দাম কমানো উচিৎ - ইয়ামাহা এফজিএস এফআই ব্যবহারকারী আলমগীর কবীর

বাইক চালানোর হাতেখড়ি হয় ডায়াং ৮০ সিসি দিয়ে। তখন বাইকটি ৮০ সিসি হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলো। সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে আমার বাইক পরিবর্তন হতে থাকে। ডায়াং ৮০ সিসি বাইকের পর আমি ব্যবহার করি হিরো হোন্ডা প্যাশান এরপর ডিস্কোভার ১৩৫ সিসি, হিরো আইস্মার্ট এবং সর্বশেষ হিরো আইস্মার্টের পাশাপাশি একটি বাইককে আপন করে নিই যার নাম ইয়ামাহা এফজিএস ভার্সন ২ । এফজিএস ভার্সন ২ বাইকটি মূলত লং ট্যুর দেও্যার জন্য কেনা কারণ আমি লং ট্যুর দিতে খুব ভালোবাসি এবং যখনই কোন ট্যুরে যাই সংগে আমার এফজিএস কে নিয়ে যাই। আমি এফজিএস নিয়ে রহনপুর টু সিলেট ট্যুর দিয়েছি । আজকে আমি মোটরসাইকেল ভ্যালীতে নিজস্ব রাইডিং অভিজ্ঞতা তুলে ধরবো।



আমি মোঃ আলমগীর কবীর পেশায় ব্যবসায়ী পাশাপাশি ইয়ামাহা এফ জি এস ভার্সন ২ এর গর্বিত মালিক। ১ বছর আগে রাজশাহীর স্বনামধন্য ইয়ামাহার ডিলার “কেআর বাইক সেন্টার” থেকে বাইকটা কিনি এবং এখন পর্যন্ত কোন ঝামেলা ছাড়াই ৬৮০০ কিমি রাইড করে ফেলেছি। চলুন আজকে আমি এই বাইকের কিছু ভালো মন্দ দিক ও আমার রাইডিং অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করা যাক।

ইঞ্জিন
আগের ভার্সনের তুলনায় ইঞ্জিনের শক্তিটা কম লেগেছে তবে পারফরমেন্স অসাধারণ। ইঞ্জিনের বাজে কোন শব্দ নাই এবং খুব স্মুথ চলে। আমি ইঞ্জিনের শক্তি বেশি চাইব কারণ হাইওয়েতে কোন বড় গাড়িকে ওভারটেক করার জন্য ইঞ্জিনের ভালো শক্তি প্রয়োজন যেটা ইয়ামাহা এফ জি এস ভার্সন ২ দিতে পারে না। বাইকটি ৮০ কিমি স্পিড অতিক্রম করার পর ইঞ্জিনের আর কোন শক্তি উপলব্ধি করতে পারি না। এই ব্যাপারে নজর দেওয়া প্রয়োজন।

ডিজাইন ও বিল্ড
ডিজাইনের দিক দিয়ে বাইকটা আমার কাছে মার্জিত ডিজাইন বলে মনে হয়েছে কিন্তু ডিজাইনটা আরেকটু উন্নত করার সুযোগ ছিলো কেনানা এর অসহনীয় দামের সাথে এই রকম ডিজাইন মানায় না। বিল্ড কোয়ালিটি আমার কাছে মজবুত ও টেকসই মনে হয়েছে।

আরাম
আরামের দিক দিয়ে আমি বলবো যে বাংলাদেশে এর চেয়ে বেশি আরামের বাইক নাই। লং ট্যুরের জন্য খুবই মজাদার একটি বাইক এবং দীর্ঘক্ষণ রাইড করলেও মনে হবে না যে আপনি দীর্ঘক্ষন রাইড করেছেন। সিটিং পজিশন ভালো,হ্যান্ডেলবার সোজা এবং এর সাথে সংযুক্ত সুইচগুলো ভালো কাজ করে কিন্তু একটা বিষয়ে আমার খুব খারাপ লেগেছে সেটা হলো এর হেডল্যাম্পের আলো এবং ব্যাটারী। হেডল্যাম্পের আলো রাতের অন্ধকারে রাইডের জন্য যথেষ্ট না এবং ব্যাটারী এর মান একদমই ভালো না। এই বাইকের হেডল্যাম্প ও ব্যাটারী আরও উন্নত করা উচিত বলে আমি মনে করি।

কন্ট্রোল
কন্ট্রোল এর দিক দিয়ে আমি এই বাইককে ১০০ তে ১০০ দিবো। যে কোন রাস্তায় যে কোন পরিস্থিতিতে খুব সুন্দরভাবে কন্ট্রোল করা যায় । আমি বাইকের টপ স্পীড পেয়েছি সিংগেল ১১৫ এবং পিলিয়ন নিয়ে ১১০। প্রথমের দিকে এই রকম টপ স্পীড পেতাম কিন্তু এখন ১০৫ এর বেশি হয় না তবে উচ্চ গতিতে বাইকের কন্ট্রোল একদম হাতে থাকে। ব্রেকিং সিস্টেম গুলো খুব চমৎকার কাজ করে, চাকা লক করতে দেয় না যার কারণে কোন স্কীড ও আমি পাইনা। খারাপ রাস্তায় চলাচলের জন্য কিংবা হাইওয়েতে সুন্দর ব্যালেন্স দেওয়ার জন্য বাইকের সাসপেনশন অনেক ভালো লেগেছে।

মাইলেজ
১৫০ সিসি হিসেবে বাইকের মাইলেজ আমার কাছে স্বাভাবিক মনে হয়েছে। কারণ গতি,ওজন সব কিছু মিলিয়ে আমি মাইলেজ পাচ্ছি ৪১ কিমি/লিটার। মাইলেজ নিয়ে আমার কোন মাথাব্যাথা নেই।

সার্ভিস সেন্টার
আমি তাদের সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে খুবই হতাশ। এতবড় একটা ব্রান্ডের সার্ভিস সেন্টার যদি এই রকম হয় না জানি অন্যান্য ব্রান্ডের কি হাল হবে। আমি একবার তাদের সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে খারাপ ব্যবহার ও নিম্ন ঠিক করার মান লক্ষ্য করেছি। এরপর থেকে তাদের সার্ভিস সেন্টারে আমার যেতে ইচ্ছে হয় না।

দাম
কোয়ালিটি, পারফরমেন্স ও অন্যান্য সব কিছু বিবেচনায় দামটা একটু বেশি মনে হয়েছে। কারণ এই রকম ডিজাইন, গঠন সমৃদ্ধ বাইকের দাম নুন্যতম ২ লক্ষ কিংবা ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করা উচিত।

ভালো দিক
-কন্ট্রোল ভালো
-আরামদায়ক বাইক
-হ্যান্ডেলবার অনেক মজার

খারাপ দিক
-সার্ভিস সেন্টার
-ইঞ্জিনের টপ স্পীড কম

পরিশেষে আমার শুধুমাত্র এটাই পরামর্শ থাকবে যে তাদের বাইকের দামটা একটু কমানো এবং সার্ভিস সেন্টারে ভালো টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেওয়া।

All YAMAHA bike price in bd

Yamaha FZS Fi v2