রানার মোটরসাইকেল বাংলাদেশের অনেক জনপ্রিয় একটি মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড । আমাদের দেশে যেখানে ইন্ডিয়ান ও জাপানিজ বাইকের অনেক মডেল দিয়ে ভর্তি ঠিক সেখানে রানার তাদের অবস্থান আরও শক্তপোক্ত করার জন্য সকল ব্র্যান্ডের সাথে লড়াই করে বিভিন্ন ধরনের বাইক নিয়ে আসছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে রানার বাইকের চাহিদা ইন্ডিয়ান বা জাপানিজ ব্র্যান্ডের মত না হলেও তার অনেক কাছাকাছি। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এবং অন্যান্য কোম্পানীদের প্রতি দৃষ্টি রেখে রানার মোটরসাইকেল নিত্য নতুন ডিজাইনের বাইক বাজারে নিয়ে আসছে। ঠিক তারই ধারাবাহিকতা বজার রেখে এবং গ্রাহকদের সুবিধা চাহিদা ইত্যাদির কথা মাথায় নিয়ে বাংলাদেশের লোকাল মার্কেটে গ্রাহকদের জন্য নিয়ে এসেছে ১৬৫ সিসির রানার বোল্ট। আমি এই রানার বোল্ট বাইকটি এখন ব্যবহার করছি।
এই বাইকটি কেনার কারণ হল এটি বাজারে নতুন এসেছে এবং দেখতে অনেক সুন্দর, অন্যদিকে শুনেছি যে প্রথম চালানের বাইকের পারফরমেন্স অনেক ভালো হয় এটা কতটুকু সত্য আমি জানি না তবে যেহেতু একটা বাইকের ইচ্ছা ছিলো এবং রানার বোল্ট আমার বাজেট অনুযায়ী পারফেক্ট ছিলো তাই ভাবলাম যে প্রথম চালানের বাইক একটা কিনে ফেলি। এই বোল্ট নিয়ে আমার রাইড করা হয়েছে প্রায় ৫০০ কিমি এর মত। আমার কাছে এই বোল্ট বাইক ৫০০ কিমি রাইড করে কেমন অভিজ্ঞতা হয়েছে সেগুলো আপনাদের সাথে আমি শেয়ার করবো।
বাইকটির ভালো মন্দ দিক সব এক সাথেই নিম্নে উল্লেখ করছি -প্রথমে বাইক কেনার পর মনে হত যে বাইক অনেক জ্যাম হয়ে আছে এবং বাইকের পাওয়ার ডেলিভারি এক্সেলেরশন অনুযায়ী সঠিক পাওয়া যাচ্ছে না কিন্তু সেই সমস্যা দূর করে দিয়েছে একটা ভালো সার্ভিস। আমি বাইকটা সার্ভিস করিয়ে পূর্বের যে সমস্যাগুলো ছিলো তা সমাধান করতে পেরেছি।
-ডিজাইনটা আমার কাছে একটু ভিন্নধর্মী মনে হয়েছে এবং বলতে গেলে খুব সহজেই এই বাইক চিহ্নিত করা যাবে।
-বাইকের রেডি পিক আপ অনেক ভাল। আমি ৫০০ কিমি এর মধ্যেই বাইকের রেডি পিক আপ অনেক ভালো অনুভব করেছি এবং আশা করছি এই রেডি পিক আপ ব্রেক ইন পিরিয়ডের পর আরও অনেক বেশি হবে।
-বাইকের ওজন অনেক বেশি। অনেক বেশি বলতে ব্যালেন্সের জন্য পারফেক্ট ওজন রয়েছে যা আমাকে ভালোভাবে , ভালো কন্ট্রোল নিয়ে রাইড করতে সাহায্য করে।
-বাইকের ফিচারস, পারফরমেন্স বাজেট অনুযায়ী একদম পারফেক্ট আছে বলে আমার কাছে মনে হয়েছে।
-বাইকের দুইটা সমস্যা আমি এখন পর্যন্ত অনুভব করেছি তা হল, গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স এবং এক্সজস্ট পাইপ। গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স আমার কাছে অনেক কম মনে হয়েছে। আমি যদি কোন স্পীড ব্রেকার বা ভাঙ্গা রাস্তায় বাইকটা নিয়ে রাইড করি সেক্ষেত্রে আমি সহজেই উপলব্ধি করতে পারি যে গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স অনেক কম। অন্যদিকে এক্সজস্ট পাইপ নিচের দিকে এবং অনেক ছোট যদি বৃষ্টি ভেজা রাস্তায় বা রাস্তায় পানি জমে গেলে সে রাস্তা দিয়ে রাইড করা হয় তাহলে আমার মনে হয় পানি এক্সজস্ট পাইপে ঢুকবে । আমার কাছে এই দুইটা সমস্যা এখন পর্যন্ত মনে হয়েছে।
- মাইলেজ আমি সঠিকভাবে এখন বলতে পারছি না তবে অনুমান করে বলতে পারি যে শহরের মধ্যে ৩৫-৩৭ কিমি প্রতি লিটারে মাইলেজ এবং হাইওয়েতে ৪০-৪২ কিমি. প্রতি লিটারে মাইলেজ পাচ্ছি। আমার মতে ১৬৫ সিসির বাইক থেকে খুব বেশি মাইলেজ আশা করা ঠিক না। যে মাইলেজ আমি পাচ্ছি আশা করি সেটা ব্রেক ইন পিরিয়ডের পর আরও বেশি হবে।
আমি এই বাইক নিয়ে একদিনে সর্বোচ্চ রাইড করেছি ৬০ কিমি। আমার কাছে বাইকের পারফরমেন্স ভালোই লেগেছে। যেহেতু ব্রেক ইন পিরিয়ডে আছি তাই সেভাবে লং ট্যুর বা স্পীডে রাইড করতে পারছি না। আশা করি পরবর্তী রিভিউতে আমি আপনাদেরকে আরও বিস্তারিত এই বাইক নিয়ে বলতে পারবো। যারা রানার বোল্ট ১৬৫ সিসির এই বাইকটি কিনবেন তারা গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স বিবেচনা করে আপনার সুবিধা অনুযায়ী কিনবেন। আমার মতে রানার বোল্ট ১৬৫ অনেক ভালো বাইক।