রানার বাংলাদেশের নিজস্ব মটরসাইকেল প্রস্তুতকারক কোম্পানী যা শুধু বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ নয় বরং নেপাল ও ভুটানেও রানারের বাইক রপ্তানি হয় । বাংলাদেশের মার্কেটে বেশ দীর্ঘ সময় থেকে রানার তাদের কমিটার বাইক গুলো দিয়ে রাজত্ব করেছে । এখন বাইক প্রেমীর চিন্তা ধারার কথা মাথায় রেখে তারা ক্রুজার বাইক ,সেমি রেসিং ,বাইক প্রস্তুত করা শুরু করেছে ও একে একে তা বাজারে আসতে দেখা যাচ্ছে। দেশী পন্যের উপর টান উপভোগ করেই আমার একটি রানার এর বাইক কেনার ইচ্ছা জাগে । তবে দেশি পন্য কিনে আমি ভুল করেছি নাকি সঠিক কাজ টি করেছি নিচে আমার মতামত গুলো পড়লেই বুঝতে পারবেন ।
আমার ইচ্ছে ছিলো একটি ১৫০ সিসি বাইকের । আমি রানার এর ওয়েবসাইটে সকল পন্য গুলো দেখে আমার রানার নাইট রাইডার বাইকটি পছন্দ হয় । এছাড়াও বাইকটিতে ছিল কিস্তি সুবিধা যা আমাকে অনেক সাহায্য করেছিলো বাইকটি ক্রয় করতে । এই কিস্তি সুবিধা টি অনেক উপযোগী তাই আমি মনে করি সকল ব্র্যন্ড এরই এরকম সুবিধা ক্রেতাদের দেওয়া উচিত। আসুন এক নজের আমার আমার বাইকটির কিছু ভালো ও মন্দ দিক জেনে নেই যা আমি গত ১০০০ কি মি রাইড করে উপলদ্ধি করতে পারি ।
ভালো দিক সমুহঃ
-বাইকটির লুক সেমি রেসিং টাইপের , ফুয়েল ট্যঙ্ক একটু মোটা হওয়ায় মাস্কুলার লাগে অনেক , সাইলেন্সরে ত্রিভুজ আকৃতির সেপ দেওয়ায় আমার বেশ পছন্দ হয়েছে ডিজাইনটি ।
- পিছে যথেষ্ট মোটা চাকার দরুন কর্নারিং করার সময় বেশ ভালো কন্ট্রোল পাই আমি ।
- মাইলেজ মোটামোটি ভালোই পাই । যদিও এখন ব্রেক ইন পিরিয়ড চলছে , ব্রেক ইন পিরিয়ড শেষ হওয়ার পরই সঠিক মাইলেজ পাওয়া যবে।
-১৫০ সিসি সেগমেন্টে এর বাইক হিসেবে এর এক্সেলারেশন যথেষ্ট ভালো পাই আমি । তাই বলতে পারি ইঞ্জিন পারফর্মেন্স এর দিক দিয়ে রানার নাইট রাইডার বাইকটি বেশ এগিয়ে।
মন্দ দিক সমুহঃ
-এসেম্বল করা সঠিক হয়নি , পিছের চাকা অনেক জাম ছিলো , পরে মেকানিক দেখিয়ে ফ্রি করতে হয়েছে ।
-বৃষ্টির দিনে ব্রেক কম কাজ করে তাই অনেক ঝুঁকির সম্মুক্ষিন হওয়া লাগে ।
-কিছুদিন পর পরই চেইন ঢিলা হয়ে যায় ।
-হেড ল্যম্প এর আলো যথেষ্ট না ।
- বিল্ড ও কালার কোয়ালিটি যথেষ্ট মজবুত নয় ।
রানার নাইট রাইডার বাইকটি কেনার পেছনে আমার মূল কারণ ছিলো এর সেমি রেসিং মাস্কুলার লুক ও ই এম আই সুবিধা । রানার কে অনেক ধন্যবাদ আমাদেরত মত কাস্টোমার দের কথা মাথায় রেখে এরকম সুবিধা দেওয়া্র জন্যে । এছাড়াও আরেকটি গুরুত্ব পুর্ন কারন হলো আমার দ্রুত যাতায়াত করার জনে বাইকের দরকার ছিল ।
মোটরসাইকেলটি কেনা প্রায় দেড় মাস হয়েছে । এই পর্যন্ত ১০০০ কিমি এর অতি স্বল্প একটি অভিজ্ঞতা আমি পেয়েছি । এখনো ব্রেক ইন পিরিওড শেষ না হওয়ায় বাইকটি কে নিয়ে ভাঙ্গা চুড়া রাস্তায় ভ্রমন করা হইয়নি । তাই বাংলাদেশের সব রকম রাস্তায় চালানো যাবে কিনা সে বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে পারছিনা আপাতত । তবে এই ব্রেক ইন পিরিওড এই মাইলেজ মেপে দেখেছিলাম । শহরের মধ্যে পেয়েছি ৩৫ কি মি প্রতি লিটার তেলে ও হাইওয়েতে পেয়েছি ৩৮ কি মি প্রতি লিটার তেলে । মাইলেজের সঠিক বর্ননা একমাত্র ব্রেক ইন পিরিওড শেষেই দেওয়া সম্ভব । আমি একবার টপ স্পীড চেক করেছিলা হাইওয়েতে যা ছিলো ১১৫ কি মি প্রতি ঘন্টা তবে কোম্পানি দাবী করে এতে ১২০ কি মি প্রতি ঘন্টা পর্যন্ত টপ স্পীড তোলা সম্ভব ।
এবার আসি মূল কথায় । বাইকটি কিনে ভুল হবে কিনা ?
আপনি যদি স্বল্প দামের মধ্যে ১৫০ সিসি সেগমেন্ট এর বাইক চেয়ে থাকেন তবে অবশ্যই রানার নাইট রাইডার কিনতে পারেন তবে এই দামে ১২৫ সিসি সেগমেন্ট এর বাইক কেনায় ভালো হবে যেখানে বিল্ড ও কালার কোয়ালিটি তুলনামূলক ভালো পাওয়া যাবে ।