এক স্থান থেকে অন্য স্থানে দ্রুত যাতায়াত করার জন্য মোটরসাইকেল এর ভূমিকা অপরিসীম। আমাদের দেশের প্রায় প্রতিটি মানুষের কাছেই মোটরসাইকেল খুব জনপ্রিয়। কারণ, মোটরসাইকেল এর মাধ্যমে খুব সময় অতি দ্রুত যাতায়াত করা যায়। আমার পরিচয় আমি মোঃ জাহিদুল ইসলাম। পেশায় আমি একজন ব্যবসায়ী। আমার মোটরসাইকেল এর নাম রোড মাস্টার ১০০ সিসি। এই মোটরসাইকেলটি আমি পুঠিয়া বাজারের একটি শোরুম থেকে কিনেছি। আমার বহু দিনের স্বপ্ন ছিল আমি একটি মোটরসাইকেল কিনবো। মোটরসাইকেলটি আমি প্রায় ৬ মাস যাবত ব্যবহার করছি। ৬ মাসে প্রায় ৪৫০০ কিমি পথ চালিয়েছি। এটা আমার জীবনের প্রথম বাইক। আজকে আমি আমার এই মোটরসাইকেল সম্পর্কে ৬ মাসের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।
আমি এই মোটরসাইকেলটি শুধু ডিজাইন,পারফরমেন্স বিবেচনা করে কিনি নাই। বরং এটি থেকে ভাল মাইলেজ পাবার আশায় কিনেছি। আমি শোরুমে এই মোটরসাইকেলটির ডিজাইন দেখে আমার খুব পছন্দ হয়ে যায়। এই ডিজাইনটা আমার কাছে পারফেক্ট মনে হয়েছে। এর বডির প্লাস্টিকগুলো দেখলেই বোঝা এগুলো অনেক মজবুত, যা খুব সহজে ভাংবে না। এছাড়া আমি এক বার মোটরসাইকেল নিয়ে পড়ে গিয়েছিলাম। তবুও এর প্লাস্টিকের কোন সমস্যা হয় নাই।
আমার এই মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স অনেক ভাল। ১০০ সিসির মোটরসাইকেল হিসেবে এর ইঞ্জিন অনেক শক্তিশালী। এই মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিনের শব্দটা অনেক সুন্দর। বেশিক্ষণ চললে মোটরসাইকেলটির ইঞ্জিন বেশি গরম হয়। তবে এটা আমি সমস্যা মনে করি না। এছাড়া মোটরসাইকেলটির কন্ট্রোল অনেক ভাল। তবে হাইড্রোলিক ব্রেক থাকায় আরো ভাল কন্ট্রোল করা যায়। তবে মোটরসাইকেল থেকে আমি একবার পড়ে যাবার পর থেকে এখন আর বেশী স্পীডে চালাই না।
এই মোটরসাইকেলটি কেনার সময় আমাকে বলা হয়েছিল ১ লিটার তেলে প্রায় ৬০ কিমি পথ চলা যাবে। আমি ঠিক তেমন মাইলেজ পাচ্ছি। এ ক্ষেত্রে তাদের কথার সাথে কাজের মিল পেয়েছি। তেল খরচ কম হবে এটা ভেবেই আমি এই মোটরসাইকেলটি কিনিছি। আমি যে মাইলেজ পাচ্ছি এটা নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট আছি।
আমি আমার মোটরসাইকেলটি একবার সার্ভিসিং করিয়েছি। আমার মোটরসাইকেলে বড় কোন সমস্যা ছিল না। শুধু ক্লাস এ একটু সমস্যা দেখা দিয়েছিল। এছাড়া মোটরসাইকেল এর চেনের ভিতরে খারাপ শব্দ হত। এটি আমার কাছে খুব বিরক্তিকর মনে হত। আমি সার্ভিসিং সেন্টারে দেখানোর পরে তারা আমাকে এই সমস্যা গুলোর সমাধান করে দেয়। তবে তারা আমার সাথে অনেক ভাল ব্যবহার করেছেন। তাদের কাজের মানও অনেক ভাল লেগেছে।
একটি বিষয় আমার কাছে খুব খারাপ লেগেছে, সেটি হল ১০০ সিসির মোটরসাইকেল হিসেবে এর দামটা অনেক বেশি বলে মনে হয়েছে। সব কিছু বিবেচনা করে দামটা আর একটু কম হলে মোটামুটি ভাল হত। সে ক্ষেত্রে বিক্রয়ের হারও বৃদ্ধি পেত।
মোটরসাইকেলটির সিটিং পজিশন খুব ভাল ও আরামদায়ক। সিটও বেশ নরম আছে। আমি আমার পরিবার নিয়ে এক সাথে চলাচলের জন্য এমন সিটিং পজিশন দেখেই মোটরসাইকেলটি কিনেছি। এছাড়া সিটে বসে আমি খুব সহজেই মাটিতে পা রাখতে পারি। কারন এটি খুব বেশি উঁচু না। কন্ট্রোল এর দিক থেকে আআমার কোন অভিযোগ নেই। কারণ এর ব্রেক অনেক ভাল। এর সুইচ গুলো দেখতে সুন্দর ও এগুলো ব্যবহার করতে আমার কোন সমস্যা হয় না। এছাড়া রাতে হেড লাইট থেকে প্রচুর আলো পাই। আমি মোটরসাইকেলটি হাই রোডে সর্বোচ্চ ৮৫ গতিতে তুলেছি। তবে বেশি গতিতে মোটরসাইকেলটি খুব কাপে। এছাড়া এক দিনে প্রায় ২৫০ কিমি পথ চালিয়েছি। দীর্ঘক্ষণ বসে চালালেও আমার খুব একটা সমস্যা হয় না। তবে এর সাসপেনশন আমার পছন্দ হয় না। কারণ খারাপ রাস্তায় একা চালালে অতিরিক্ত ঝাঁকুনি অনুভব করি।
পরিশেষে বলতে চাই, যারা ১০০ সিসির মধ্যে মোটরসাইকেল কিনার কথা ভাবছেন, তারা এই মোটরসাইকেলটি বিভিন্ন দিক ও ভাল মাইলেজ বিবেচনায় কিনতে পারেন। কারণ এই মোটরসাইকেলের তেল খরচ খুব কম। এছাড়াও মোটরসাইকেলটির ইঞ্জিন পারফরমেন্স খুবই ভাল। তবে এই মোটরসাইকেলটি ওজনে খুব কম। ১০০ সিসির বাইক হিসেবে ওজনটা আর একটু বেশি হওয়া উচিৎ ছিল। কোম্পানির কাছে আমার দাবি মোটরসাইকেলটির ওজন আরেকটু বাড়ানো হলে খুব ভাল হত। সাবাইকে ধন্যবাদ।