বাংলাদেশের জনপ্রিয় বাইক পালসার ব্যবহার করার পর ভাবলাম যে এই বার একটু ভিন্ন বাইক কেনা যাক কারণ আমার একটা বাইক বেশিদিন ব্যবহার করতে ভালো লাগে না। পালসার বাইক ব্যবহার ছেড়ে আমি ব্যবহার করতে লাগলাম সুজুকি জিক্সার এসএফ। কারণ বাইকটার মাস্কুলার বডি কিট, ডিজাইন ইত্যাদি আমার ভালো লাগে। আমি নিরব মাহমুদ, বাসা মোহনপুর, রাজশাহী। আমি গত ১ বছর যাবত সুজুকি জিক্সার এসএফ বাইকটি ব্যবহার করছি । বাইকটি ব্যবহার করে আমি যে সকল অনুভুতি পেয়েছি সেগুলো আজকে আমি শেয়ার করবো এবং তার আগে ধন্যবাদ দিতে চাই মোটরসাইকেলভ্যালীকে যারা আমাকে আপনাদের সামনে আমার অনুভুতি প্রকাশের সুযোগ করে দিয়েছে।
আমি আমার জীবনে এখন পর্যন্ত বলতে গেলে দুটা বাইক ব্যবহার করেছি এছাড়াও বন্ধুদের বাইক নিয়ে যাতায়াত তো থাকেই। সুজুকি জিক্সার এসএফ এই বাইকটি আমার ব্যাক্তিগত। আমি এই বাইকটা পছন্দ করি মূলত এর ডিজাইন দেখে কারণ বাইকটিতে বেশ সুন্দর ডিজাইন, গ্রাফিক্স, কালার কম্বিনেশন রয়েছে যা আমাকে অনেক আকৃষ্ট করেছে। এদিকে বিভিন্ন বডি পার্টসগুলো অনেক মজবুত আছে । আমার মনে হয় যে বাইকটি আমাকে অনেক দিন সাপোর্ট দিয়ে যাবে। সুজুকি জিক্সার এসএফ এর ডিজাইন ও বিল্ড কোয়ালিটি আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে।
বাইকটির আরেকটি নজরকাড়া বিষয় হচ্ছে ইঞ্জিনের পারফরমেন্স। ইঞ্জিনটা খুবই শক্তিশালী একটি ইঞ্জিন এবং ইঞ্জিন থেকে আমি বাজে কোন শব্দ, বেশি গরম হওয়া ইত্যাদি কোন কিছু অনুভব করি না বরং আমার খুব আশ্চর্য লাগে যে এত বড় একটা দানব শরীর নিয়ে ইঞ্জিনটা খুব দ্রুত স্পীড তুলতে পারে। আমি এই পর্যন্ত সর্বচ্চো গতি ৯০ কিমি/ঘন্টা তুলেছি । স্পীড তোলার সুযোগ ছিলো কিন্তু আমি ঝুঁকি নিতে রাজি নই বিধায় আমার স্পীড কম ছিলো। ইঞ্জিন থেকে আমি বর্তমানে মোটামুটি মাইলেজ পাচ্ছি । মাইলেজের বিষয়টা আমার কাছে একটু খারাপ মনে হয়েছে।
এইবার আসি আরামের বিষয় নিয়ে। সিটিং পজিশন নরম এবং আমার বসতে কোন কষ্ট হয় না। সিটের উচ্চতা ঠিক থাকায় মাটিতে পা পেতে সমস্যা হয় না কিন্তু দীর্ঘক্ষন বসলে একটু কষ্ট হয় এবং বেশি স্পীড হাতে ঝিনঝিন অনুভূত হয়। দিকে হ্যান্ডেলবারের পজিশনটা অনেক ভালো এবং এর সাথে সংযুক্ত সুইচগুলো অনেক ভালো কাজ করে। রাতে এর হেডল্যাম্প থেকে আমি অনেক আলো পাই । বাইকটা নিয়ে আমি একদিনে প্রায় ২৫০ কিমি পথ পাড়ি দিয়েছি এবং আমার কাছে লং রাইডে চালাতে একটু কষ্টকর মনে হয়েছে। আমি একটা বিষয় অনেক গর্বের সাথে বলবো যে বাইকটার ব্রেক অনেক ভালো কারণ ডাবল ডিস্ক থাকায় আমার ব্রেকিং নিয়ে কোন ঝামেলা মনে হয় না এদিকে সাসপেনশন অনেক নরম যা খারাপ রাস্তায় অনেক কম ঝাঁকুনি এনে দেয়। আরামের দিক বিবেচনা করলে আমার কাছে বাইকটি বলতে গেলে ভালোই মনে হয়েছে তবে একটা কথা না বললেই নয় যে বাইকটার কন্ট্রোলটা খুবই ভালো। আমি যে কোন পরিস্থিতিতে বাইকটা কন্ট্রোল করে নিতে পারি।
আমি তাদের সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটামুটি সার্ভিস পেয়েছি ।কারণ তাদের সার্ভিস মান আমার কাছে খব বেশি ভালো মনে হয়নি। তাদের সার্ভিস সেন্টারের মান আরও উন্নত করার সুযোগ আছে এবং আরও ভালো দক্ষ কর্মী ও ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ দিতে হবে।
বাজারে যে সকল ১৫০ সিসির বাইক আছে তার তুলনায় এর দামটা একটু বেশি মনে হয়েছে। কারণ কোয়ালিটি, পারফরমেন্স বিবেচনা করলে এর দামটা একটু বেশি মনে হবে। আশা করি সুজুকি এই বিষয়টা দেখবেন এবং দামটা গ্রাহকদের হাতের নাগালে নিয়ে আসবেন।
কোম্পানীর কাছে আমার শুধুমাত্র এটাই পরামর্শ থাকবে যে দামটা কমানোর। কারণ বর্তমান বাজারে অনেকেই বাইকের দাম কমিয়েছে এবং চাহিদা আরও বাড়ছে তাই কোম্পানী যদি বাইকটার দাম কমায় তাহলে ভবিষ্যতে আরও গ্রাহকদের চাহিদা বাড়বে। আশা করি আমার সকল বিষয় আপনাদের বুঝতে অসুবিধা হয় নি ।এটা আমার প্রথম রিভিউ তাই যদি এখানে কোন ভুল থাকে তবে সেটা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ।