রানার ডিলাক্স মোটরসাইকেল রিভিউ - আকতার আলী

প্রথমে আমি আমার পরিচয় জানাতে চাই। আমার নাম মোঃ আক্তার আলী। যৌবন বয়স প্রায় শেষের দিকে তবুও আমি এখনো মোটরসাইকেল চালানো অনেক পছন্দ করি। কিছুদিন আগে থেকে ভাবছিলাম একটা মোটরসাইকেল কিনবো। হঠাৎ করে একদিন পুঠিয়া বাজারে “রানার মোটরসাইকেলের বিশেষ মূল্য ছাড়” এমনটি মাইকিং করা শুনতে পাই। তখনই আমি সিদ্ধান্ত নিই যে, এই মূল্য ছাড় উপলক্ষ্যে আমি একটি মোটরসাইকেল কিনবো। পরের দিনই আমি পুঠিয়া বাজারে রানার মোটরসাইকেল শোরুমে গিয়ে আনেক গুলো মোটরসাইকেল দেখে ৮০ সিসির ডায়াং রানার ডিলাক্স মোটরসাইকেলটি পছন্দ করে কিনি। ১ মাস যাবত মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করে আমি অনেক ভাল অনুভূতি পাচ্ছি। এই ১ মাসে আমি প্রায় ৭০০ কিমি পথ চালিয়েছি কোন প্রকারের দূর্ঘটনা ছাড়াই। আজকে হঠাৎ “মোটরসাইকেল ভ্যালী” টিমের সাথে আমার পরিচয় হয়। তাদের সাথে আমার এই মোটরসাইকেল বিষয়ে অনেক কথা হয়। তারা আমাকে আমার মোটরসাইকেলের রিভিউ প্রকাশের সু্যোগ করে দেন। এমন সুযোগ আগে আমাকে কেউ কখনো দেয় নাই। তাই আমি তাদের কাছে আমার বাইকের ভাল ও মন্দ বিষয় গুলো শেয়ার করি। কারন আমার মতামত থেকে অনেক নতুন বাইক ক্রেতারা বাইক ক্রয়ের ক্ষেত্রে উপকৃত হবেন। আশা করি আমার রিভিউটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।

এই মোটরসাইকেলটির ডিজাইন আমার কাছে খুবই ভাল লেগেছে। ডিজাইনের কথা বলতে গেলে, সবার পছন্দ এক হয় না। তাই সকলে প্রথমে ডিজাইনটি দেখেই মূলত মোটরসাইকেল কিনে। সবাই চায় ভাল ডিজাইনের মোটরসাইকেল কিনতে। আমার কাছে ডায়াং রানার ডিলাক্স ৮০ সিসির এই মোটরসাইকেলটির ডিজাইনটা একটু বেশিই ভাল লাগে। আমি দেখেছি এই মোটরসাইকেলের বডির প্লাস্টিক গুলো অনেক মজবুত।

এবার আসি ইঞ্জিন বিষয়ে কথা বলতে। এই মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন পারফরমেন্স অনেক ভালো পাচ্ছি। ইঞ্জিনের ভেতরে কোন খারাপ শব্দ করে না। ইঞ্জিনের শব্দটা আমার খুব ভাল লাগে। ইঞ্জিনে এখনো কোন সমস্যা বুঝতে পারি নাই। এর ইঞ্জিনটি ওভার হীট হয় না।

এবার মোটরসাইকেলটি কন্ট্রোল ও আরাম বিষয়ে কিছু কথা বলবো। এই মোটরসাইকেলটির সামনের ও পিছনের চাকায় ড্রাম ব্রেক রয়েছে। এটির মাধ্যমে আমি যে কোন পরিস্থিতিতে মোটরসাইকেল আরামের সাথে কন্ট্রোল করতে পারি। মোটরসাইকেলটি চাকার গ্রিপ গুলো অনেক ভাল। সে জন্য চাকা খুব কম স্লিপ করে। এই মোটরসাইকেলটির সিটে বসে আমি খুব সহজেই মাটিতে পা রাখতে পারি। এটি খুব একটা উঁচু বাইক না। এর সিটটা বেশ নরম, যা আমাকে আরাম এনে দেয়। দীর্ঘক্ষন বাইকে বসে চালালেও আমার সমস্যা হয় না। আমি সর্বোচ্চ ৫০ গতিতে তুলেছি। এছাড়া এক দিনে প্রায় ৪০ কিমি পথ চালিয়েছি। একটু বেশি স্পীডে চালালে আমার হাট দুটো ঝিনঝিন করে। তবে আমি বেশি স্পিডে মোটরসাইকেল চালাই না। এই মোটরসাইকেলের হ্যান্ডেলবারের সুইচ গুলো দেখতে বেশ ভাল। যা ব্যবহার করতে আমাকে কোন সমস্যায় পড়তে হয় না। এর হেড লাইট থেকে আমি পর্যাপ্ত আলো পাই। যা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট আছি। মোটরসাইকেলটির লুকিং গ্লাস দুটির মাধ্যমে আমি খুব সহজেই পিছনের দৃশ্য পরিষ্কার দেখতে পাই। মোটরসাইকেলটির সাসপেনশন গুলো মোটামুটি ভাল। খারাপ রাস্তায় চালালেও খুব বেশি ঝাঁকুনি লাগে না। সবকিছু বিবেচনায় এটি চালিয়ে আমি বেশ আরাম অনুভব করি।

আমার বাইক সার্ভিসিং করতে ১ দিন সার্ভিসিং সেন্টারে গিয়ে তাদের ব্যবহার আমার ভাল লেগেছে। আমি তেমন সমস্যা নিয়ে সেখানে যাই না। শুধুমাত্র নাট বল্টু চেক আপ করার জন্য গিয়েছিলাম। তাদের কাজের মান অনেক ভাল। এক কথায় বলতে গেলে সার্ভিসিং সেন্টারের সব কিছু আমার কাছে অনেক বেশি ভাল লেগেছে। সার্ভিসিং সেন্টার বিষয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই।

মাইলেজের কথা বলতে গেলে, পুঠিয়া শোরুম থেকে মোটরসাইকেলটি কেনার সময় যে মাইলেজের কথা বলেছিল আমি মোটামুটি তেমন মাইলেজই পাচ্ছি। এখন যে মাইলেজ পাচ্ছি এটা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট আছি। সকল পারফরমেন্স বিবেচনায় এর দামটা আমার কাছে সঠিক আছে বলে মনে হয়েছে। যদিও আমি অনেক কম দামে কিনেছি। কেননা, আমি মোটরসাইকেলটি কিনার সময় “বিশেষ মূল্য ছাড়ের একটি অফার চলছিল। তবে অফারটি এখনো চলছেই। যারা বেশি মাইলেজ সমৃদ্ধ এবং অল্প দামের মধ্যে মোটরসাইকেল কিনতে চান তারা ডায়াং রানার ডিলাক্স ৮০ সিসির এই মোটরসাইকেলটি কিনতে পারেন। কারন সব কিছু বিবেচনায় এই মোটরসাইকেলটি অনেক ভাল।

All RUNNER bike price in bd

Runner Deluxe