প্রথমে আমার পরিচয় দিয়ে শুরু করছি। আমি শিল্পী আনোয়ার হোসেন। পেশায় আমি একজন শিক্ষক। আমার মোটরসাইকেল এর নাম রোড মাস্টার প্রাইম ৮০ সিসি। আমি সাধারণ যাতায়াতের জন্যই মুলত এই মোটরসাইকেলটি কিনেছি। রোড মাস্টার প্রাইম মোটরসাইকেলটি আমার জীবনের ১ম বাইক। এই মোটরসাইকেলটি থেকে ভাল মাইলেজ পাবার আশায় কিনেছি। আমি ৩ মাস যাবত এটি ব্যবহার করছি। মোটরসাইকেলটি আমি পুঠিয়া বাজারের “মেসার্স সুরভী মটরস” এর একটি শোরুম থেকে কিনেছি। ৩ মাসে আমি প্রায় ১৬০০ কিমি পথ চালিয়েছি। ৩ মাস যাবত এই মোটরসাইকেলটি চালিয়ে আমি এর সকল গুণাগুণ বুঝতে পেরেছি। তাই এখন আমি আমার মোটরসাইকেল এর কিছু ভাল ও মন্দ দিক তুলে ধরার জন্য হাজির হয়েছি। যারা ভাল মাইলেজ সম্পূর্ণ নতুন মোটরসাইকেল কিনার কথা ভাবছেন তাদের জন্য আমার মতামতটি অনেক কাজে লাগবে। আশা করি সকলেই শেষ পর্যন্ত লিখাটি পড়বেন।
আমি শুরুতে বলতে চাই যে, ভাল মাইলেজ পাবো বলে আমি রোড মাস্টার প্রাইম ৮০ সিসির এই মোটরসাইকেলটি কিনেছে। তিন মাস চালিয়ে আমি মোটরসাইকেলটি থেকে ভাল পারফরমেন্সও পেয়েছি। এক লিটার তেলে আমি ৬৫ কিমি পথ চলতে পারি। একটি মোটরসাইকেল এর মূল হল অংশ হল তার ইঞ্জিন। আমার মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনটা খুবই ভাল। এই ইঞ্জিনের শব্দটা অনেক সুন্দর ও এটি মোটামুটি শক্তিশালী । এখন পর্যন্ত আমি এই তিন মাসে এর ইঞ্জিনে কোন সমস্যা অনুভব করি নাই। আমি আমার বন্ধুদের পরামর্শ নিয়ে এই মোটরসাইকেলটি কিনেছি। তারাও রোড মাস্টার প্রাইম মোটরসাইকেল ব্যবহার করে। আমার বডির সাথে সামঞ্জস্য বজায় রেখে এই মোটরসাইকেলটি খুবই ভাল লেগেছে। এর আউটলুক বেশ মার্জিত। এই মোটরসাইকেলটি একটু বেশি বয়সের মানুষের সাথে ভাল মানানসই হবে বলে মনে করি। বাইকটির ব্লিডিং কোয়ালিটি বেশ মজবুত বলে মনে হয়েছে। এর ডিজাইনের কথা বলতে গেলে ডিজাইনটা আমার কাছে সত্যিই অনেক ভাল লেগেছে। আমি অনেক বিবেচনা করে মোটরসাইকেলটি দেখে শুনে এটিই পছন্দ করে কিনেছি।
এই মোটরসাইকেল এর সিটিং পজিশন অনেক সুন্দর। এটি বেশ বড়। এক সাথে ২ জন বসেও খুব সহজেই চলাচল করা যায়। আমি এই মোটরসাইকেলে বসে খুব সহজে মাটিতে পা রাখতে পারি। কারণ এটি খুব একটা উঁচু বাইক না। এর হ্যান্ডেলবারটি অনেক ভাল যা আমাকে আরাম এনে দেয়। এই মোটরসাইকেলের সাসপেনশন মোটামুটি ভাল। মোটরসাইকেলটির লুকিং গ্লাস দুটি অনেক ভাল। এগুলো থেকে আমি পিছনের রাস্তা পরিষ্কার দেখতে পারি। আমি একদিনে আমি সর্বোচ্চ ৬০ কিমি পথ চালিয়েছি । এছাড়া আমি এই মোটরসাইকেলে সর্বোচ্চ ৬৫ গতিতে তুলেছি। এমন গতিতে চালিয়ে আমি কোন সমস্যা বুঝতে পারি নাই। এই বাইকটির ব্রেকিং সিস্টেম মোটামুটি ভাল। তাই আমি বেশি গতিতে চালালেও মোটরসাইকেলটি কন্ট্রোল করতে আমার কোন সমস্যা হয় না। কেননা এর ব্রেক অনেক ভাল কাজ করে। মোটরসাইকেলটির সুইচগুলোও দেখতে অনেক সুন্দর। খুব সহজেই এগুলো ব্যবহার করা যায়। এছাড়া আমি রাতে বাইকটির হেড লাইট থেকে প্রচুর আলো পাই। যা আমাকে পরিষ্কার পথ দেখতে সাহায্য করে। এই বাইকের চাকা গুলোর গ্রিপ অনেক ভাল। তাই ভেজা রাস্তায় খুব বেশি স্লিপ করে না। এর চাকাগুলোও দেখতে অনেক সুন্দর। এর ব্যাটারি কোয়ালিটিও বেশ মজবুত। এই মোটরসাইকেলটি চালিয়ে আমি বেশ আরাম আনুভব করছি।
আমি সার্ভিসিং সেন্টারে ১ বার গিয়েছিলাম। তবে তেমন কোন সমস্যা নিয়ে সেখানে যাই নাই। শুধু মাত্র মবিল পরিবর্তন করতে আর চেইন টাইট করে নিতে গিয়েছিলাম। তবে তারা আমার মোটরসাইকেল এর অল বডি চেক আপ করে দিয়েছেন। সার্ভিসিং সেন্টারে তাদের কাজের মান আমার কাছে খুব ভাল লেগেছে। তাদের ব্যবহার অনেক ভাল। তাদের অতিথি আপ্যায়ন দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। আমি এক দিন সেখানে গিয়ে বুঝতে পেরেছি তারা অনেক দক্ষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তারা অনেক কাজ করতে পারে। তাই সার্ভিসিং সেন্টার নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই।
যে সকল ক্রেতাগণ ৮০ সিসির মধ্যে মোটরসাইকেল কেনার কথা ভাবছেন, তারা নিশ্চিন্তে রোড মাস্টার প্রাইম ৮০ সিসির মোটরসাইকেলটি কিনতে পারেন। কারণ এর তেল খরচ খুবই কম এবং এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স অনেক ভাল। সবকিছু বিবেচনা করে এই মোটরসাইকেলটির দামটা আমার কাছে সঠিক আছে বলে মনে করি। আমার লিখায় যদি কোন ভুল ত্রুটি থাকে তাহলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।