাস্তায় এক থাকলে খুবই ঝাঁকুনি অনুভব করি। তবে এর কন্ট্রোল মোটামুটি ভাল। এর লুকিং গ্লাস থেকে আমি খুব সহজেই পিছনের দৃশ্য পরিষ্কার দেখতে পাই।

পরিশেষে আমি কোম্পানির উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আগামীতে এমন সমস্যা সমৃদ্ধ বাইক বাজারে ছাড়লে হয়তবা এইচ পাওয়ার জারা ১০০ সিসি মোটরসাইকেল এর উপর মানুষের আস্তা হারিয়ে যাবে। আমার এই মেজর সমস্যা দুটি পরবর্তী বাইক গুলোতে যেন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন এবং এই সমস্যার সমাধান করবেন। সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমার কথা শেষ করছি।

All H POWER bike price in bd

H Power Zaara 100