সার্ভিস সেন্টার এর মান আরো উন্নত করা দরকার – টিভিএস এপাচি আরটিআর ১৬০ ব্যবহারকারী নয়ন

আমার জীবনে বাইক চালানো শুরু হয় টিভিএস মেট্রো ১০০ সিসি দিয়ে। টিভিএস মেট্রো বাইকটি আমার প্রথম বাইক ছিলো এবং প্রথম বাইক হিসেবে বলতে গেলে সেটা আমার অনেক শখের বাইক ছিলো। বাইক চালানো শেখার পর আমার গ্রামের রাস্তা সহ বিভিন্ন রাস্তায় দাপিয়ে বেরিয়েছি । ১০০ সিসির বাইক ব্যবহার করতে করতে এক পর্যায়ে মনে হলো যে একটু সিসি বাড়ানো যাক তাই বাইক পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিলাম । মানুষের চাহিদার কোন শেষ নেই এবং আমার চাহিদানুযায়ী একটি বাইক চোখে পড়ল সেটা হল টিভিএস এপ্যাচি আরটিআর ১৬০। বাইকটি সদ্য বাজারে এসেছে এবং লুকিং বলতে গেলে আগের ১৫০ সিসি এপ্যাচির মতই আছে। প্রথমে ভাবলাম যে এটা ১৫০ সিসি কে ১৬০ সিসি বানিয়েছে কি/না এবং কেনার পর আমার তাই মনে হয় যে এটা ১৫০ সিসির মতই অনুভুতি। আমার মনে হয় আগের যে এপ্যাচি গুলো ছিলো সেগুলো ১৬০ সিসির কারণ বর্তমান ১৫০ ও ১৬০ সিসি তে ব্যাক্তিগতভাবে কোন অমিল নাই। যদিও কোম্পানী দাবি করে যে টেকনিক্যাল কিছু বিষয় পরিবর্তন করা হয়েছে তবে আমার কাছে পূর্বের এপ্যাচির মতই মনে হয়েছে।

আমি মোঃ নয়ন আলী বর্তমানে পড়াশোনা করছি। আজকে আমি টিম মোটরসাইকেলভ্যালীর মাধ্যমে টিভিএস এপ্যাচি আরটিআর ১৬০ এর ভালো মন্দ কিছু বিষয় তুলে ধরবো। আশা করছি আপনারা আমার সাথেই থাকবেন।

ইঞ্জিন
ইঞ্জিনের ব্যাপারে বলতে গেলে আমি পূর্বের এপ্যাচির মতই অনুভব করছি। ইঞ্জিনের শব্দ, গতি সব কিছুই আগের মডেলের মতই মনে হয়েছে । তবে ইঞ্জিনের পারফরমেন্সের কথা যদি বলি তাহলে বলতে হয় যে অনেক গতি সম্পন্ন ইঞ্জিন এবং যথা সময়ে সঠিক গতি তুলতে পারে। এক কথায় টিভিএস এপ্যাচির ইঞ্জিন দানবীয়।

ডিজাইন
টিভিএস এপ্যাচির ডিজাইন আমার প্রথম থেকেই খুব ভালো লাগে। ডিজাইনটা ১৬০ সিসি হিসেবে একটু ভিন্ন করা উচিত ছিলো তবুও আমি নারাজ না কারণ আমি আগেই বলেছি এপ্যাচির ডিজাইন আমার অনেক ভালো লাগে। সুন্দর মাস্কুলার ফুয়েল ট্যংকার, কালার কম্বিনেশন এসব কিছু মিলিয়ে ডিজাইনটাকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে। ডিজাইনের পাশাপাশি যদি বিল্ড নিয়ে বলি তবে অবশ্যই বলতে হয় যে বাইকটা অনেক মজবুত। বিভিন্ন বডি পার্টসগুলো পড়ে গেলে সহজেই ভেংগে যায় না এবং খারাপ রাস্তাতে এর বডি পার্টসগুলো আমাকে অনেক আত্মবিশ্বাস এনে দেয়। তাই ডিজাইন ও বিল্ড নিয়ে আমি খুব সন্তুষ্ট।

আরাম
আরামের বিষয়ে এই বাইকটা বলে গেলে মোটামুটি আরামদায়ক কারণ বাইকের সিটিং পজিশন ও হ্যান্ডেলবারের কম্বিনেশনটা লম্বা মানুষদের জন্য আরামদায়ক নয়। তারা যদি এই সিটিং পজিশনে বসে বেশিক্ষন রাইড করে তবে আমার বিশ্বাস তাদের কব্জি, কোমড় ইত্যাদি ব্যাথা করবে। আমার কাছে তেমন ব্যাক পেইন হয় না কিন্তু লংট্যুরে গেলে ব্যাক পেইন বোঝা যায়। তাই আরামের দিকে দিয়ে এপ্যাচি আরটিআর তেমন আরামদায়ক না।

হেডল্যাম্প ও ইলেকট্রিক্যাল
হেডল্যাম্পের আলো রাতের বেলা অনেক ভালো হয় এবং আমি স্বাভাবিক ভাবেই রাতে খুব সুন্দর রাইড করতে পারি। হেডল্যাম্পের আলো নিয়ে আমার তেমন কোন ঝামেলা হয় না। অন্যদিকে ইলেকট্রিক্যাল বিভিন্ন পার্টস গুলো অনেক ভালো কাজ করে যেমন- টার্ন লাইন, সুইচ ইত্যাদি আমাকে বিড়ম্বনায় ফেলে না।

কন্ট্রোল
কন্ট্রোল আমার কাছে একটু খারাপ লেগেছে কারণ সামনের দিকে মানে হ্যান্ডেলবার ধরলে বোঝা যায় যে মাথা অনেক ভারি এর কারণে বেশি স্পীডে কন্ট্রোল করতে সমস্যা হয় এবং এমনি শহরের মধ্যেও কন্ট্রোল করতে আমার অসুবিধা হয় । বাইকটি বেশি স্পীডে প্রচুর ভাইব্রেট করে আমি নিজেই টপ স্পীড ৮৫ কিমি তুলেছি এর বেশি তোলা আমার পক্ষে তোলা সম্ভব হয় নি। ব্রেকিং সিস্টেম আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি যে একটু উন্নত করা উচিত কারণ ব্রেক করলেই চাকা স্কীড করে। সাসপেনশন গুলো আরেকটু উন্নত করা গেলে আমার জন্য ভাংগা রাস্তা চলাচল করতে সুবিধা হত। সব মিলিয়ে কন্ট্রোল মোটামুটি।

মাইলেজ
মাইলেজ আমি মোটামুটিভাবে পাচ্ছি ৩৫-৪০ কিমি/লিটার। ১৬০ হিসেবে মাইলেজটা ঠিকই মনে হয়েছে কারণ এই রকম একটা দানব কে রাস্তায় চলার জন্য তেল তো অবশ্যই পুড়াতে হবে।

সার্ভিস সেন্টার
সার্ভিস আমি টিভিএস এর অফিশিয়াল সার্ভিস পয়েন্ট থেকে করাই। সার্ভিস এর মান বিবেচনা করলে আমার কাছে তাদের সার্ভিস মান একটু খারাপ মনে হয়েছে। তাদের সার্ভিস মান আরও উন্নত করা উচিত বিশেষ করি টেকনিশিয়ানরা গ্রাহকদের প্রতি আরও যত্নবান হওয়া উচিত।

দাম
দামটা আমি অবশ্যই বলবো যে বেশি কারণ তারা আগের মডেলটাই রেখেছে এবং দামটা বৃদ্ধি করেছে। আমি বলবো যে দামটা ১৫০ এর মত করা হউক।

আমার কাছে খারাপ দিক বলতে দামটা একটু বেশি লেগেছে। কোম্পানীর কাছে এই বিষয়টি সমাধানের জন্য অনুরোধ থাকবে। ধন্যবাদ সবাইকে।

All TVS bike price in bd

TVS Apache RTR 160 SD