হোন্ডা সিজি১২৫ এবং সুজুকি সামুরাই মোটরসাইকেল ব্যবহারের পরে তৃতীয় মোটরসাইকেল হিসেবে আমি ব্যবহার শুরু করেছি রোডমাস্টার প্রাইম ৮০সিসি মোটরসাইকেলটি। পরপর দুটি জনপ্রিয় জাপানিজ ব্রান্ড ব্যবহারের পরেই বাংলাদেশী ব্রান্ডের মোটরসাইকেল, তাও আবার ৮০সিসি। কেন কিনেছি, আর কেনার পরে অভিজ্ঞতা কেমন হলো? সে গল্পই শোনাবো আপনাদের। আশা করি সাথে থাকবেন।
প্রয়োজন এবং সামর্থের সামন্জস্য আমার কাছে সব সময়েই গুরুত্বপূর্ন। সামর্থের বাইরে গিয়ে প্রয়োজন মেটানোর পক্ষে আমি নই। আর তাই যখন নিজের জন্য একটি মোটরসাইকেল দরকার হলো তখন সামর্খের মধ্যে সবগুলো ফীচার নিয়ে হাজির হওয়া রোডমাস্টার প্রাইম ৮০সিসি মোটরসাইকেলটি লুফে নিতে আমি দ্বিধাবোধ করিনি।
এবছরের(২০১৭) এপ্রিলে আমি রোডমাস্টার প্রাইম ৮০সিসি মোটরসাইকেলটি কিনি। মোটরসাইকেলটি কেনার প্রধান উদ্দেশ্য ছিলো অফিসে যাতায়াত ছাড়াও নিজের ব্যক্তিগত ঘুরাঘুরি। সুযোগ পেলে কখনও কখনও রাইডশেয়ার করেও থাকি। মজার ব্যাপার হচ্ছে আমার প্রায় ৯০কেজি ওজন সাথে একজন পিলিয়ন নিয়েও বাইকটি আমাকে কখনও হতাশ করেনি। বরং ছোট্ট এই বাহনটি তার পারফরমেন্স দিয়ে আমাকে সত্যিই মুগ্ধ করেছে।
বাইকটির ইনজিন ৮০সিসি এর হলেও এর পারফরমেন্স সত্যিই অবাক করার মতো। চলতি পথে অনেক সময়েই তার থেকে বেশি সিসির মোটরসাইকেলের সাথে তাল মিলিয়ে সে চলতে পারে। ইনজিন গরম হওয়া বা বাজে শব্দ তৈরী হবার ঘটনা কখনও ঘটেনি। যেহেতু কখনও কখনও রাইড শেয়ারও করে থাকি সে সময়েও তার পারফরমেন্স সন্তুষজনক। কোন ইউজার বাইকের কারনে কোনো কমপ্লেইন আমাকে এখনও করে নাই।৮০কিমি স্পীডে হাল্কা ভাইব্রেট করে। আমি এটিকে ইগনোর করি এইজন্যই যে ৮০কিমি স্পীডে চালানোর সুযোগ ক্বদাচিৎ হয়ে থাকে।
বাইকের ডিজাইন যে কাওকেই অনায়াসে আকৃষ্ট করবে। ৮০সিসি বাইক হিসেবে আকারে বেশ বড়। লম্বা সীট দুজন রাইড করতে কষ্টই হয় না।বডি কালার এবং গ্রাফিক্স সুন্দর এবং দৃষ্টিনন্দন। বাইকে ব্যবহৃত প্লাস্টিক এবং কিট গুলো মজবুত।দামের তুলনায় ফীচারগুলো বেশ আধুনিক এবং কার্যকর।
বাইকের টায়ার এবং ব্রেকিং সিস্টেম ভালো। সাসপেনশন আরামদায়ক। তবে ৭০-৮০কিমি স্পীডে সামান্য ভাইব্রেট করে। হেডলাইটের আলো কিছুটা কম।
আমার অবস্থান মৌচাক এরিয়াতে হওয়াতে কম-বেশি সব সময়েই জ্যাম আমার নিত্যসংগী। এরপরেও শহরের মধ্যে আমি মাইলেজ পাচ্ছি ৫০-৫৫কিমি/লিটার। আমি এই পারফরমেন্সে সন্তুষ্ট। হাইওয়েতে এবং ৬০-৭০কেজি ওজনের রাইডার হলে অনায়াসে ৬০+ মাইলেজ পাবে এটি সুনিশ্চিত।
বাইকটির সার্ভিসিং এর প্রয়োজনে একাধিকবার সার্ভিসিং সেন্টারে গিয়েছি। তাদের সার্ভিসের মান, ব্যবহার এবং আচরনে আমি খুবই সন্তুষ্ট।
বাইকটির কিছু ভালো দিক
- দামের তুলনায় অনেক ফীচার
- সুন্দর ডিজাইন
- শক্তিশালী ইনজিন
কিছু মন্দ দিক
- ছোট ফুয়েল ট্যাংক
- হেডলাইটের আলো দুর্বল
পরিশেষে একথা বলেই শেষ করবো যে বাইকটি বাংলাদেশের অন্যতম স্বল্পমুল্যের বাইক হলেও এর ফীচার এবং পারফরমেন্স সন্তোষজনক। সার্বিক বিবেচনায় সাধারন রাইডের জন্য বাইকটি খুবই চমতকার বলে আমি মনি করি।