র্যাপিডো ১৬৫, কেনার আগে যখন গ্রুপে গ্রুপে পোস্ট করছিলাম তখন অনেক ভাইয়েরা বলতাছিল ভালো না, ফালতু, ২ দিন পর ফেলে দেয়া লাগবে ব্লা ব্লা ব্লা। আমার মনে হয়েছে, র্যাপিডো ১৬৫ কেনার আগে যারা বাজে মন্তব্য করেছিল তাদের অনেকেই র্যাপিডো ১৬৫ চালায় নাই। যেহেতু বাইকের ডিজাইন আমার ভালো লেগেছিল তাই কোন কিছু চিন্তা না করেই বাইকটি কেনা। এছাড়াও শো-রুমে গিয়ে জানতে পারি কোম্পানি ৪'টি ফ্রি সার্ভিস এবং ৩০,০০০ কিলো পর্যন্ত ইঞ্জিনের ওয়ারেন্টই দেয়, যা আমার র্যাপিডো ১৬৫ কেনার কনফিডেন্স আরও বাড়িয়ে দেয়। যেহেতু র্যাপিডো ১৬৫ নিয়ে কোন রিভিউ নাই তাই আমি আমার ছোট অভিজ্ঞতা আজ শেয়ার করবো। আমি এই বাইকটি সবে মাত্র কিনলাম, ৫০০ কিলো পর্যন্ত চালিয়েছি।
ডিজাইন, ডিজাইন এবং ডিজাইন। আমার মনে হয় বেশিরভাগ লোকের এই বাইক নেয়ার মুল কারণ এর ডিজাইন। এছাড়াও র্যাপিডো ১৫০ বাইকটাও ভালোই জনপ্রিয় ছিল। ২০০০০০ টাকার মধ্যে অন্য যেগুলো স্পোর্টস বাইক বর্তমানে বাজারে আছে সেগুলো যখন প্রথম মার্কেটে আসে তখন একদল লোক সেগুলোকেও ফালতু, ২ দিন পর ফেলে দেয়া লাগবে ব্লা ব্লা ব্লা, এইসব বলেছিল যাদের মধ্যে একটি বাইক এখন অনেক জনপ্রিয়। আমার কখনো মনে হয়নি চাইনিজ বাইক খারাপ।
র্যাপিডো ১৬৫ চালিয়ে ভালোই লাগছে। এখন পর্যন্ত ৯৭ পর্যন্ত স্পীড তুলেছি, যা মনে হয়েছে ১১০-১১৫ পর্যন্ত খুব সহজেই উঠবে। ৮০ এর ওপরে বাইকে সাধারণত আমি চালাইনা তাই টপ স্পীড টেস্টের রিস্ক নেই নাই। এছাড়াও কনট্রোলিং সিস্টেম যথেষ্ট ভালো মনে হয়েছে আমার। ১৩৩ কেজি ওজনের এই বাইকের ম্যাক্সিমাম পাওয়ার ১৫.৩ এবং ম্যাক্সিমাম টর্ক ১৪.৬।
ডিজাইনের দিক দিয়ে ১০০/১০০। আমার মনে হয় র্যাপিডো ১৬৫ এখন পর্যন্ত যতটুকু জনপ্রিয়তা পেয়েছে তার প্রধান কারণ এর ডিজাইন। ব্রেকিং সিস্টেম হিসাবে সিবিএস ব্যবহার করা হয়েছে। ব্রেকিং সিস্টেম খুবই ভালো লাগছে, হার্ড ব্রেক করে এখনো স্লিপ খাইনাই। ৬০ স্পীড থেকে বাইক কন্ট্রোলে আনতে ২-৫ সেকেন্ড সময় লাগে। কিন্তু, হাই স্পীডে সামনের ব্রেক ধরলে বাইকে একটা সাউন্ড আসে, অনেকটা হ্যান্ডল বডি কীটজ / ক্যাবল বাড়ি খাবার মতো।
কন্ট্রোলিং সিস্টেম ৮০/১০০। আরামের কথা বলতে গেলে বলতে হবে সিটের কথা। সামনের সিট আরামদায়ক হলেও পিছনের সিট বসবার উপযুক্ত বলে আমার মনে হয়নি। এছাড়াও পিছনের সিটের জীবনকাল নিয়ে আমার সন্দেহ আছে, আমার মনে হয় কিছুদিন পর ফেটে যাবে যদি ভারী কেউ নিয়মিত বসে।
র্যাপিডো ১৬৫ এর সামনে ব্যবহার করা হয়েছে টিউবলেস ১১০/১৭ সাইজের টায়ার এবং পিছনে ১৪০/১৭।
র্যাপিডো ১৬৫ কেনার প্রধান কারণ বাইকের লুকিং, সাউন্ড এবং দাম। আজ পর্যন্ত র্যাপিডো ১৬৫ এর দাম ১৮৪৯০০ যা মার্কেটের সবচেয়ে কম এবং দামের দিক থেকে র্যাপিডো ১৬৫ বেস্ট ওয়ান।
-বাইকের সামনের লুকটা অসাধারণ, পার্কিং লাইটে আরও জোশ লাগে দেখতে।
-লুকিং এ কেমন জানি একটা ড্রাগন ড্রাগন ভাব আছে। এক কথায় চোখে ধরার মতো বাইক।
-সাউন্ড নিয়ে কোন কথা হবেনা, র্যাপিডো সব গুলো মডেলের বাইকের সাউন্ডই ভালো এবং র্যাপিডো ১৬৫ এর সাউন্ড আমার কাছে অসাধারণ লাগছে।
-আমার মনে হয় র্যাপিডো ১৬৫ এখন পর্যন্ত যতটুকু জনপ্রিয়তা পেয়েছে তার প্রধান কারণ এর ডিজাইন।
-হালকা ওজনের চালকের জন্য বাইকটা কষ্টের কারণ হতে পারে।
বাইকের পিছনে ম্যাটগার্ড নাই, সো বৃষ্টির দিন আপনি শেষ। কিটস ভাঙলে পাবেন পাওয়াটা অনেক কষ্টসাধ্য হবে যদি রোডমাষ্টারের সার্ভিস সেন্টার না পাওয়া যায়। হর্ন পরিবর্তন করা ফরজ বাইক কেনার পর। যেহেতু ফুল কিটস বাইক সো অল্প জায়গায় ঘুরানো একটু কষ্টকর (সব স্পোর্টস বাইকেই কমবেশি) । আর আপনাদের উচ্চতা যদি আমার মতো ৬ ফিটের উপরে হয় তাহলে হ্যান্ডলে হাঁটু বারি খাইতে পারে। পিছনের সিট অনেক ছোট, ২দিকে ২পা দিয়া বসা ছাড়া বসা সম্ভব বলে আমার মনে হয়না।।
বাইকটি এয়ার কুলড বাইক, আমার কেন জানি মনে হয় স্পোর্টস বাইক হিসাবে ওয়েল কুলড / লিকুইড কুলড হওয়া উচিত।
এখন পর্যন্ত ৩৩ করে মাইলেজ পাচ্ছি প্রতি লিটারে। ট্যাঙ্কই তে তেল ধারণ ক্ষমতা ১৪ লিটার এবং রিজার্ভ ট্যাঙ্কই তে ১-১.৫ লিটার তেল থাকে।