প্রথমে আমি আমার সম্পর্কে কিছু বলতে চাই। আমি মোঃ রবিউল ইসলাম। বাসা বগুড়া, পুলিশ লাইনের পিছনে, লতিফপুর। পেশায় একজন চাকুরিজীবি। আমার পেশা ও পারিবারিক কিছু কাজ করার জন্য ভালো একটা যোগাযোগ মাধ্যমের প্রয়োজন এবং আমার চাকুরির জন্যেও বাইক অতি প্রয়োজনীয় একটি বাহন। যার দ্বারা আমি আমার কাজের পথের দূরত্ব আরো কমিয়ে আনতে পারি এবং কাজের গতিকে আরো বাড়িয়ে দিতে পারি। নিজের ইচ্ছেই বলেন আর প্রয়োজনের তাগিদে বলেন বাইক একটি চাই-ই চাই। আমি মনে মনে ভাবতে শুরু করলাম যে ভালো মাইলেজ এবং ব্যবহার উপযোগী মোটরসাইকেল কোনটা হতে পারে। আবার দেখা যাচ্ছে দামেও সামান্য কম। এই সকল দিক ভেবে আমি শেষে Road Master Prime-80cc বাইকটি কিনে ফেলি। বাজারে অনেক কমিউটার বাইকাররা কম সিসির বাইক ব্যবহার করে কিন্তু তাদের মধ্যে থেকে আমার কাছে এই বাইকটি অনেক সুন্দর, ভদ্র এবং মাইলেজের দিক দিয়ে বাইকটি একদম আমার মনের মত। আমি এই বাইকটি রংপুর থেকে কিনি এবং বর্তমানে ৬ মাস যাবৎ এই বাইকটি আমি ব্যবহার করছি। এই অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই আমি এই বাইক সম্পর্কে কিছু ভালো মন্দ দিক দেখতে পেয়েছি যা আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
রোড মাস্টার প্রাইম-৮০সিসি বাইকটি দেখতে বেশ সুন্দর এবং এর ডিজাইন গুলোও বেশ সুন্দর কিন্তু এর বডিগুলো সামান্য দুর্বল হলেও আমার কাছে বাইকটি বেশ মনে হয়েছে। এই বাইকটির এমন একটি আউটলুক রয়েছে যেটা সকল বয়সের রাইডারের সাথে মানানসই। এর কালার কম্বিনেশন, রাইডিং পজিশন, হ্যান্ডেলবারের সাথে রাইডিং পজিশনের বেশ সমন্বয় রয়েছে। যার ফলে রাইডারের বাইকটি অধিক সময় রাইড করতে কোন সমস্যা হয় না। বাইকটির হ্যান্ডেলবারের সকল সুইচ গুলোও বেশ ভালো কাজ করে। আমি আজ পর্যন্ত কোন সমস্যার সম্মুখিন হয়নি। তবে এই বাইকটির কন্ট্রোলিং এর কিছু সমস্যা রয়েছে। ঠিকমত কন্ট্রোল না করতে পারলে বেশ অসুবিধার সম্মুখিন হতে হয় সকল রাইডারকেই। এর বীল্ড কোয়ালিটি সামান্য দুর্বল বলে মনে হয়েছে আমার।
আমার কাছে বাইকটির ইঞ্জিন পারফরমেন্স অনেক ভালো লেগেছে। ইঞ্জিনটা অনেক ভালো পাওয়ার দেয় যার ফলে আমি ভালো সার্ভিস পাই। বাইকটির মাইলেজ আমার কাছে অনেক ভালো মনে হয়েছে বর্তমানে আমি মাইলেজ পাচ্ছি প্রায় ৭০ কিমি প্রতি লিটারে যেটা অন্য যে কোন বাইকের থেকে বেশ ভালো। ব্রেকিং ও সাসপেনশনের কথা বলতে গেলে এই বাইকটিতে ব্রেক মোটামুটি কিন্তু যে কোন রাস্তাতেই এই বাইকের সাসপেনশন বেশ ভাল। তবে খুব খারাপ পরিস্থিতিতে কন্ট্রোল করতে একটু সমস্যা হয় তার পরেও এই বাইকের ব্রেক ও সাসপেনশন মোটামুটি বলেই মনে হয়েছে।
যাই হোক বাইকটির প্রায় সকল দিক আমার কাছে বেশ ভাল মনে হলেও এর বড় একটি সমস্যা আছে আর তা হলো এর কন্ট্রোলিং। বাইকটি আমি যখন স্পীড ৪০-এ উঠাই আর যদি সামনে কিছু পড়ে বা আমাকে ব্রেক করতে হয় তবে বাইকটির পেছনের চাঁকা দেড় থেকে দুই হাত ঘুরে যাই এবং স্পীড বেশী উঠালে বাইক প্রচন্ড ঝাঁকুনি দেয়। যা যেকোন মানুষের জন্য দুর্ঘটনা ডেকে আনতে পারে যে কোন সময়। আমার মনে হয় এই বাইকটির বীল্ড কোয়ালিটি সামান্য দুর্বল এবং ব্রেক কম কাজ করাতেই বাইকটি এমন ভাবে ঘুরে যায়। তাই যে সকল রাইডাররা আমার মত এই বাইক ব্যবহার করছেন তাদের বলছি এই সমস্যাটা মাথাই রেখে বাইকটি চালাবেন।
আমি এখন পর্যন্ত সার্ভিসিং সেন্টারে যায় নি, কিন্তু তাদের সেলস্ সার্ভিস ম্যানদের ব্যবহার বেশ ভাল। তবে বর্তমানের চেয়ে আরো ভালো পারফমেন্স পাওয়ার জন্যই আমি খুব শীঘ্রয় সার্ভিসিং সেন্টারে যাবো। বাইকটির ব্রেক ও কন্ট্রোলিং সমস্যা ছাড়া সব কিছু মিলিয়ে বাইকটি আমার কাছে বেশ দারুন লাগে এবং আমি মনে করি এই বাইকটা কিনে আমি ভুল করিনি। কারণ তেল খরচের দিক বিবেচনা করলে এই বাইকটির দাম একদম ঠিক আছে। তাই যারা এই বাইকটি কিনতে চান তাদের উদ্দেশ্যে বলবো যে বাইকটা অনেক তেল সাশ্রয়ী এবং আমাকে অনেক ভালো মাইলেজ দিচ্ছে তাই যে কেউ এই বাইকটি কিনতে পারেন।